ETV Bharat / state

হাইকোর্টে বিচারপতি ও আইনজীবী কল্যাণের মধ্যে নজিরবিহীন বাদানুবাদ - Sabyasachi Dutta

শুনানি চলাকালিন বাদানুবাদে জড়ালেন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় ও আইনজীবী কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় । পরে বিচারপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কল্যাণের ।

কলকাতা হাইকোর্ট
author img

By

Published : Jul 17, 2019, 10:05 PM IST

কলকাতা ১৭ জুলাই : বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়েরএজলাসে তখন বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তকে অনাস্থা প্রস্তাবের যে চিঠি দেওয়া হয়েছে সেটা বৈধ না অবৈধ সেই নিয়ে জোর সওয়াল জবাব চলছে । সব্যসাচী দত্তর আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য সওয়াল করেন, "মেয়রকে অপসারণ সংক্রান্ত ব্যাপারে যে বোর্ড অফ কাউন্সিলরদের মিটিং আহ্বান করা হয়েছে সেটা একমাত্র চেয়াপার্সনের নির্দেশে কমিশনার চিঠি দিয়ে কাউন্সিলরদের ওয়াকিবহাল করাতে পারে । কিন্ত এখানে কমিশনার সেই কাজ করেছেন । মিটিংটি জোর করে কমিশনারকে দিয়ে করানো হয়েছে বলে মনে হচ্ছে । তাই নতুন করে চিঠি দিয়ে মিটিং ডাকা হোক ।"

এদিকে বিধাননগর পৌরনিগমের চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর আইনজীবী ও তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় পালটা বলেন, " আইন অনুযায়ী কর্পোরেশনের প্রথম মিটিং বাদে সব মিটিংই ডাকতে পারেন কমিশনার । " বার বার দুই পক্ষ একই বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি সাজাচ্ছিলেন । তখন বিচারপতি বলেন, "আমি আর কোনও বক্তব্য শুনব না । এবার রায় দিতে হবে ।" তখন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আপনি এই নোটিশে কোনও স্থগিতাদেশ দেবেন না । বরং ডেটটা পিছিয়ে দিয়ে সেই দিন মিটিংয়ের তারিখ ঠিক করে দিন ।"

তখন বিচারপতি এজলাসে উপস্থিত আইনজীবী অরুণাভ ঘোষের উদ্দেশে বলেন, "রোজই দেখছি আজ একজন CPI(M)-এ,কাল তৃণমূলে তো পরশু BJP-তে যাচ্ছে। কী হচ্ছে এটা ! আপনাদেরও হয়ত কাল অন্য দলে দেখব । জনপ্রতিনিধিদের কাজ কী ? একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে জনগণের টাকা খাচ্ছে । আজ একটা দল কাল আর একটা দল । বনগাঁর কেসটাতে তো দেখলাম । আর পুলিশ শাসকদলকে সাহায্য করছে । এই তো জনপ্রতিনিধিদের হাল, এরা আবার দেশ চালাবে !"

একথা শোনার পর রেগে যান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি বলেন, "বিচারপতিদের নিয়োগও কি স্বচ্ছ ? কীভাবে বিচারপতিরা মনোনীত হন সবাই জানে । বার অ্যাসোসিয়েশনের ভোটে একটি দল 20 লাখ টাকা খরচ করেছে । সে ব্যাপারে কিছু বলুন ! কোনও একটা দল কে কেন বলছেন ? আপনি যখন অন্যায়ের প্রতিবাদ করছেন তখন এটাও বলুন, আলোচনা করুন । বারে এটা নিয়েও আলোচনা হওয়া উচিত ।"

এরপর বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় কিছুক্ষণের জন্য চুপ থাকেন । তারপর আবার বলেন, "আমি শুধুমাত্র সততার জোরে এই পদে রয়েছি । আমার পুরো পরিবার সৎ । আমার বাবা আইনজীবী ছিলেন । অত্যন্ত সৎ মানুষ হিসেবেই সবাই তাঁকে জানত । আমার নামে কারও কিছু বলার সাহস নেই । আমি কাউকে পরোয়া করি না । সাধারণ মানুষদের জন্যই আমি এখানে বসে আছি । তারা যাতে বিচার থেকে না বঞ্চিত হন সেটা দেখাই আমার কর্তব্য । অনেকে সামান্য আইনজীবী হয়ে টাকার কুমির হয়ে যাচ্ছে দুদিনে ! কীভাবে হচ্ছে আমরা জানি না?" কোর্ট রুম তখন পুরো থমথমে । এরপর বিচারপতি এজলাস ছেড়ে বেড়িয়ে যান ।

পরে দ্বিতীয় দফায় যখন তিনি এজলাসে বসেন তখন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কাছে ক্ষমা চান । তিনি বলেন, " যা বলেছি তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী । আমি সামান্য একজন আইনজীবী । কিছু মনে করবেন না । আমি সত্যিই ক্ষমাপ্রার্থী। "

কলকাতা ১৭ জুলাই : বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়েরএজলাসে তখন বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তকে অনাস্থা প্রস্তাবের যে চিঠি দেওয়া হয়েছে সেটা বৈধ না অবৈধ সেই নিয়ে জোর সওয়াল জবাব চলছে । সব্যসাচী দত্তর আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য সওয়াল করেন, "মেয়রকে অপসারণ সংক্রান্ত ব্যাপারে যে বোর্ড অফ কাউন্সিলরদের মিটিং আহ্বান করা হয়েছে সেটা একমাত্র চেয়াপার্সনের নির্দেশে কমিশনার চিঠি দিয়ে কাউন্সিলরদের ওয়াকিবহাল করাতে পারে । কিন্ত এখানে কমিশনার সেই কাজ করেছেন । মিটিংটি জোর করে কমিশনারকে দিয়ে করানো হয়েছে বলে মনে হচ্ছে । তাই নতুন করে চিঠি দিয়ে মিটিং ডাকা হোক ।"

এদিকে বিধাননগর পৌরনিগমের চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর আইনজীবী ও তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় পালটা বলেন, " আইন অনুযায়ী কর্পোরেশনের প্রথম মিটিং বাদে সব মিটিংই ডাকতে পারেন কমিশনার । " বার বার দুই পক্ষ একই বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি সাজাচ্ছিলেন । তখন বিচারপতি বলেন, "আমি আর কোনও বক্তব্য শুনব না । এবার রায় দিতে হবে ।" তখন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আপনি এই নোটিশে কোনও স্থগিতাদেশ দেবেন না । বরং ডেটটা পিছিয়ে দিয়ে সেই দিন মিটিংয়ের তারিখ ঠিক করে দিন ।"

তখন বিচারপতি এজলাসে উপস্থিত আইনজীবী অরুণাভ ঘোষের উদ্দেশে বলেন, "রোজই দেখছি আজ একজন CPI(M)-এ,কাল তৃণমূলে তো পরশু BJP-তে যাচ্ছে। কী হচ্ছে এটা ! আপনাদেরও হয়ত কাল অন্য দলে দেখব । জনপ্রতিনিধিদের কাজ কী ? একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে জনগণের টাকা খাচ্ছে । আজ একটা দল কাল আর একটা দল । বনগাঁর কেসটাতে তো দেখলাম । আর পুলিশ শাসকদলকে সাহায্য করছে । এই তো জনপ্রতিনিধিদের হাল, এরা আবার দেশ চালাবে !"

একথা শোনার পর রেগে যান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি বলেন, "বিচারপতিদের নিয়োগও কি স্বচ্ছ ? কীভাবে বিচারপতিরা মনোনীত হন সবাই জানে । বার অ্যাসোসিয়েশনের ভোটে একটি দল 20 লাখ টাকা খরচ করেছে । সে ব্যাপারে কিছু বলুন ! কোনও একটা দল কে কেন বলছেন ? আপনি যখন অন্যায়ের প্রতিবাদ করছেন তখন এটাও বলুন, আলোচনা করুন । বারে এটা নিয়েও আলোচনা হওয়া উচিত ।"

এরপর বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় কিছুক্ষণের জন্য চুপ থাকেন । তারপর আবার বলেন, "আমি শুধুমাত্র সততার জোরে এই পদে রয়েছি । আমার পুরো পরিবার সৎ । আমার বাবা আইনজীবী ছিলেন । অত্যন্ত সৎ মানুষ হিসেবেই সবাই তাঁকে জানত । আমার নামে কারও কিছু বলার সাহস নেই । আমি কাউকে পরোয়া করি না । সাধারণ মানুষদের জন্যই আমি এখানে বসে আছি । তারা যাতে বিচার থেকে না বঞ্চিত হন সেটা দেখাই আমার কর্তব্য । অনেকে সামান্য আইনজীবী হয়ে টাকার কুমির হয়ে যাচ্ছে দুদিনে ! কীভাবে হচ্ছে আমরা জানি না?" কোর্ট রুম তখন পুরো থমথমে । এরপর বিচারপতি এজলাস ছেড়ে বেড়িয়ে যান ।

পরে দ্বিতীয় দফায় যখন তিনি এজলাসে বসেন তখন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কাছে ক্ষমা চান । তিনি বলেন, " যা বলেছি তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী । আমি সামান্য একজন আইনজীবী । কিছু মনে করবেন না । আমি সত্যিই ক্ষমাপ্রার্থী। "

Intro:বাদানুবাদে জড়ালেন বিচারপতি ও আইনজীবী Body:
মানস নস্কর---

বাদানুবাদে জড়ালেন বিচারপতি ও আইনজীবী তথা তৃনমুল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, পরে এজলাসে এসে ক্ষমা প্রার্থনা কল্যাণ বাবুর

কলকাতা ১৭ জুলাইঃ
এজলাসে তখন চলছে বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তকে অনাস্থা প্রস্তাবের যে চিঠি দেওয়া হয়েছে সেটা বৈধ না অবৈধ সেই নিয়ে দুই পক্ষের আইনজীবীর জোর সওয়াল জবাব।সব্যসাচী দত্তের পক্ষে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলছেন,"মেয়রকে অপসারণ সংক্রান্ত ব্যাপারে যে বোর্ড ওফ কাউন্সিলরদের মিটিং আহবান করা হয়েছে সেটা একমাত্র চেয়াপারসনের নির্দেশে কমিশনার চিঠি দিয়ে কাউন্সিলরদেরকে ওয়াকিবহাল করাতে পারে।কিন্ত এখানে কমিশনার সেই কাজ করেছেন।যে ভাবে মিটিং ডাকা হয়েছে তাতে সব কিছু কোথাও একটা জোরকরে কমিশনারকে দিয়ে করানো হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।তাই নতুন করে চিঠি দিয়ে মিটিং ডাকা হোক।"এর পাল্টা চেয়ারপার্সন কৃষনা চক্রবর্তীর তরফে আইনজীবী ও তৃণমূল সাংসদ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আইন অনুযায়ী করপোরেশনের প্রথম মিটিং বাদে সব মিটিংই ডাকতে পারেন কমিশনার। " বার বার দুই পক্ষ একই বক্তব্যের সাপেক্ষে যুক্তি সাজাচ্ছিলেন।তখন বিচারপতি বলেন, "আমি আর কোনো বক্তব্য শুনবো না। এবার রায় দিতে হবে আমাকে।" তখন আইনজীবী তথা তৃনমুল সাংসদ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আপনি এই নোটিশে কোনো স্থগিতাদেশ দেবেন না।বরং ডেটটা পিছিয়ে দিয়ে সেই দিন মিটিং এর তারিখ ঠিক করে দিন।কোনো স্থগিতাদেশ দেবেন না।অত্যন্ত জোরের সঙ্গে বলেন এই কথা।" তখন বিচারপতি এজলাসে উপস্থিত আইনজীবী অরুণাভ ঘোষের উদ্দেশ্যে বলেন,"রোজই দেখছি আজ একজন সিপিএমে,কাল বিজেপি তে পরশু তৃণমূলে।কি হচ্ছে এটা! আপনাদেরকেও কাল দেখবো অন্য দলে।জনপ্রতিনিধিদের কাজ কি?

একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হয়ে জনগণের টাকা খাচ্ছে। আজ একটা দল কাল আর একটা দল।বনগাঁর কেসটাতে তো দেখলাম। আর পুলিশ প্রশাসনকে সাহায্য করছে।এই তো জনপ্রতিনিধিদের হাল, এরা আবার দেশ চালাবে!তখন ক্ষুব্ধ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,
"বিচারপতিদের নিয়োগ ও কি স্বচ্ছ?কিভাবে বিচারপতিরা মনোনীত হন সবাই জানে।বার এসোসিয়েশনের ভোটে একটি দল( বিজেপি) ২০ লক্ষটাকা খরচ করেছে। সে ব্যাপারে কিছু বলুন! কোনো একটা দল(তৃণমূল)কে কেন বলছেন?আপনি যখন অন্যায়ের প্রতিবাদ করছেন তখন এটাও বলুন, আলোচনা করুন।বারে এটা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। " এরপর বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় কিছুক্ষণের জন্য চুপ থাকেন। তারপর আবার উত্তেজিত হয়ে বলতে থাকেন, "আমি শুধুমাত্র সততার জোরে এই পদে রয়েছি। আমার পুরো পরিবার সৎ।আমার বাবা ছিলেন আইনজীবী,অত্যন্ত সৎ মানুষ হিসাবে সবাই চিনতো তাকে।আমার নামে কারো কিছু বলার সাহস নেই।আমি কারো পরোয়া করি না। সাধারণ সৎ মানুষদের জন্যই আমি এখানে বসে আছি,তারা যাতে বিচারথেকে না বঞ্চিত হন।
সামান্য আইনজীবী হয়ে টাকার কুমির হয়ে যাচ্ছে দুদিনে!কি করে হচ্ছে আমরা জানি না?"কোর্ট রুম তখন পুরো থমথমে।
উঠে যান বিচারপতি। পরে দ্বিতীয় দফায় যখন তিনি এজলাসে বসেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এসে ক্ষমা চেয়ে বলেন, " যা বলেছি তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমি সামান্য একজন আইনজীবী। কিছু মনে করবেন না।আমি সত্যিই ক্ষমাপ্রার্থী। "
এরপর বিচারপতি এই মামলার রায় দানের সময় হাসতে হাসতে বলেন,"সত্যিই বার কাউন্সিলে কি হচ্ছে আমার কোনো ধারনাই ছিল না!কি চলছে সব!"

Conclusion:
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.