কলকাতা, 5 অক্টোবর : একুশের মহাযুদ্ধের আগে গত বছর ইজেডসিসি (EZCC)-তে মহা সমারোহে প্রথমবার দুর্গাপুজো করেছিল রাজ্য বিজেপি। এবারও দুর্গাপুজো হবে, তবে আড়ম্বর বা জাঁকজমকপূর্ণ নয় ৷ এর অন্যতম কারণ ২০২১-এর নির্বাচনে ভরাডুবি ৷ এমনই মনে করছে রাজনৈতিকমহল। বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো আয়োজন নিয়ে সংশয় ছিল বঙ্গ বিজেপি অন্দরমহলেই ৷ কিন্তু মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপির তরফে জানিয়ে দেওয়া হল দুর্গাপুজো হবে ৷ অর্থাৎ দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে বাঙালির মন জয় করতে মরিয়া চেষ্টা রাজ্য বিজেপির।
বিজেপির গায়ে অবাঙালিদের দলের তকমা সেঁটে দিয়েছে তৃণমূল ৷ তাদের অভিযোগ উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও গুজরাতের সংস্কৃতি বাংলায় কায়েম করতে চায় বিজেপি। কিন্ত এবার বাংলার সংস্কৃতি তুলে ধরতে চায় তারা। একুশের নির্বাচনই বলে দিচ্ছে, 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি প্রত্যখান করেছে বাংলার মানুষ ৷ এবার তাই 'জয় মা দুর্গা' ধ্বনিতেই ফিরতে চাইছে বিজেপি। এদিন রাজ্য বিজেপি দফতরে দুর্গাপুজো নিয়ে বৈঠক হয়। তাতেই দুর্গাপুজো নিয়ে সিলমোহর দেওয়া হয় ৷ বৈঠকে উপস্থিতি ছিলেন রাজ্য বিজেপির সহসভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সম্পাদক সব্যসাচী দত্ত ও বিজেপির রাজ্য নেতারা।
প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "পার্টি কোনও পুজো করে না। পার্টির কার্যকর্তা, শুভানুধ্যায়ী ও সমর্থকরা এই পুজো করবেন। গতবারই প্রথম হয়েছিল। এবার কোভিড ও বন্যা পরিস্থিতি এবং বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত। এইসব কারণে ছোট করে পুজো করা হবে।" বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "দলের তরফে শুরু করা পুজো এবারও হবে। প্রথা অনুযায়ী পুজো শুরু করলে, তা টানা 3 বছর করা আমাদের বাঙালি সমাজের প্রথা। সেই প্রথা মেনেই এবারও দলের কর্মী ও সমর্থকরা পুজো করবেন ৷" সব্যসাচী দত্ত বলেন, " আগের বছর আমি পুজোর দায়িত্বে ছিলাম। পাটি আমাকে পুজো করার বিষয়ে ডেকেছিলেন।"
আরও পড়ুন : মায়ের জন্য আস্ত রান্নাঘর, চকবাজারের নন্দী বাড়িতে প্রতিপদে শুরু হয় পুজো
গতবছর মহা আড়ম্বরে প্রথমবার ইজেডসিসি (EZCC)-তে দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিল রাজ্য বিজেপি। মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বাঙালি বেশে দিল্লি থেকে ভার্চুয়ালি পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পুজোর পাঁচদিন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন নামী শিল্পীরা। সকাল থেকে রাত খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন ছিল নজর কাড়া ৷ এই পুজোর মূল উদ্যোক্তা ছিলেন মুকুল রায় ও কৈলাস বিজয়বর্গীয়। মুকুল ইতিমধ্যেই দল ছেড়েছেন ৷ আর একুশের বিপর্যয়ের পর বাংলায় দেখা যায় না কৈলাসকে। ফলে এবার দুর্গাপুজো হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল। পুজো না-করলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা যেতে পারে। আমজনতার মনে হতে পারে, বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের জন্যই এবার পুজো করছে না বিজেপি নেতৃত্ব। সব দিক চিন্তা করেই দুর্গাপুজো বন্ধের পথে হাঁটল না বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব ৷