কলকাতা, 18 মার্চ : নভেল কোরোনা ভাইরাস ডিজ়িজ় (COVID-19) প্রতিরোধের জন্য ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চলছে । তবে, খুব তাড়াতাড়ি এই ভ্যাকসিন তৈরি হওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন কলকাতার চিকিৎসকরা ।
COVID-19-এর ভ্যাকসিন শীঘ্রই চলে আসবে বলে কেউ কেউ বলছেন । আদৌ কি তা সম্ভব? কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ডিরেক্টর, চিকিৎসক প্রতীপ কুণ্ডু বলেন, "খুব তাড়াতাড়ি সম্ভব নয় । যে কোনও ভ্যাকসিন প্রতিরোধের প্রধান উপায় । কিন্তু, ভ্যাকসিন তৈরি করার জন্য কিছু সময় লাগে । প্রথমে ভাইরাসের অ্যান্টিবডির বিরুদ্ধে অ্যান্টিজেনকে চিহ্নিত করতে হবে । তারপর ট্রায়ালে আনতে হয় । প্রথমে পশুদের উপর ট্রায়াল দেওয়া হয় । তারপর তিনটি স্টেজে মানুষের উপর ট্রায়াল দেওয়া হয় । ভ্যাকসিন তৈরি করতে গেলে কমপক্ষে এক বছরের মতো সময় লাগবে । খুব তাড়াতাড়ি এই ভ্যাকসিন আসবে, এটা বলা মুশকিল । আমার মনে হয়, খুব তাড়াতাড়ি এটা সম্ভব নয় । অন্তত পক্ষে 9 মাস থেকে এক বছর সময় লাগবে ।"
স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগের প্রধান, চিকিৎসক বিভূতি সাহা বলেন, "আমার যতটা জানা আছে, COVID-19-এর ভ্যাকসিন নিয়ে তিন-চারটি দেশে কাজ চলছে । এটা নতুন ভাইরাস । তবে বিভিন্ন দেশ এই ভাইরাসকে আইসোলেট করতে পেরেছে ।" তিনি আরও বলেন, "প্রথমে ভ্যাকসিন তৈরি করতে হয় । এরপর এটা অ্যানিমেলের উপর স্টাডি করতে হয় । তারপর মানুষের উপর ট্রায়াল হয় । কয়েকটি ধাপে করার জন্য এটাতে সময় লাগবে । ভ্যাকসিন হয়তো নিশ্চয়ই আসবে । তবে খুব শীঘ্রই আসবে বলে আমার মনে হয় না ।"
এখনও পর্যন্ত COVID-19-এর কতটা তথ্য পাওয়া গেল? প্রতীপ কুণ্ডু বলেন, "এটা সার্স ভাইরাসের মতো । চিনের সার্স ভাইরাসের সঙ্গে এই নভেল কোরোনা ভাইরাসের খুব মিল । প্রায় 89-90 শতাংশ পর্যন্ত মিল রয়েছে এই দু'টি ভাইরাসে । তবে, দু'টি ভাইরাসের মধ্যে মিল 90 শতাংশের কম থাকায় এদের একই গ্রুপে ফেলা হচ্ছে না । এটা নতুন ভাইরাস । আমাদের বডির মধ্যে যে রিসেপটর রয়েছে, তার সঙ্গে অ্যাটাচমেন্ট সার্সের মতো । সার্স যে রিসেপটরের সঙ্গে অ্যাটাচ হত, এটাও তেমন । তবে এখানে খুব তাড়াতাড়ি অ্যাটাচমেন্ট হয় ।" COVID-19-এর ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে সার্স ভাইরাসের ভূমিকা কি তা হলে সহায়ক হতে পারে? তিনি বলেন, "বিষয়টি তেমন নয় । সার্সের ভ্যাকসিন তৈরি হয়নি । COVID-19-এর ভ্যাকসিন নতুন করে করতে হবে ।"