কলকাতা, 13 সেপ্টেম্বর: সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে সরানোর নির্দেশ দিল আদালত । 2021 সালের 27 অগস্ট তাঁকে পুনরায় উপাচার্য পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় । রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন আইনজীবী অনিন্দ্যসুন্দর দাস ৷ দীর্ঘদিন ধরে এই মামলার শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছিল আদালত ৷ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ সোনালি চক্রবর্তীকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত খারিজ করল (HC verdict Sonali Chakravarti Banerjee's recruitment as Vice Chancellor of Calcutta University is illegal)। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী ৷
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের বক্তব্য
জুলাই মাসে মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সোনালী চক্রবর্তীর নিয়োগের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছিলেন, "কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী নিয়োগ এবং পুনর্নিয়োগ আলাদা ব্যাপার । হয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (University Grants Commission, UGC) নীতি অথবা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী নিয়োগ করা যায় ।" তিনি জানান, উপাচার্য পুনর্নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের ক্ষমতা একই রকম নয় । এ বিষয়ে রাজ্যের সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে হয় রাজ্যপালকে । বিশ্ববিদ্যালয় সেনেট ও মন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে উপাচার্যকে নিয়োগ করতে পারেন রাজ্যপাল ।
2011 সালে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি সংশোধন অ্যাক্ট (West Bengal University Laws (Amendment) Act, 2011) অনুযায়ী পুনর্নিয়োগের ক্ষেত্রে চার বছর সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব সামলাতে হয় অথবা 65 বছর বয়স- যেটা আগে হবে সেইমতো নিয়োগ করা হয় । এক্ষেত্রে রাজ্যের সিদ্ধান্তে সম্মতি দিতে হয় রাজ্যপালকে । 6 মাসের মধ্যে এই নিয়োগ করতে হয় । নিয়োগে সার্চ কমিটির রুল মানা বাধ্যতামূলক । পাশাপাশি তা রাজ্যের সন্তুষ্টির উপর নির্ভর করে । পুনর্নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং শিরোধার্য, আদালতে জানিয়েছিলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল ৷
আরও পড়ুন: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিয়োগের বৈধতা নিয়ে মামলার রায় স্থগিত
মামলাকারীর আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্যের যুক্তি
উপাচার্য পুনর্নিয়োগের বিরোধিতা করেন মামলাকারী অনিন্দ্যসুন্দর দাস ৷ তাঁর আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের আইন অনুযায়ী রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাজ্যপাল ।বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ক্ষমতা রাজ্যপালেরই । রাজ্যপালের সম্মতি না নিয়ে উপাচার্য নিয়োগ করা যায় না । সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়োগের ব্যাপারে মাননীয় রাজ্যপালকে কিছুই জানানো হয়নি ৷
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ (Calcutta High Court Chief Justice, Prakash Shrivastava) দু'পক্ষের বক্তব্য শুনে দীর্ঘদিন রায়দান স্থগিত রেখেছিল । মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ রায় দেয়, সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিয়োগ আইন সঙ্গত হয়নি । তাই তাঁকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে সরানোর হোক, নির্দেশ আদালতের ।