কলকাতা, 19 ডিসেম্বর: কলেজ ছাত্রীর রহস্যমৃত্যুকে (Student Dies By Suicide) ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল নাকতলায় । পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গতকাল বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ দেখার পর নিজের ঘরে ঘুমোতে চলে যান 19 বছরের ওই ছাত্রী (Lady Brabourne College Student)। এরপরে আজ সকালে তাঁকে ডাকাডাকি করার পরেও সাড়া না মেলায় তাঁদের সন্দেহ হয় ৷ দরজা ভেঙে তাঁরা দেখতে পান বি.এ. প্রথম বর্ষের ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ (Suicide in Kolkata)। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে দেহটি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও ততক্ষণে সব শেষ । চিকিৎসকরা ওই ছাত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ।
লালবাজার সূত্রে খবর, ওই কলেজ ছাত্রীর নাম রৌনা আহমেদ । তিনি লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের বি.এ. প্রথম বর্ষের ছাত্রী । ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বেশ কিছু ডায়েরি উদ্ধার করেছে । তদন্তকারী আধিকারিকদের মতে, এটি আত্মহত্যার ঘটনা । তবে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে । ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট আসার পরেই মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে জানা যাবে ।
ঘটনার তদন্তে নেমে নেতাজি নগর থানার পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছেন । তদন্তকারীরা প্রাথমিকভাবে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছেন, দীর্ঘদিন ধরেই ওই ছাত্রী মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন । পরিবারের বাইরে সেই ভাবে কারও সঙ্গে মেলামেশাও বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি । পরিবারের সদস্যরা তদন্তকারী আধিকারিকদের জানিয়েছেন যে, গতকাল রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্ত পরিবারের সব সদস্যের সঙ্গে ফুটবল বিশ্বকাপ দেখেন ওই ছাত্রী । এরপরই তিনি রাতের খাবার খাওয়ার পর নিজের ঘরে ঘুমোতে চলে যান ।
মৃতার মা তদন্তকারীদের জানিয়েছেন যে, তিনি যখন আজ সকালে তাঁর মেয়েকে ডাকাডাকি করেন, তখন ঘর থেকে কোনও সাড়াশব্দ মেলেনি । এমনকী ওই ছাত্রীকে বারংবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি । এরপরই সন্দেহ হওয়াতে তাঁরা দরজা ধাক্কা দিয়ে ভেঙে ফেলেন । দরজা ভাঙতেই তাঁরা লক্ষ্য করেন, তাঁদের মেয়ে ঘরের সিলিং ফ্যানে গলায় ওড়না জড়িয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে ।
আরও পড়ুন: ঘুষের জন্য পুলিশের চাপ, আত্মঘাতী গঙ্গারামপুরের ব্যবসায়ী
তদন্তে নেমে ওই ছাত্রীর ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া ডাইরিগুলি পড়ে প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, রৌনা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন এবং তাঁর প্রতিটি কথা সেই ডায়েরিতে তিনি উল্লেখ করেছেন । পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ডায়েরিতে ছাত্রীটি লিখেছিলেন যে, তাঁকে কেউ ভালোবাসে না ৷ তিনি কোনও কাজ সঠিকভাবে করতে পারছেন না ৷ তাঁর জীবনে কিছুই হচ্ছে না ।
যদিও এই ঘটনার নেপথ্যে কোন প্রেমঘটিত বিষয় রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা । ইতিমধ্যেই মৃতার মোবাইল ফোন এবং ইমেইল আইডি ঘেঁটে দেখা শুরু করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা । এই বিষয়ে ওই ছাত্রের বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গেও কথা বলে পুলিশ জানতে চাইবে যে কতদিন ধরে ওই ছাত্রী মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ৷ তিনি কোনও প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন কি না, তাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ ৷