কলকাতা, 31 অক্টোবর: সোমবার অন্য মেজাজে দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) প্রাক্তন মহাসচিব তথা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Bengal Recruitment Scam) অন্যতম অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) । এদিন আলিপুর কোর্টে (Alipore Court) হাজিরা ছিল তাঁর । সেখানেই দলকে বার্তা দিলেন তিনি । দল সম্পর্কে তাঁর অবস্থান জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘দলের সঙ্গে আছি । একশোবার আছি ।’’
প্রসঙ্গত, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেল যাত্রার পর ছোট বড় অনেক তৃণমূল নেতাই তাঁর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন । তৃণমূলও স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে তিনি কলুষমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে দলের কোন যোগ নেই । কিন্তু এদিন পার্থ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন তিনি দলের সঙ্গেই আছেন । এই প্রথম নয় ইডি (ED) হেফাজতে থাকাকালীন অতীতেও দলের সঙ্গে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় । এদিন তাঁর মুখে সেই বক্তব্যেরই পুনরাবৃত্তি শোনা গেল শুধু ।
এদিন শুরু থেকেই অন্য মেজাজে দেখা যায় তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিবকে । সিবিআইয়ের (CBI) মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আলিপুর আদালতে এদিন পেশ করা হয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে । সেখানে পার্থ বলেন, ‘‘আমার শরীর দিচ্ছে না । রোজ রোজ আমার বিরুদ্ধে নতুন নতুন মামলা হচ্ছে । আমাকে আমার মতো থাকতে দিন, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিন । আমাকে সার্ভাইভ করতে দিন প্লিজ । কিছু খুঁজে না পেয়ে ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে তদন্তকারী এজেন্সি । আমি চোর নই । আমার মানবাধিকার আছে ।’’
পালটা সিবিআই তাঁর জামিনের বিরোধিতায় ফের 'প্রভাবশালী' তত্ত্ব সামনে আনে । আদালতকে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, তাঁর থেকে প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে । সেসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে । এই মুহূর্তে জামিন দিলে সমস্যা হবে । আলিপুর আদালতের বিচারক সিবিআইকে পালটা জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘তদন্ত শেষ করতে আর কতদিন সময় লাগবে ?’’ তাতে সিবিআই 6 মাসের সময়সীমার কথা জানায় ।
এদিন সকালে আলিপুর আদালতে ঢোকার সময় তিনি মেজাজ হারান । পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সাংবাদিকদের তরফ থেকে প্রশ্ন করা হয়, ‘‘তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ কি সত্যি ?’’ এই প্রশ্নে রীতিমতো মেজাজ হারালেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ।
ধমকের সুরে আঙুল উঁচিয়ে বলেন, ‘‘চুপ করে থাকুন ।’’ আর পরে আদালত থেকে বেরনোর সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দলের সঙ্গে আছি, 100 বার আছি ।’’
প্রসঙ্গত, এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এত কাতর অনুরোধ সত্ত্বেও জামিন দিল না আদালত । এদিন তাঁর 14 দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল আলিপুর আদালত । নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় 14 নভেম্বর পর্যন্ত তাঁকে প্রেসিডেন্সি জেলে থাকতে হবে ।
আরও পড়ুন: 30 নভেম্বর পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজেতেই পার্থ-অর্পিতা