কলকাতা, 2 জুন: একা গরমে রক্ষা নেই তার উপর ঘূর্ণিঝড় দোসর ৷ এপ্রিলের তাপপ্রবাহ জুনেও ফের আগুন ঝরাচ্ছে ৷ ভ্যাপসা গরমে প্রাণান্তকর পরিস্থিতি ৷ আলিপুর হাওয়া অফিস ইতিমধ্যে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে ৷ হাওয়া অফিসের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীবকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 1-7 জুন পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা 3-5 ডিগ্রি পর্যন্ত বাড়তে চলেছে ৷
বৃহস্পতিবার কলকাতা এবং তার আশপাশের অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 38.6 ডিগ্রি সেলসিয়াস ৷ সল্টলেক, ব্যারাকপুর, দমদমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে 38.3 ডিগ্রি, 38.8 ডিগ্রি এবং 39.1 ডিগ্রি সেলসিয়াস ৷ মালদার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 40.6 ডিগ্রি সেলসিয়াস ৷ বৃহস্পতিবার রাজ্যের উষ্ণতম জেলা ছিল পুরুলিয়া ৷ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছেছিল 41.3 ডিগ্রি সেলসিয়াসে ৷ ঝাড়গ্রাম, আসানসোল, পানাগড়, বর্ধমান, শ্রীনিকেতন, বাঁকুড়া, কৃষ্ণনগরে পারদ 40 ডিগ্রি ছাড়িয়েছে ৷
দার্জিলিং কালিম্পংয়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা 25.2 ডিগ্রি এবং 28.6 ডিগ্রি ছুঁয়েছে ৷ হাওয়া অফিস বলছে 7 জুন পর্যন্ত এই গরমের দাপট চলবে ৷ পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, ঝাড়গ্রামে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে ৷ বাকি জেলাগুলিতেও তাপপ্রবাহ অনুভূত হবে ৷ 3 ও 4 জুন দক্ষিণ 24 পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর উপকূলে সামান্য বৃষ্টি হবে ৷ 6 ও 7 জুন আরও কিছুটা তাপমাত্রা বাড়বে ৷
আরও পড়ুন: সিলেবাস শেষ হবে তো ? গরমের ছুটি বাড়ায় উদ্বিগ্ন শিক্ষামহল
পশ্চিম ভারতের শুষ্ক হাওয়া গ্রাস করছে প্রায় গোটা বাংলাকে ৷ সকাল 11টা থেকে বিকেল 4টে পর্যন্ত খুব প্রয়োজন ছাড়া রোদে না বেরনোর পরামর্শ দিচ্ছেন আবহবিদরা ৷ চৈত্রের সঙ্গে এই তাপপ্রবাহের ফারাক শুষ্কতায় ৷ জুনে প্রাক-বর্ষার জলীয় বাষ্প পরিপূর্ণ তাপপ্রবাহ ৷ বৃহস্পতিবার কলকাতা এবং তার আশপাশের অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল 28.9 ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে এক ডিগ্রি বেশি ৷ বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার সর্বোচ্চ পরিমাণ 86 শতাংশ ৷ শুক্রবার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে 39 ডিগ্রি এবং 30 ডিগ্রির কাছাকাছি ঘোরাফেরা করবে ৷ তাপপ্রবাহের ভ্রুকুটির মধ্যেই জোড়া ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে । ধেয়ে আসতে পারে 'বিপর্যয়' ও 'তেজ' ৷
কোথায় ঘূর্ণিঝড় ? আবহাওয়া দফতর এখনও স্পষ্টভাবে কিছু না-জানালেও আবহাওয়াবিদরা জোড়া ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছেন ৷ একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে আন্দামান সাগরে ৷ আরেকটি তৈরি হচ্ছে আরবসাগরে ৷ বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে জুনের 8 থেকে 10 তারিখের মধ্যে দুটি ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ৷ এই ঘূর্ণাবর্ত শক্তি সঞ্চয় করে নিম্নচাপ ও পরে গভীর নিম্নচাপে বদলে ঘূর্ণিঝড় তৈরি করতে পারে ৷ এমাসের মাঝামাঝি সময়ে আছড়ে পড়তে পারে ৷
কোন দিকে যাবে এই জোড়া ঘূর্ণিঝড় ? বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় আন্দামান সাগরে তৈরি হয়ে মায়ানমার ও বাংলাদেশ উপকূলের দিকে আসার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড়টি সমুদ্রের মধ্যেই উপকূল বরাবর এগিয়ে যাবে গুজরাতের দিকে ৷ পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে । আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এখনই সঠিক তথ্য দেওয়া সম্ভব নয় ৷
আরও পড়ুন: ভাগ্য কী বলছে ? গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান কেমন ? জানুন রাশিফলে