ETV Bharat / state

অনলাইন ক্লাসে উপকারের সম্ভাবনা কম দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের, মত একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের - দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের জন্য অনলাইন ক্লাস

কোরোনা ভাইরাস মোকাবিলায় দেশজুড়ে চলছে লকডাউন । 16 মার্চ থেকে 10 জুন পর্যন্ত , প্রায় তিন মাসের কাছাকাছি বন্ধ রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । এই পরিস্থিতিতে পঠন-পাঠন অব্যাহত রাখতে অনলাইন ক্লাস ও পড়ুয়াদের কাছে অনলাইনের মাধ্যমে স্টাডি মেটেরিয়াল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ । কিন্তু অনলাইন ব্যবস্থায় দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করছে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ৷

Kolkata
কলকাতা
author img

By

Published : Apr 21, 2020, 11:59 PM IST

Updated : Apr 23, 2020, 8:32 AM IST

কলকাতা , 21 এপ্রিল : লকডাউনের জেরে রাজ্যে বন্ধ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । 10 জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে ৷ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও লকডাউনের নিয়ম মেনে এই সময়ে পঠন-পাঠন অব্যাহত রাখার একমাত্র উপায় অনলাইন ব্যবস্থা । কিন্তু , এই ব্যবস্থায় খুব বেশি উপকৃত হবেন না কলেজ , বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা । এমনই মনে করছে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । একই মত দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদেরও ।

কোরোনা ভাইরাস মোকাবিলায় দেশজুড়ে চলছে লকডাউন । 16 মার্চ থেকে 10 জুন পর্যন্ত , প্রায় তিন মাসের কাছাকাছি বন্ধ রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । এই পরিস্থিতিতে পঠন-পাঠন অব্যাহত রাখতে অনলাইন ক্লাস ও পড়ুয়াদের কাছে অনলাইনের মাধ্যমে স্টাডি ম্যাটেরিয়াল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ । কিন্তু , যেকোনও বিশ্ববিদ্যালয়েরই পড়ুয়াদের মধ্যে একটা শ্রেণি বিশেষভাবে সক্ষম হন । সেই শ্রেণির মধ্যে আবার একটা অংশ দৃষ্টিহীন থাকেন । সংখ্যায় কম হলেও তাঁদের পঠন-পাঠন , পরীক্ষার জন্য সবসময়ই বিশেষ ব্যবস্থা থাকে । কিন্তু, অনলাইন ব্যবস্থায় বর্তমানে যে পড়াশোনার সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে তাতে সাধারণ পড়ুয়ারা উপকৃত হলেও , দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করছে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ।

রাজ্যে সবথেকে বেশি দৃষ্টিহীন পড়ুয়া রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরির । তিনি বর্তমানে এই অনলাইনে চলা পঠন-পাঠন ব্যবস্থা দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের জন্য কতটা কার্যকর তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন । সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরি বলেন , "আমার তো দৃষ্টিহীন ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা সবথেকে বেশি । তাঁদের আমি কোথায় , কীভাবে পড়াব ? আমাদের অনলাইনে স্টাডি মেটেরিয়াল দেওয়া হচ্ছে । কিন্তু, সেগুলি তাঁরা পড়বে কী করে ? সেগুলি অন্য কাউকে পড়ে দিতে হয় তাঁদের জন্য । ক্লাসে তাঁদের দুটো সুবিধা থাকে । প্রথমত , ক্লাসে শিক্ষকের পড়ানোটা তাঁদের কানে যায় । দৃষ্টিহীন হওয়ায় অধিকাংশেরই স্মৃতিশক্তি অনেক ভালো হওয়ায় তাঁরা সেগুলি স্মৃতিতে ধরে রাখতে পারেন । দ্বিতীয়ত , ক্লাসে তাঁর পাশে বসা দৃষ্টিশক্তি আছে এমন বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে স্টাডি মেটেরিয়াল পায়‌ । এ ছাড়া, তাঁদের পাঠক ও লেখক থাকে । এবারে এই ধরনের পড়ুয়াদের আমি ভিজ়ুয়াল কিছু দিলে তাঁরা তো দেখতে পাবেন না । সেটা তো তাঁদের প্রতি অন্যায় হবে । সুতরাং , তাঁদের কথাটাও ভাবতে হবে । তাঁদের সংখ্যাটাও কম নয় এবং তাঁরা শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে তো নন । ফলে, তাঁদের কথাটা আরও বেশি করে ভাবতে হবে ।" রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইন আর্টস ও আর্টস ফ্যাকাল্টির বিভিন্ন বিভাগে দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা আছেন । বাস্তব পরিস্থিতির বিচার করে এই ধরনের পড়ুয়াদের জন্য সবরকম ব্যবস্থা করার পরই পরীক্ষার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানাচ্ছেন সব্যসাচীবাবু ।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট পড়ুয়ার মধ্যে এক শতাংশের কিছু কম পড়ুয়া দৃষ্টিহীন । বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে সমস্যার কথা মেনে নিচ্ছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য । তিনি বলেন , "আমাদেরও দৃষ্টিহীন পড়ুয়া রয়েছে । একদিকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে ইন্টারনেট কানেকশন ভালো নয় সেখানকার পড়ুয়ারা অনলাইন ক্লাস করতে পারবেন না । অন্যদিকে , দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারাও সমস্যায় পড়বেন । এই ধরনের পড়ুয়ারা প্রত্যেক বিভাগ , কোর্স বা প্রত্যেক বর্ষেও নেই । কিন্তু, যেখানে যেখানে আছেন সেখানে তাঁদের স্পেশাল কেয়ার করতেই হবে । অনলাইন ক্লাস বা ই-মেইলের মাধ্যমে কনটেন্ট শেয়ার করা হলেও তাতে তাঁদের খুব একটা সুবিধা হবে না । এখন ওঁরা যে যার মতো বাড়িতে রয়েছেন । এখন কিছু করা সম্ভব নয় । ই-মেইলেও এমন কোনও কনটেন্ট পাঠানো যাবে না যেটা তাঁদের জন্য উপযোগী । ফলে , এখন কিছু করার নেই । খোলার পর দেখা যাবে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় । সত্যিই এটা একটা সমস্যা ।"

অনেকের মত, অডিয়ো-ভিজ়ুয়াল ক্লাস হলে অডিয়ো শুনেও দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা উপকৃত হতে পারেন । কিন্তু, দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের মতে, অনলাইন ক্লাস, তা অডিয়ো ফরম্যাটে হলেও তাঁরা খুব একটা উপকৃত হবেন না । কারণ, পড়াশোনার জন্য তাঁদের বিশেষ কিছু চাহিদা থাকে । বর্তমান পরিস্থিতিতে সবার জন্য সেই চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয় । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোরাম ফর স্টুডেন্টস উইথ ডিস্যাবিলিটিসের (FSD) তরফ থেকে বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া বামনদীপ্ত পাল বলেন, "অনলাইন ক্লাসের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে । অনেকেরই ইন্টারনেট কানেকশন ভালো নয় ৷ অনেকেরই অ্যান্ড্রয়েড ফোন নেই । যাদবপুরে এখনও ডিস্যাবিলিটি স্টুডেন্টসদের জন্য অনলাইন ক্লাসের কথা শুনিনি । তবু, আমাদের অনলাইন ক্লাস হলে সেটা তো অ্যাপে ভিডিয়ো কলিংয়ের মাধ্যমেই হতো । প্রথম সমস্যা হত , আমাদের ডিস্যাবিলিটি স্টুডেন্টরা অনেকেই অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল । তাঁদের পর্যাপ্ত ইন্টারনেট নেই । ফলে, অনেকেরই সমস্যা হত । কোনও অ্যাপের মাধ্যমে হলে সেই অ্যাপটা ডিস্যাবিলিটিস ফ্রেন্ডলি হতে হবে । না হলে সেটা অ্যাক্সেস করাটাও কঠিন হবে আমাদের জন্য । অনেকের বাড়িতেই পর্যাপ্ত ঘর নেই । আমাদের পড়াশোনার জন্য আলাদা একটা পরিবেশ দরকার , যেখানে আমরা অডিয়োটা স্পষ্টভাবে শুনতে পারি । কারণ, আমরা সবটাই শুনে করি । স্যাররা যদি বোর্ডে কিছু লেখেন সেটা তো আমরা দেখতে পারব না । ফলে, পরিবেশটা খুব গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য । অনলাইনে ক্লাস হলেও সেটা আমাদের জন্য খুব একটা কার্যকরী হত না বলেই আমার মনে হয় ।"

সাধারণত, শিক্ষকরা যখন ক্লাস নেন দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা তা রেকর্ডার বা স্মার্টফোনে রেকর্ড করে নেন । পরে সেগুলি শুনে নিজেদের মতো পড়া তৈরি করে নেন তাঁরা । বামনদীপ্ত পাল জানাচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার আগে পর্যন্ত যে ক্লাসগুলি হয়েছে, যে স্টাডি মেটেরিয়ালগুলি তাঁদের কাছে রয়েছে , সেগুলো নিয়েই আপাতত তাঁরা পড়াশোনা করছেন ।

কলকাতা , 21 এপ্রিল : লকডাউনের জেরে রাজ্যে বন্ধ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । 10 জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে ৷ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও লকডাউনের নিয়ম মেনে এই সময়ে পঠন-পাঠন অব্যাহত রাখার একমাত্র উপায় অনলাইন ব্যবস্থা । কিন্তু , এই ব্যবস্থায় খুব বেশি উপকৃত হবেন না কলেজ , বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা । এমনই মনে করছে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । একই মত দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদেরও ।

কোরোনা ভাইরাস মোকাবিলায় দেশজুড়ে চলছে লকডাউন । 16 মার্চ থেকে 10 জুন পর্যন্ত , প্রায় তিন মাসের কাছাকাছি বন্ধ রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । এই পরিস্থিতিতে পঠন-পাঠন অব্যাহত রাখতে অনলাইন ক্লাস ও পড়ুয়াদের কাছে অনলাইনের মাধ্যমে স্টাডি ম্যাটেরিয়াল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ । কিন্তু , যেকোনও বিশ্ববিদ্যালয়েরই পড়ুয়াদের মধ্যে একটা শ্রেণি বিশেষভাবে সক্ষম হন । সেই শ্রেণির মধ্যে আবার একটা অংশ দৃষ্টিহীন থাকেন । সংখ্যায় কম হলেও তাঁদের পঠন-পাঠন , পরীক্ষার জন্য সবসময়ই বিশেষ ব্যবস্থা থাকে । কিন্তু, অনলাইন ব্যবস্থায় বর্তমানে যে পড়াশোনার সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে তাতে সাধারণ পড়ুয়ারা উপকৃত হলেও , দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করছে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ।

রাজ্যে সবথেকে বেশি দৃষ্টিহীন পড়ুয়া রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরির । তিনি বর্তমানে এই অনলাইনে চলা পঠন-পাঠন ব্যবস্থা দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের জন্য কতটা কার্যকর তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন । সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরি বলেন , "আমার তো দৃষ্টিহীন ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা সবথেকে বেশি । তাঁদের আমি কোথায় , কীভাবে পড়াব ? আমাদের অনলাইনে স্টাডি মেটেরিয়াল দেওয়া হচ্ছে । কিন্তু, সেগুলি তাঁরা পড়বে কী করে ? সেগুলি অন্য কাউকে পড়ে দিতে হয় তাঁদের জন্য । ক্লাসে তাঁদের দুটো সুবিধা থাকে । প্রথমত , ক্লাসে শিক্ষকের পড়ানোটা তাঁদের কানে যায় । দৃষ্টিহীন হওয়ায় অধিকাংশেরই স্মৃতিশক্তি অনেক ভালো হওয়ায় তাঁরা সেগুলি স্মৃতিতে ধরে রাখতে পারেন । দ্বিতীয়ত , ক্লাসে তাঁর পাশে বসা দৃষ্টিশক্তি আছে এমন বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে স্টাডি মেটেরিয়াল পায়‌ । এ ছাড়া, তাঁদের পাঠক ও লেখক থাকে । এবারে এই ধরনের পড়ুয়াদের আমি ভিজ়ুয়াল কিছু দিলে তাঁরা তো দেখতে পাবেন না । সেটা তো তাঁদের প্রতি অন্যায় হবে । সুতরাং , তাঁদের কথাটাও ভাবতে হবে । তাঁদের সংখ্যাটাও কম নয় এবং তাঁরা শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে তো নন । ফলে, তাঁদের কথাটা আরও বেশি করে ভাবতে হবে ।" রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইন আর্টস ও আর্টস ফ্যাকাল্টির বিভিন্ন বিভাগে দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা আছেন । বাস্তব পরিস্থিতির বিচার করে এই ধরনের পড়ুয়াদের জন্য সবরকম ব্যবস্থা করার পরই পরীক্ষার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানাচ্ছেন সব্যসাচীবাবু ।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট পড়ুয়ার মধ্যে এক শতাংশের কিছু কম পড়ুয়া দৃষ্টিহীন । বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে সমস্যার কথা মেনে নিচ্ছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য । তিনি বলেন , "আমাদেরও দৃষ্টিহীন পড়ুয়া রয়েছে । একদিকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে ইন্টারনেট কানেকশন ভালো নয় সেখানকার পড়ুয়ারা অনলাইন ক্লাস করতে পারবেন না । অন্যদিকে , দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারাও সমস্যায় পড়বেন । এই ধরনের পড়ুয়ারা প্রত্যেক বিভাগ , কোর্স বা প্রত্যেক বর্ষেও নেই । কিন্তু, যেখানে যেখানে আছেন সেখানে তাঁদের স্পেশাল কেয়ার করতেই হবে । অনলাইন ক্লাস বা ই-মেইলের মাধ্যমে কনটেন্ট শেয়ার করা হলেও তাতে তাঁদের খুব একটা সুবিধা হবে না । এখন ওঁরা যে যার মতো বাড়িতে রয়েছেন । এখন কিছু করা সম্ভব নয় । ই-মেইলেও এমন কোনও কনটেন্ট পাঠানো যাবে না যেটা তাঁদের জন্য উপযোগী । ফলে , এখন কিছু করার নেই । খোলার পর দেখা যাবে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় । সত্যিই এটা একটা সমস্যা ।"

অনেকের মত, অডিয়ো-ভিজ়ুয়াল ক্লাস হলে অডিয়ো শুনেও দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা উপকৃত হতে পারেন । কিন্তু, দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের মতে, অনলাইন ক্লাস, তা অডিয়ো ফরম্যাটে হলেও তাঁরা খুব একটা উপকৃত হবেন না । কারণ, পড়াশোনার জন্য তাঁদের বিশেষ কিছু চাহিদা থাকে । বর্তমান পরিস্থিতিতে সবার জন্য সেই চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয় । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোরাম ফর স্টুডেন্টস উইথ ডিস্যাবিলিটিসের (FSD) তরফ থেকে বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া বামনদীপ্ত পাল বলেন, "অনলাইন ক্লাসের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে । অনেকেরই ইন্টারনেট কানেকশন ভালো নয় ৷ অনেকেরই অ্যান্ড্রয়েড ফোন নেই । যাদবপুরে এখনও ডিস্যাবিলিটি স্টুডেন্টসদের জন্য অনলাইন ক্লাসের কথা শুনিনি । তবু, আমাদের অনলাইন ক্লাস হলে সেটা তো অ্যাপে ভিডিয়ো কলিংয়ের মাধ্যমেই হতো । প্রথম সমস্যা হত , আমাদের ডিস্যাবিলিটি স্টুডেন্টরা অনেকেই অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল । তাঁদের পর্যাপ্ত ইন্টারনেট নেই । ফলে, অনেকেরই সমস্যা হত । কোনও অ্যাপের মাধ্যমে হলে সেই অ্যাপটা ডিস্যাবিলিটিস ফ্রেন্ডলি হতে হবে । না হলে সেটা অ্যাক্সেস করাটাও কঠিন হবে আমাদের জন্য । অনেকের বাড়িতেই পর্যাপ্ত ঘর নেই । আমাদের পড়াশোনার জন্য আলাদা একটা পরিবেশ দরকার , যেখানে আমরা অডিয়োটা স্পষ্টভাবে শুনতে পারি । কারণ, আমরা সবটাই শুনে করি । স্যাররা যদি বোর্ডে কিছু লেখেন সেটা তো আমরা দেখতে পারব না । ফলে, পরিবেশটা খুব গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য । অনলাইনে ক্লাস হলেও সেটা আমাদের জন্য খুব একটা কার্যকরী হত না বলেই আমার মনে হয় ।"

সাধারণত, শিক্ষকরা যখন ক্লাস নেন দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা তা রেকর্ডার বা স্মার্টফোনে রেকর্ড করে নেন । পরে সেগুলি শুনে নিজেদের মতো পড়া তৈরি করে নেন তাঁরা । বামনদীপ্ত পাল জানাচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার আগে পর্যন্ত যে ক্লাসগুলি হয়েছে, যে স্টাডি মেটেরিয়ালগুলি তাঁদের কাছে রয়েছে , সেগুলো নিয়েই আপাতত তাঁরা পড়াশোনা করছেন ।

Last Updated : Apr 23, 2020, 8:32 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.