কলকাতা, 28 জানুয়ারি: ব্যবসায়িক শত্রুতা জেরে এক ব্যক্তিকে মারধর করে হত্যার পর নিজেই থানায় এসে মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাল এক ব্যক্তি। ঘটনাটি বুঝতে বিশেষ বিলম্ব হয়নি তদন্তকারীদের। এরপরেই থানায় মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে আসা ওই ব্যক্তিকে আটক করেন তদন্তকারীরা। শনিবার সকালে এই ঘটনাটি ঘটেছে তিলজালা থানায় (Tiljala Police Station) এলাকায়। মৃত ব্যক্তির নাম মিতেন্দ্র পাশওয়ান (37)।
ঘটনার সূত্রপাত, এদিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ। আর ঘটনার যবনিকা পতন দুপুর সাড়ে তিনটের সময়। পরিবার সূত্রের খবর, মৃত মিতেন্দ্র পাশওয়ান নামে ওই ব্যক্তি পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি আজ সকাল 7টার সময় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। আর ফিরে আসেননি। পরিবারের সদস্যরা তাঁর খোঁজ করতে গেলেও কোনও খবর পাওয়া যায়নি। অবশেষে, তিলজলা থানা এলাকার উত্তর 55 গ্রাম বাসস্ট্যান্ডের কাছে মিতেন্দ্র পাশওয়ানকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন এলাকার লোকজন।
ঘটনাস্থলে তিলজলা থানার পুলিশ আসার পাশাপাশি আসেন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের (Homicide Team Investigate) গোয়েন্দারাও। দেহটি দেখে গোয়েন্দাদের প্রাথমিকভাবে অনুমান হয় এটি খুনের ঘটনা। কারণ মৃত মিতেন্দ্র পাশওয়ানের শরীরে একাধিক জায়গায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। তড়িঘড়ি পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে তিলজোলা থানার পুলিশ। ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করতে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, কয়েকজন ব্যক্তি একটি রিক্সায় করে এসে মিতেন্দ্র পাশওয়ানের দেহ উত্তর 55 গ্রামের বাসস্ট্যান্ডের কাছে ফেলে দিয়ে গিয়েছে।
এরপরেই বাইপাস লাগোয়া যাবতীয় সিসিটিভি ক্যামেরা ঘেঁটে তদন্তকারীরা তদন্ত শুরু করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, এর মধ্যেই নাটকীয়ভাবে এক ব্যক্তি দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ তেলতলা থানায় এসে অভিযোগ করেন মিতেন্দ্র পাশওয়ান নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার ব্যবসায়িক শত্রুতা ছিল এবং আজ মিতেন্দ্র পাশওয়ান তাঁকে এবং তাঁর মাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করে। অভিযোগ ওই ব্যক্তি পুলিশের কাছে স্বীকার করে যে এর পরেই সে এবং তার কিছু সহকারী মিতেন্দ্রকে ব্যাপক মারধর করে কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে কোনওভাবে পালিয়ে যান মিতেন্দ্র।
আরও পড়ুন: উচ্চস্বরে ডিজে বাজানোর প্রতিবাদ, তৃণমূলের প্রাক্তন উপপ্রধানকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ
এরপরই যাবতীয় যাবতীয় সন্দেহ এসে পড়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। পুলিশের অনুমান সুকৌশলবশত মিতেন্দ্র পাশওয়ানকে ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরে প্রথমে মারধর করে হত্যা করা হয় এবং সমস্ত দোষ নিজের গা-থেকে ঝেড়ে ফেলার জন্যই নাটকীয়ভাবে তিলজলা থানায় এসে মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধেই অভিযোগ করে বসেন ওই ব্যবসায়ী। পুলিশ সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ওই ব্যবসায়ীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাকে ঘটনাস্থলেও নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই খুনের ঘটনার নেপথ্যে আর কারা কারা যুক্ত রয়েছে তাও জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। যদিও তদন্তের স্বার্থে আটক ব্যবসায়ের নাম প্রকাশ করতে চাইনি পুলিশ।