ETV Bharat / state

মেট্রোর AC রেক কতটা নিরাপদ, কোরোনা সংক্রমণ কি ছড়াতে পারে ? - Metro AC rack

AC থেকে তো ভাইরাস ছড়াবে না। কিন্তু যে ঘরে AC চলছে সেখানে যদি পাখা চলে, তা হলে যে কোনও হাওয়ার এই মুভমেন্ট, এটা একটা ভাইরাসকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বয়ে নিয়ে যায়।

Corona virus
Corona virus
author img

By

Published : Sep 13, 2020, 9:40 PM IST

কলকাতা, 13 সেপ্টেম্বর: কলকাতায় চালু হল মেট্রো রেলওয়ের পরিষেবা। কিন্তু, COVID-19-এর সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে মেট্রো কি ব্যতিক্রম হয় উঠবে? মেট্রো পরিষেবা বা এই ধরনের অন্যান্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চালু হলে বা পাবলিক গ্যাদারিং শুরু হলে, তখন সেখান থেকে এই COVID-19-এর ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে? শুধুমাত্র তাই নয়। মেট্রোর AC-তেও COVID-19-এর ঝুঁকি কতটা থেকে যাচ্ছে। কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা?

AC থেকে তো ভাইরাস ছড়াবে না। কিন্তু যে ঘরে AC চলছে সেখানে যদি পাখা চলে, তা হলে যে কোনও হাওয়ার এই মুভমেন্ট, এটা একটা ভাইরাসকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বয়ে নিয়ে যায়। ধরা যাক, একটি ঘরের মধ‍্যে অনেক মানুষ রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজনের মুখে এই COVID-19-এর ভাইরাস রয়েছে। এবার তিনি যখন কথা বলছেন, হাঁচছেন, কাশছেন, তখন তাঁর মুখ থেকে যে লালা বের হচ্ছে, সেটা তাঁর আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যদি সেখানে AC বা সিলিং ফ‍্যান বা যে কোনও রকমের পাখা চলে, এবং হাওয়াটা যদি অস্থির হয়, এটাকে বলে এয়ার টারবুলেন্স, তা হলে হাওয়া এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাবে। স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের প্রাক্তন অধিকর্তা, চিকিৎসক অমিতাভ নন্দী বলেন, "এখন স্প্লিট AC-র ব‍্যবহার হয়। এই ধরনের AC-তে কী হয়, ঘরের ভিতরের হওয়াটাকে টেনে নিয়ে সেটাকে ঠান্ডা করে আবার ছেড়ে দেয়। তার মানে একটা এয়ার সারকুলেশন হচ্ছে। এবং, ঘরের হাওয়ার মধ্যে COVID-19-এর ভাইরাস যদি ড্রপলেটের মাধ্যমে থাকে, তাহলে সেটা সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এবং, এর স্বপক্ষে অনেক তথ্য এবং খবর বিভিন্ন দেশ থেকে পাওয়া গিয়েছে যে, এভাবে COVID-19 ছড়িয়েছে।"

কলকাতায়ও মেট্রো রেল পরিষেবা চালু হল। কী বলবেন, কতটা ঝুঁকির?

স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের প্রাক্তন এই অধিকর্তা বলেন, "মেট্রো রেল চলবে। সেখানে এর একটা সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। কারণ, আমি শুনছিলাম ওখানকার একজন বড় অফিসার বলছেন যে, AC চালান হবে না, পাখা চালান হবে। তো ব্যাপারটা একই। AC চালান মানে ঠান্ডা করা আর পাখা চালানো মানে ব্লোয়ার ফ‍্যান যেটা চালান হবে, সেখানে ব্যাপারটা একই। একটা এয়ার টারবুলেন্স হবে।" তিনি আরও বলেন, "ঠিক আছে, না হয় মানুষের মধ্যে দূরত্ব মেইনটেন করা হল। কিন্তু মেট্রোর কামরার মধ্যে হাওয়াটা তো এক স্থান থেকে গোটা কামরার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। সুতরাং সেখানে আমরা কী করে বাঁচব, সেই (সংক্রমণের) সম্ভাবনা থেকে যায়।" তা হলে কী করতে হবে? এই প্রশ্নতে চিকিৎসক অমিতাভ নন্দী বলেন, "প্রতিটি মানুষকে দেখতে হবে সঠিক হবে তাঁরা মাস্ক পড়ছেন কি না। সঠিক মাপের, সঠিক টাইপের মাস্ক তাঁরা পড়ছেন কি না। হাবিজাবি একটা লুঙ্গি ছেঁড়া পড়ে গেলাম আমি, তা করলে তো আর এই COVID-19-এর ভাইরাস আটকানো যাবে না। সুতরাং, ঠিক স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী মাস্ক ব্যবহার করা এবং মাস্ক ব্যবহার করার পদ্ধতি যেটা অর্থাৎ, নাক, মুখ, গাল এবং থুতনি অর্থাৎ, চিবুক, এই পুরোটা অংশ যাতে টাইট করে চেপে থাকে, সেই ভাবে মাস্ক পরতে হবে ।"

যদিও, কলকাতায় অবস্থিত বেসরকারি একটি শিশু হাসপাতালের অধিকর্তা, চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ বলেন, "COVID-19, এটা ড্রপলেট ইনফেকশন। এয়ারবর্ন ইনফেকশন নয়। তো AC-র হাওয়ায় এই COVID-19-এর ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার চান্স খুব একটা বেশি বলে আমার মনে হচ্ছে না। তবে যাঁরাই মেট্রোতে উঠবেন তাঁদেরকে মাস্ক পড়তে হবে। আমার মনে হয় মেট্রো কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে। যাতে ওভার ক্রাউডিং না হয়ে যায়, সেই জন্য বোর্ডিং পাস টাইপের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।"

চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ আরও বলেন, "আমি তো দেখি শহরতলী থেকে ভোর বেলায় যে সব সবজির ভ্যান আসছে, তাতে সবাই একেবারে ঠাসাঠাসি করে থাকছেন। জীবন চালাতে গেলে মানুষকে অনেক রিস্ক নিতে হয়। সেই রিস্ক মানুষকে হয়ত নিতেই হবে। কারণ অনির্দিষ্টকালের জন্য মেট্রো বন্ধ করে রাখাও যাবে না। সুতরাং, আমার মনে হয় ঠিকই আছে, মেট্রো চালানো উচিত।"

কলকাতা, 13 সেপ্টেম্বর: কলকাতায় চালু হল মেট্রো রেলওয়ের পরিষেবা। কিন্তু, COVID-19-এর সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে মেট্রো কি ব্যতিক্রম হয় উঠবে? মেট্রো পরিষেবা বা এই ধরনের অন্যান্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চালু হলে বা পাবলিক গ্যাদারিং শুরু হলে, তখন সেখান থেকে এই COVID-19-এর ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে? শুধুমাত্র তাই নয়। মেট্রোর AC-তেও COVID-19-এর ঝুঁকি কতটা থেকে যাচ্ছে। কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা?

AC থেকে তো ভাইরাস ছড়াবে না। কিন্তু যে ঘরে AC চলছে সেখানে যদি পাখা চলে, তা হলে যে কোনও হাওয়ার এই মুভমেন্ট, এটা একটা ভাইরাসকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বয়ে নিয়ে যায়। ধরা যাক, একটি ঘরের মধ‍্যে অনেক মানুষ রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজনের মুখে এই COVID-19-এর ভাইরাস রয়েছে। এবার তিনি যখন কথা বলছেন, হাঁচছেন, কাশছেন, তখন তাঁর মুখ থেকে যে লালা বের হচ্ছে, সেটা তাঁর আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যদি সেখানে AC বা সিলিং ফ‍্যান বা যে কোনও রকমের পাখা চলে, এবং হাওয়াটা যদি অস্থির হয়, এটাকে বলে এয়ার টারবুলেন্স, তা হলে হাওয়া এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাবে। স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের প্রাক্তন অধিকর্তা, চিকিৎসক অমিতাভ নন্দী বলেন, "এখন স্প্লিট AC-র ব‍্যবহার হয়। এই ধরনের AC-তে কী হয়, ঘরের ভিতরের হওয়াটাকে টেনে নিয়ে সেটাকে ঠান্ডা করে আবার ছেড়ে দেয়। তার মানে একটা এয়ার সারকুলেশন হচ্ছে। এবং, ঘরের হাওয়ার মধ্যে COVID-19-এর ভাইরাস যদি ড্রপলেটের মাধ্যমে থাকে, তাহলে সেটা সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এবং, এর স্বপক্ষে অনেক তথ্য এবং খবর বিভিন্ন দেশ থেকে পাওয়া গিয়েছে যে, এভাবে COVID-19 ছড়িয়েছে।"

কলকাতায়ও মেট্রো রেল পরিষেবা চালু হল। কী বলবেন, কতটা ঝুঁকির?

স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের প্রাক্তন এই অধিকর্তা বলেন, "মেট্রো রেল চলবে। সেখানে এর একটা সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। কারণ, আমি শুনছিলাম ওখানকার একজন বড় অফিসার বলছেন যে, AC চালান হবে না, পাখা চালান হবে। তো ব্যাপারটা একই। AC চালান মানে ঠান্ডা করা আর পাখা চালানো মানে ব্লোয়ার ফ‍্যান যেটা চালান হবে, সেখানে ব্যাপারটা একই। একটা এয়ার টারবুলেন্স হবে।" তিনি আরও বলেন, "ঠিক আছে, না হয় মানুষের মধ্যে দূরত্ব মেইনটেন করা হল। কিন্তু মেট্রোর কামরার মধ্যে হাওয়াটা তো এক স্থান থেকে গোটা কামরার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। সুতরাং সেখানে আমরা কী করে বাঁচব, সেই (সংক্রমণের) সম্ভাবনা থেকে যায়।" তা হলে কী করতে হবে? এই প্রশ্নতে চিকিৎসক অমিতাভ নন্দী বলেন, "প্রতিটি মানুষকে দেখতে হবে সঠিক হবে তাঁরা মাস্ক পড়ছেন কি না। সঠিক মাপের, সঠিক টাইপের মাস্ক তাঁরা পড়ছেন কি না। হাবিজাবি একটা লুঙ্গি ছেঁড়া পড়ে গেলাম আমি, তা করলে তো আর এই COVID-19-এর ভাইরাস আটকানো যাবে না। সুতরাং, ঠিক স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী মাস্ক ব্যবহার করা এবং মাস্ক ব্যবহার করার পদ্ধতি যেটা অর্থাৎ, নাক, মুখ, গাল এবং থুতনি অর্থাৎ, চিবুক, এই পুরোটা অংশ যাতে টাইট করে চেপে থাকে, সেই ভাবে মাস্ক পরতে হবে ।"

যদিও, কলকাতায় অবস্থিত বেসরকারি একটি শিশু হাসপাতালের অধিকর্তা, চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ বলেন, "COVID-19, এটা ড্রপলেট ইনফেকশন। এয়ারবর্ন ইনফেকশন নয়। তো AC-র হাওয়ায় এই COVID-19-এর ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার চান্স খুব একটা বেশি বলে আমার মনে হচ্ছে না। তবে যাঁরাই মেট্রোতে উঠবেন তাঁদেরকে মাস্ক পড়তে হবে। আমার মনে হয় মেট্রো কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে। যাতে ওভার ক্রাউডিং না হয়ে যায়, সেই জন্য বোর্ডিং পাস টাইপের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।"

চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ আরও বলেন, "আমি তো দেখি শহরতলী থেকে ভোর বেলায় যে সব সবজির ভ্যান আসছে, তাতে সবাই একেবারে ঠাসাঠাসি করে থাকছেন। জীবন চালাতে গেলে মানুষকে অনেক রিস্ক নিতে হয়। সেই রিস্ক মানুষকে হয়ত নিতেই হবে। কারণ অনির্দিষ্টকালের জন্য মেট্রো বন্ধ করে রাখাও যাবে না। সুতরাং, আমার মনে হয় ঠিকই আছে, মেট্রো চালানো উচিত।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.