কলকাতা, 15 অক্টোবর: উত্তর কলকাতার শতাব্দী প্রাচীন বাড়ির চুন খসে বেরিয়ে পড়া ইট। তার পাশেই গা ঘেসে উঠেছে আধুনিক ফ্ল্যাট। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দীর্ঘ কাল। তেমনি পুরনো বাড়ির পাশে গজিয়ে ওঠা ফ্ল্যাটের সদস্যদের সঙ্গেও তৈরি হয় আত্মিক সম্পর্ক ৷ যেন নাড়ির টান। সেই নাড়ির টান এবার মণ্ডপে তুলে ধরছে হাতিবাগান সর্বজনীন। 89 বর্ষে পদার্পণ করেছে এবারে তাঁদের পুজো ৷ বিষয় ভাবনা দোসর। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শিল্পী তাপস দত্ত। প্রতিমা করেছেন কৃশানু পাল।
মা আর সন্তানের নাড়ির টান, সেই সম্পর্কও দোসর! আবার কোথাও সাবেকিয়ানা ও আধুনিক হয়ে ওঠে একে ওপরের দোসর। আলো হয়ে ওঠে অন্ধকারের দোসর। সেই সকল ভাবনাকেই এবার পুজো মণ্ডপে তুলে ধরতে চেয়েছে হাতিবাগান সর্বজনীন ৷ উদ্যোক্তা শাশ্বত বসু বলেন, "প্রতিবছর আমরা কোনও না কোনও লোক শিল্প তুলে ধরার চেষ্টা করি পুজো মণ্ডপের মধ্য দিয়ে ৷ এবারও তাই অন্য রকম ভাবনা। বর্তমানে মানুষের একে ওপরের সম্পর্ক আলগা হয়েছে। তাই পুরনো নাড়ির টান তুলে ধরা হয়েছে এখানে। মণ্ডপে প্রবেশ করলেই অদ্ভুত আলোর মায়াজালে জড়াবেন দর্শনার্থীরা ৷"
শিল্পী তাপস দত্ত বলেন, "দু'জনের মধ্যে আত্মার টান বা সম্পর্কই যেন দোসর হয়ে ওঠে। সেই ভাবেই গোটা মণ্ডপ সাজানো হয়েছে। পুরনোকে ভুলে নতুন হয় না ৷ সেই সম্পর্কগুলোই অন্যরকমভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছ ৷ " মণ্ডপে ঢুকলেই সেই সম্পর্ক বোঝাতে সামনে দুই ধারার বাড়ির মাঝে থাকছে সেতু বন্ধন। বাড়ির মধ্যে নাড়ির টান তুলে ধরা হয়েছে যা মূল মণ্ডপের উপরের অংশে জঠরে গিয়ে পৌঁছেছে। এটা এক অনাবিল সম্পর্ক যা অজান্তেই শিকড় ছড়িয়ে দেয় মানব জীবনে। মণ্ডপ টিনের পাত দিয়ে তৈরি। উপরে লোহার রড দিয়ে নানা নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ।
আরও পড়ুন: দেবীর হাতে অস্ত্রের বদলে পদ্ম, শিল্পের ছোঁয়া সোনাঝুরি জঙ্গলের হীরালিনী দুর্গাপুজোয়