কলকাতা, 3 জুন : করোনা মোকাবিলায় রাজ্যজুড়ে কড়াবিধি নিষেধ আরোপ করেছিল সরকার ৷ ফলে চরম ক্ষতির মুখে পড়ে হোটেল-রেস্তরাঁগুলি । বৃহস্পতিবার বণিকসভার বৈঠকে সেই বিষয়ে আলোচনা করে বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করল রাজ্য সরকার । বণিকসভার সদস্যদের অনুরোধ মেনে নিয়ে দিনে 3 ঘণ্টা করে হোটেল-রেস্তরাঁ খোলা রাখার অনুমতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বিকেল 5টা থেকে রাত 8টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে হোটেল-রেস্তরাঁ ।
তবে হোটেল বা রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষকে মানতে হবে বেশ কিছু শর্ত ৷ সেই শর্ত না মানলে কড়া মনোভাব দেখাবে সরকার ৷ জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ একই সঙ্গে অনলাইনে আরও বেশি কাজ চালানোর পরামর্শ দেন । মনে করিয়ে দেন, যত দ্রুত সম্ভব কর্মীদের টিকাকরণের ব্যবস্থা করতে হবে । পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, আগামি 16 জুন থেকে 25 শতাংশ কর্মী নিয়ে খোলা যেতে পারে শপিং মলও ।
প্রায় এক মাস হল রাজ্যে করোনার সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে চলছে কড়া বিধিনিষেধ । বন্ধ সমস্ত গণপরিবহণ । শপিং মল, ফুড প্লাজা, সিনেমা হল, হোটেল, রেস্তরাঁও বন্ধ । তবে হোটেল ও রেস্তরাঁগুলি থেকে অনলাইন ফুড ডেলিভারির কাজ চলছে । তবে আজ বণিকসভার প্রস্তাব মেনে হোটেল ও রেস্তরাঁতে বেশ কিছু ছাড় দিল সরকার । বিকেল 5টা থেকে রাত 8টা, এই তিনঘণ্টা হোটেল-রেস্তরাঁয় বসেই খেতে পারবেন মানুষজন । তবে কঠোরভাবে মানতে হবে দূরত্ববিধি । যথাযথভাবে স্যানিটাইজার, মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে । অবশ্যই হোটেল, রেস্তরাঁর কর্মীদের টিকা নিতে হবে । তারপরই কাজে যোগদানের অনুমতি পাবেন তাঁরা ।
আজ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা ব্যবসা বন্ধের পক্ষে নই । কিন্তু এমন কিছুও আমরা করব না, যে কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের দিকে ঠেলে দেবে । হোটেলগুলি নিজেদের কর্মীদের টিকা দিক । হোটেল বন্ধ হোক আমরা চাই না । আপনারা নিজেদের কর্মীদের টিকা দিন । আপনারা অনলাইনে ব্যবসা বাড়ান । মিষ্টির দোকান 10টা থেকে 5টা পর্যন্ত খোলা । 5 থেকে 8টা পর্যন্ত হোটেল খোলা রাখা যাবে ।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ মনে করিয়ে দেন, ‘‘অন্যান্য রাজ্যে পুরোপুরি লকডাউন করা হয়েছে । আমরা সেটা করিনি । কার্ফু করিনি । আমরা কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছি । ব্যবসার কথা মাথায় রেখেছি । সকাল 7টা থেকে 10 পর্যন্ত দোকানবাজার চলছে । 12 টা থেকে 3 টে পর্যন্ত শাড়ি-সহ অন্যান্য দোকান চলছে । মিষ্টির দোকান 10 টা থেকে 5 টা পর্যন্ত খোলা । একেবারে পুরো বন্ধ নয় । যতটা সম্ভব খুলে রেখেছি ।’’
আরও পড়ুন : বিশ্ব জয়ের লক্ষ্যে বিলেত পাড়ি কোহলিদের
ভ্যাকসিনের উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । বলেন, ‘‘শিল্পসংস্থাগুলি তাদের কর্মীদের টিকা দিতে পারে ।’’ এক্ষেত্রে ভ্যাকসিন কিনে নেওয়ার কথা বলেন তিনি ৷ স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করার নির্দেশও দেন । এরপর বণিকসভার সদস্যরা শপিং মল খোলা নিয়েও তাঁর কাছে অনুমোদন চান । তাঁরা জানান যে শপিং মলগুলি বড় হওয়ায় দূরত্ববিধি এবং নিয়মকানুন মেনে চলা সহজ । তাই এই পরিস্থিতিতে তা খোলা হলে কোনও সমস্যা হবে না । 16 জুন থেকে শপিং মল খোলার অনুমতিও দিয়ে দিতে পারেন বলে আজ জানান মুখ্যমন্ত্রী ।