কলকাতা, ২১ ফেব্রুয়ারি : নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে ব্যবসা করা চলবে না। গুমনামি বাবার নাম করে দীর্ঘদিন ধরে নানা গুজব চলছে দেশজুড়ে। আজ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবারের সদস্য চন্দ্র বসু একথা বলেন। তিনি জানান, ৭২ বছর ধরে কংগ্রেস সরকার কেন্দ্রে ছিল। তারা সব নথি গোপন করে রেখেছিল। কিছু নষ্ট করেও ফেলেছে।
আজ কলকাতায় এক সাংবাদিক বৈঠকে চন্দ্র বসু অভিযোগ করেন, নেতাজির মতো প্রবাদপ্রতিম নেতার ভাবমূর্তি এবং কর্মকাণ্ডকে কালিমালিপ্ত করেছে কিছু অসাধু মানুষ। এই প্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আবেদন জানান তিনি।
তিনি জানান, বেশ কিছুদিন ধরে এই কুরুচিপূর্ণ প্রচার চালাচ্ছেন 'মিশন নেতাজি' নামে দিল্লির একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। যাকে ঘিরে এই কাহিনি, সেই "গুমনামি বাবা"-র সংগ্ৰহে ছিল নেতাজি সংক্রান্ত বিপুল জাল নথির সম্ভার। তিন দশক জুড়ে তিনি উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় বাস করেন। দেখা গেছে, যখনই প্রকৃত সত্য উদঘাটনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তখনই তিনি বাসস্থান পরিবর্তন করেছেন।
লোক চক্ষুর অন্তরালে, পরদার আড়ালে মুখ ঢেকে তিনি অযোধ্যার কাছে ফইজ়াবাদে একটি ভবনের বারমহলে অত্যন্ত সাধারণ জীবন অতিবাহিত করতেন। সম্ভবত ১৯৮৫ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। নির্দিষ্ট কোনও পরিচিতি বা পাসপোর্ট ছাড়াই তিনি নাকি দেশের বাইরে ও ভিতরে অনায়াসে যাতায়াত করেছেন। এই ব্যক্তিটির কোনও বিশ্বাসযোগ্য ছবিও পাওয়া যায় না বলেও অভিযোগ করেছেন চন্দ্র বসু। 'মিশন নেতাজি' তাদের বিভ্রান্তিকর, মিথ্যা বর্ণনায় দাবি করে চলেছেন ইনিই নেতাজি।
এই আষাঢ়ে গল্পের মূলে রয়েছে নেতাজির একটি ছবি। যার বিকৃতি ঘটিয়ে গুমনামি বাবার সঙ্গে মানানসই করে তোলা হয়। ফইজ়াবাদের বাসভবনের মালিকশক্তি সিংহ আছেন এই মিথ্যে কাহিনির অন্যতম প্রধান রচয়িতা বলে অভিযোগ করেন চন্দ্র বসু।
এ প্রসঙ্গে ২০০৫ সালে মুখার্জি কমিশন DNA এবং ফরেনসিক পরীক্ষার ভিত্তিতে মতামত দেয় যে, গুমনামি বাবা এবং নেতাজির মধ্যে কোনও সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায় না।
বসু পরিবারের মূল দাবি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ব্যক্তিত্বে কালিমা লেপন অবিলম্বে বন্ধ হোক। দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার হাতে গুমনামি বাবার কোনও নথি নেই বলে জানিয়েছেন চন্দ্র বসু। সমগ্র বিষয় নিয়ে তিনি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে চিঠি দিয়েছেন।