কলকাতা, 13 মে: কোরোনা আবহে মাঝপথেই স্থগিত হয়ে গেছে চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা । এখনও তিনদিনের পরীক্ষা বাকি রয়েছে । মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বাকি পরীক্ষাগুলি জুন মাসে নেওয়া হবে । এরমধ্যেই হয়ে যাওয়া পরীক্ষাগুলির মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চালু করল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ । আজ সংসদের তরফে এই মর্মে জারি করা হয়েছে নির্দেশিকা । সেখানে প্রধান পরীক্ষকদের থেকে উত্তরপত্র সংগ্রহ করে মূল্যায়নের জন্য নিয়ে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পরীক্ষকদের ।
উচ্চমাধ্যমিকের এক একটি পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার 7-8 দিনের মাথায় উত্তরপত্র প্রধান পরীক্ষকদের কাছে পৌঁছে যায় । সেই অনুযায়ী প্রথম ভাষা ও দ্বিতীয় ভাষার উত্তরপত্র পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার 7-8 দিনের মাথাতেই প্রধান পরীক্ষকদের কাছে পৌঁছে গেছে । পরের দিকে যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে সেগুলির উত্তরপত্রও সংসদের তরফে প্রধান পরীক্ষকদের বাড়িতে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে । আজ সংসদের তরফে জারি করা নির্দেশিকায় প্রধান পরীক্ষকদের তাঁদের অধীনস্থ পরীক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে । পরীক্ষকরা যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মূল্যায়ন ও স্ক্রুটিনির জন্য প্রধান পরীক্ষকদের কাছ থেকে উত্তরপত্র সংগ্রহ করে নিয়ে যান সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে । উত্তরপত্র সংগ্রহ করতে যাওয়ার জন্য পরীক্ষকদের স্থানীয় পুলিশের কাছে উপযুক্ত নথি দেখিয়ে অনুমতি নিতে বলা হয়েছে । এছাড়া, পরীক্ষকদের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, ই-পাস বা নিজেদের ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করতে বলা হয়েছে নির্দেশিকায় । তবে খুব সমস্যা দেখা দিলে সাহায্যের জন্য প্রধান পরীক্ষকদের সংশ্লিষ্ট কনভেনর তথা জেলা পরিদর্শক ও জয়েন্ট কনভেনরদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে ।
অন্যান্য বছর 20-25 দিন সময় নিয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেন পরীক্ষকরা । কিন্তু, এবছর তাদের 10-12 দিনের মধ্যে খাতা দেখার কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । যদিও প্রধান পরীক্ষকদের একাংশের মতে, এই সময়সীমার মধ্যে মূল্যায়নের কাজ শেষ করা অসম্ভব নয় ।বর্তমানে সব স্কুল বন্ধ । তাই শিক্ষক তথা পরীক্ষকরা বাড়িতেই রয়েছেন । ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মূল্যায়ন করার যথেষ্ট সময় পাবেন তারা । এক একজন পরীক্ষক সাধারণত 100টি করে উত্তরপত্র মূল্যায়ণ করেন । তারা যদি দিনে 10টি করেও উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেন তাহলেও 10 দিনের মধ্যে মূল্যায়নের কাজ শেষ করার কথা । যদিও সংসদের তরফে উত্তরপত্র মূল্যায়নের পাশাপাশি স্ক্রুটিনির কাজও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে করতে বলা হয়েছে । যেহেতু অনেক জেলাতেই পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চালু হয়ে গেছে তাই পরীক্ষকদের উত্তরপত্র সংগ্রহ করতে আসতেও খুব একটা সমস্যার মুখে পড়তে হবে না বলে মনে করছেন প্রধান পরীক্ষকরা । যদি কোথাও সমস্যাও হয় সেক্ষেত্রে বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় পুলিশ পূর্ণ সহযোগিতা করবে বলেও আশা করছেন তারা । সংসদ সভাপতি মহুয়া দাস বলেন, "পড়ুয়াদের অ্যাকাডেমিক স্বার্থরক্ষার জন্য প্রধান পরীক্ষকদের কাছে সংসদকে যথাসাধ্য সাহায্য ও সহযোগিতা করার আবেদন করছি ।"
তবে অন্যান্য বছরের মতো উত্তরপত্র জমা দিতে যেতে হবে না । মূল্যায়নের পর উত্তরপত্র ও নম্বর প্রধান পরীক্ষকদের কাছে জমা করে থাকেন পরীক্ষকরা । তারপরে সেই উত্তরপত্রগুলির স্ক্রুটিনির পর পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর সংসদে পাঠাতেন প্রধান পরীক্ষকরা । আর উত্তরপত্রগুলি তাঁদের কাছেই সংরক্ষণ করে রেখে দিতেন নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত । এবছর পরীক্ষকদেরই উত্তরপত্রগুলি সংরক্ষণ করে রাখতে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ । মূল্যায়ন ও স্ক্রুটিনির পর শুধুমাত্র মার্কস ফয়েল ই-মেল বা ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে পরীক্ষকদের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে ।