কলকাতা, 19 সেপ্টেম্বর: 'ঠাস্ ঠাস্ দ্রুম্ দ্রাম্, শুনে লাগে খট্কা— ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পট্কা!' কিংবা "হুঁকো মুখো হ্যাংলা, বাড়ী তার বাংলা..' এই কবিতা/ছড়াগুলো পড়লে আজও মুখে ফুটে ওঠে এক রাশ হাসি ৷ মজার সব ছড়ায় ছন্দে ছন্দে যিনি অনেক কঠিন কথাও সহজ করে বলে দিতে পারতেন তিনি সুকুমার রায় ৷ কিন্তু এখনকার জেনারেশনের হ্যারি পটার আর ডোরেমনদের ভিড়ে হারিয়ে গিয়েছে 'আবোল তাবোল' ৷ সুকুমার রায়ের অমর সৃষ্টি দেখতে দেখতে পার করে গিয়েছে 100 বছর ৷ সেই স্মৃতিকে আরও একবার টাটকা করে তুলতে উদ্যোগ নিয়েছে হাতিবাগান নবীন পল্লী ৷ তাদের দুর্গাপুজোর থিমে ধরা পড়তে চলেছে সুকুমার রায়ের 'আবোল তাবোল' ৷
উত্তর কলকাতার পুরনো পাড়া গনেন্দ্র মিত্র লেন, নলিন সরকার স্ট্রিট। প্রাচীন বাড়ির দেওয়াল জুড়ে আবোল তাবলের নানা ছড়া ধরা পড়েছে ৷ অতি পরিচিত আবোল তাবোল-এর চরিত্রগুলো ফুটে উঠেছে রঙ তুলিতে। আজকের দিনে 100 বছর আগে 'আবোল তাবোল' প্রকাশিত হয়েছিল। শুধু তাই নয়, লেখক সুকুমার রায়ের মৃত্যুরও 100 বছর। তাই এই দিনটিকে স্মরণে রেখে হাতিবাগান নবীন পল্লীর তরফে তাদের এবারের থিম ঘোষণা করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন থিম শিল্পী অনির্বাণ, আলোক শিল্পী প্রেমেন্দু বিকাশ চাকি, ক্লাবের উপদেষ্টা দীপ্ত ঘোষ, প্রিয়দর্শনী ভাওয়া-সহ অন্যান্যরা।
নবীন পল্লীর উপদেষ্টা দীপ্ত ঘোষ বলেন, "আবোল তাবোল-এর 100 বছর, এটাই মূল ভাবনা। বাঙালিদের কাছে দুর্গা পুজো শুধু উৎসব নয়, সব থেকে বড় মঞ্চ কিছু দেখানোর বা জানানোর জন্য। নস্ট্যালজিক ব্যাপার এমন ভাবে ফুটিয়ে তুলতে চাই যাতে আমাদের মণ্ডপ দেখে দর্শকরা বাড়ি গিয়ে ফের আবোল তাবোল বইটির খোঁজ করে। আর খুঁজে না পেলে যাতে পরের দিন কলেজ স্ট্রীটে কিনতে ছোটেন। এমনটা করতে পারলেই আমরা সফল। গোটা পাড়া সেজে উঠছে। যেখান থেকে এই বই প্রকাশ সেই ছাপাখানাও আমরা এখানে তৈরি করব।"
শিল্পী অনির্বাণের কথায়, দুর্গাপুজোর সঙ্গে সাহিত্যের নিগূঢ় সম্পর্ক। সুকুমার রায়ের সাহিত্য সৃষ্টি ও আঁকা ছবি এগুলো নিয়েই এবার নবীন পল্লীর পুজো। ফলে সুকুমার রায়ের সঙ্গে পুজোর সম্পর্ক রয়েছে। আবোল তাবোল আদলে বাচ্চাদের কাছে যেমন হাসির তেমন বড়দের কাছে প্রাসঙ্গিক। সব প্রজন্মের কাছেই ভালো লাগবে এই পুজো মণ্ডপ। প্রতিমার মধ্যেও এই গোটা থিমের ছাপ থাকবে।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর উৎসাহে এবার বার্সেলোনাতেও ধুমধাম করে দুর্গোৎসব
দুর্গা পুজোর থিমে এমন ভাবনা দর্শনার্থীদের টানবে বলেই আশা করছেন পুজো উদ্যোক্তারা ৷ মায়ের দর্শনের সঙ্গে ছোটবেলার সেই স্মৃতিতে ফিরে যেতে ভালো লাগবে সকলের ৷