কলকাতা, 27 নভেম্বর: পশ্চিমবঙ্গের এক থেকে পাঁচ বছর বয়সি শিশুদের মধ্যে 65 শতাংশই রক্তাল্পতা এবং অপুষ্টির শিকার। শতাংশের হিসাবে পশ্চিমবঙ্গে রক্তাল্পতা এবং অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের সংখ্যা জাতীয় গড় (50 শতাংশ)-এর থেকে অনেকটাই বেশি। এমনি তথ্য উঠেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক দ্বারা প্রকাশিত ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে 2019-20 (National Family Health Survey 2019-2020)-এর সাম্প্রতিকতম রিপোর্টে।
কিছুদিন আগেই নীতি আয়োগ তাদের স্টেট নিউট্রিশন প্রোফাইলস (State Nutrition Profiles)-এর মার্চ 2020 পর্যন্ত পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছিল। সেই রিপোর্টেও পশ্চিমবঙ্গে রক্তাল্পতায় ভোগা শিশুদের পরিসংখ্যান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল। রিপোর্টে বলা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি জেলা মুর্শিদাবাদ, উত্তর 24 পরগনা, দক্ষিণ 24পরগনা, মালদা এবং বর্ধমানে রক্তাল্পতায় ভোগা শিশুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ৷
এক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে আইসিডিএস (ICDS) প্রকল্পের সঠিক প্রয়োগের অভাবেই কি রাজ্যের এই করুন চিত্র ? এবিষয়ে বিশিষ্ট চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস মনে করেন, গত প্রায় দেড় বছর ধরে করোনা অতিমারীর ফলে যে লকডাউন চলেছে সেটা এই অপুষ্টির বড় কারণ। তাঁর মতে এর একটা অর্থনৈতিক দিক রয়েছে। বিশেষ করে যাঁরা অর্থনৈতিক দিক থেকে ততটা শক্তিশালী নন, সেই সব পরিবারের শিশুরা ওই সময়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। অভিভাবকদের রোজগারের অভাবে সেই সব পরিবারের শিশুরা অনেক সময় পুষ্টিকর এবং সুষম আহার পায়নি। সেই একই কারণে আইসিডিএস (ICDS) প্রকল্পেরও সঠিক প্রয়োগে হয়নি অনেকসময়। এরজন্য কেন্দ্র এবং রাজ্য দুই সরকারকেই সমানভাবে দায়ী বলে মনে করেন তিনি ৷
আর এক প্রখ্যাত চিকিৎসক এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ পুণ্যব্রত গুন মনে করেন, যেহেতু রক্তাল্পতার প্রধান কারণ অপুষ্টি তাই সরকারের উচিত ঠিকমতো পুষ্টিকর এবং সুষম খাবার শিশুরা পায় সেদিকে আরও বেশি করে নজর দেওয়া । তাঁর মতে এই বিষয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার অবহেলা দেখিছে ক্রমাগত । স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশাকেও এর জন্য দায়ী করেছেন তিনি ৷
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মলয় সরকার আবার মনে করেন, যে অনেক সময় মায়েরা রক্তাল্পতায় ভুগলে বাচ্চারাও অপুষ্টিতে ভোগে এবং এর ফলে রক্তাল্পতার শিকার হয় তারাও। সরকারের উচিত এই বিষয়ের উপর নজর রাখা।