কলকাতা, 12 অক্টোবর : বেহালার পর্ণশ্রীতে উদ্বোধন হল নতুন পলিটেকনিক কলেজের । প্রায় 1.5 একর জমিতে 48 লাখ টাকা খরচ করে তৈরি হয়েছে এই কলেজের নয়তলা ভবনটি। গতকাল কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন দপ্তরের অধীনে এই পলিটেকনিক কলেজের উদ্বোধন করেন বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া অনুষ্ঠানে ছিলেন কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু ও দপ্তরের সচিব অনুপ কুমার অগ্রওয়াল। প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
অনুষ্ঠান থেকে কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় কারিগরি শিক্ষার উপর রাজ্য জোর দেওয়ার ফলে 2011 সাল থেকে পলিটেকনিক কলেজের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে ও পড়ুয়া ভরতির আসন সংখ্যা 140 শতাংশ বেড়েছে।
কারিগরি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব নিয়ে তিনি বলেন, "গোটা বিশ্বেই কারিগরি শিক্ষার চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। আমাদের দপ্তরে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় "উৎকর্ষ বাংলা" প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত এই প্রকল্পটি আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছে। পলিটেকনিক থেকে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়াররা পাশ করে বেরিয়ে কাজ পান। রাজ্যে পলিটেকনিকের সংখ্যা অত্যন্ত কম ছিল। গত 9 বছরে সেই সংখ্যাটা আমরা দ্বিগুণের কাছে নিয়ে গেছি। রাজ্যে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে 174টি পলিটেকনিক কলেজ আছে । এর মধ্যে 36টি আমরা তৈরি করেছি গত 9 বছরে। আরও তিনটি তৈরি হওয়ার মুখে। 174টি পলিটেকনিক কলেজের মধ্যে 73টি সরকারি ও 3টি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত। বাকি 98টি বেসরকারি পলিটেকনিক দপ্তর ও মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি দ্বারা পরিচালিত হয়। মোট আসনসংখ্যা 39 হাজার 947টি। 2011 সালের তুলনায় যা 140 শতাংশ বেশি। এর থেকেই প্রমাণিত যে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা কী অগ্রগতির পথে যাচ্ছে।"
বেহালা পলিটেকনিক কলেজ প্রসঙ্গে তিনি জানান, এই কলেজটির মতো পরিকাঠামো খুব কম কলেজেই রয়েছে। তিনি বলেন, "আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি বেহালা পলিটেকনিক কলেজ পলিটেকনিক ব্যবস্থায় হবে সেন্টার অফ এক্সিলেন্স। পরিকাঠামোগত দিক থেকে এত বড় এবং এত সুন্দর কলেজ এই পশ্চিমবঙ্গে আর একটাও নেই।"
ইতিমধ্যে কলেজটি অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল অফ টেকনিক্যাল এডুকেশনের (AICTE) কাছ থেকে তিনটি বিষয়ে কোর্স চালু করার অনুমোদন পেয়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে- কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন এবং সাইবার ফরেনসিক অ্যান্ড ইনফরমেশন সিকিউরিটি। বর্তমানে কলেজের আসনসংখ্যা 180। প্রতিটি কোর্সে 60 জন করে পড়ুয়া ভরতি নেওয়া হবে। পূর্ণেন্দু বসু বলেন, "আমরা আরও অন্তত তিনটি কোর্স চালু করব AICTE-র থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন পেলেই।"
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বেহালা পলিটেকনিক কলেজের একটি অন্য নাম দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। তাঁর প্রস্তাবিত নামটি হল, "জয় হিন্দ পলিটেকনিক কলেজ।" সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেলেই নতুন নামকরণ করা হবে কলেজটির।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, বেহালার দু'টি কলেজ- বেহালা কলেজ এবং সরশুনা কলেজ ইতিমধ্যেই স্নাতকোত্তর কোর্স অফার করার জন্য উন্নীত হয়েছে। সরশুনায় B.Ed কলেজের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে। 15 অক্টোবর তা উদ্বোধন করা হবে।