কলকাতা 17 মে : ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় ফের কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের ইঙ্গিত (Indications of Post Poll Violence)। রাজ্যের দাবি, হাইকোর্টের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন একজনের পরিবর্তে একাধিক সদস্যের একটি ডেলিগেশন রাজ্যে পাঠিয়েছিল । অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের দাবি, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুয়ায়ীই তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে আরও অতিরিক্ত কর্মী, আধিকারিকদের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করার জন্যই নতুন 11 জন সদস্যকে নিয়ে আসা হয়েছিল ভোট পরবর্তী হিংসার বিষয় খতিয়ে দেখতে । প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বক্তব্য শোনার পর অতিরিক্ত কর্মী, অফিসার নিযুক্ত করার ব্যাপারে আদালতে আবেদন করার নির্দেশ দিল।
রাজ্যের অ্য়াডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় প্রথমেই বেশ ক্ষুব্ধ হয়ে জানান, ভোট পরবর্তী হিংসায় ঘর ছাড়াদের জন্য আদালত যে কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছিল তার মধ্যে একজন কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য, একজন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের সদস্য এবং একজন রাজ্য লিগাল সার্ভিস কর্তৃপক্ষের সদস্য থাকার কথা । কিন্তু 7 মে থেকে 11 মে কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের একাধিক সদস্য রাজ্যে এসেছিলেন । কেন্দ্রীয় কমিশনের একাধিক সদস্য এসেছিলেন ভোট পরবর্তী হিংসার বিষয় খতিয়ে দেখতে । অতিরিক্ত সদস্যের দরকার থাকলে রাজ্যের কাছে জানাতে পারত কমিশন । কিন্তু আদালতের নির্দেশকে সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করা হয়েছে । আদালত কোনও ডেলিগেশনের নির্দেশ দেয়নি ।
অন্য়দিকে, সুবীর সান্যাল কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফে জানান, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের তরফে বলা হয়েছিল তাদের কর্মী-আধিকারিক নেই । টাকা নেই । কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিল ।
কমিটির তিন সদস্য 2022 সালের 11 মে বৈঠক করে দেখার পর ম্যানপাওয়ারের প্রয়োজনীয়তা মনুভব করে । কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন সদস্য রাজীব জৈন, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের সাকেত ঝাঁ এবং লিগাল এডের সদস্য রাজু মুখোপাধ্য়ায় ছিলেন বৈঠকে । তারাই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন 11 জন নতুন অফিসারের ব্যাপারে । ফলে কোনও ডেলিগেশনের প্রশ্ন ওঠে না । এরা সহকারী কর্মী, আধিকারিক । তিনজন সদস্য পর্যাপ্ত নয় । প্রায় 400টি অভিযোগ জমা পড়েছে আদালতে ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত । একটা অভিযোগ আসছে উওর 24 পরগনা জেলা থেকে । আর একটা অভিযোগ আসছে দক্ষিণ 24 পরগনা থেকে । ফলে এই সমস্ত সমস্যা খতিয়ে দেখতে সহকারী স্টাফ দরকার ছিল । এখনও বিভিন্ন জেলা থেকে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে ঘরে ফিরতে পারেননি তারা ।
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের আইনজীবীকে বলেন, "এর জন্য আপনারা আদালতে একটা আবেদন করতে পারতেন ।" তারপরই ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনকে অতিরিক্ত অফিসার নিয়োগের বিষয়ে আদালতে আবেদন করার । 19 মে ফের মামলাটি শুনানির জন্য রাখা হয়েছে ।
উল্লেখ্য, প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ একুশের ভোট পরবর্তী হিংসায় এখনও ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে তিন সদস্যের একটা কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল কিছুদিন আগে ।