কলকাতা, 9 সেপ্টেম্বর : পয়লা জুলাই থেকে সিঁথি থানা এলাকায় একের পর এক চুরি। পরপর চারটি চুরির ঘটনা । সেই ঘটনায় রীতিমতো অন্ধকারে ছিলেন তদন্তকারীরা। কারণ সিসিটিভি ফুটেজ এবং নির্দিষ্ট সোর্স মারফত চোরের ব্যাপারে কোন তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না । পরে চুরি যাওয়া একটি মোবাইলের মাধ্যমে পাওয়া যায় সূত্র। আর সেই সূত্র থেকেই গিরিশ পার্ক থানা এলাকার এক রেডলাইট এরিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হল অভিযুক্তকে।
বেলগাছিয়ার তাপস দে । বয়স 25 বছর । থাকে কুন্ডু লেনে । চুরিতে তুখোড় । ছোট বয়স থেকেই হাতসাফাইয়ে ওস্তাদ । চুরি “মহাবিদ্যায়" সাফল্যের সঙ্গে চলছিল কাজ । তাঁর সামনে পুলিশও ধোকা খাচ্ছিল বারবার । লেক টাউন, কালিন্দী, বাগুইআটি, সিঁথি, চিৎপুর, টালা- কলকাতার বিভিন্ন অংশে তার চুরির সাম্রাজ্য । চুরি করে কোন রকম ক্লু ছাড়াই পগার পার হয়ে যেত সে । হয়তোবা ধরা সম্ভব হতো না । যদিও রোজ রাতে পতিতালয়ে যাওয়ার অভ্যাস থাকতো তাঁর । 25 বছরের ওই চোরের পছন্দ ছিল আবার একটু বেশি বয়সের দেহ ব্যবসায়ী । তাই সোনাগাছিতে না গিয়ে তার যাতায়াত ছিল, রাম বাগান রেডলাইট এলাকায়। আর সেই সূত্র ধরেই তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হল।
সিঁথির মোড়ে একটি চুরির ঘটনায় সে'ই নিয়ে যায় মোবাইল ফোন। পুলিশ নানা সূত্রে চেষ্টা করেও যখন ব্যর্থ হয়, তখন তদন্তের শিবরাত্রির সলতে হয়ে দাঁড়ায় সেই মোবাইল । সেটির দিকে নজর রাখতে শুরু করে পুলিশ। দিন কয়েক পরে সেই মোবাইল ফোন অন করা হয়। ঢোকানো হয় নতুন সিম । দেখা যায় সেটি হাওড়ার শ্যামপুরে রয়েছে । পুলিশ পৌঁছায় সেখানে । সেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করছিলেন এক মহিলা। তাঁর কাছেই পুলিশ জানতে পারে রোজ পতিতালয়ে যাওয়ার অভ্যাস রয়েছে চোরের । সেইমতো সোনাগাছি এবং রাম বাগানে নজরদারি চালানো হচ্ছিল । অবশেষে গত রাতে রাম বাগান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাপসকে । তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে একগুচ্ছ চুরির ঘটনার কিনারা করেছে পুলিশ ।
লালবাজারের অ্যান্টি বার্গলারি সেকশনের কর্তারা জেনেছেন, সিঁথি এলাকায় গত 6 অগাস্ট যে চুরির ঘটনা ঘটেছিল তার পেছনেও ছিল তাপস । গতবছর শিবপুর থানা একটি এবং টালা থানার দু'টি চুরির ঘটনার পিছনেও তার হাত ছিল । তাঁর কাছে থেকে উদ্ধার হয়েছে কিছু নগদ টাকা, সোনার গয়না, দুটো ল্যাপটপ।