কলকাতা, 19 জুন: মনোনয়ন জমা দেওয়াকে ঘিরে দক্ষিণ 24 পরগনা ভাঙড়, ক্যানিং-সহ একাধিক জায়গায় ব্যাপক গুলি, বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে। এখন আবার শাসকদলের বিরুদ্ধে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য বিরোধীদের বাড়িতে চড়াও হয়ে হুমকি, মারধর করার অভিযোগ উঠছে। এই মর্মে অভিযোগ তুলে বিজেপি প্রার্থীদের নিয়ে রাজ্যপালের দরবারে হাজির হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷
সোমবার দক্ষিণ 24 পরগনার 30 জন বিজেপি প্রার্থীকে নিয়ে বিকেলে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে রাজ ভবন থেকে বের হতে দেখা যায় তাদের। ওই বৈঠকে 30 জন বিজেপি কর্মীর অভিযোগ শুনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে রাজ্যপাল আশ্বাস দিয়েছেন বলে দাবি সুকান্তর। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "দক্ষিণ 24 পরগনা-সহ রাজ্যের একাধিক জেলায় বিজেপি প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছে তৃণমূল। তাদের মধ্যে জেলার 30 জন বিজেপি প্রার্থীকে নিয়ে আমরা রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। তাদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত অভিযোগ জানানো হয়েছে রাজ্যপালের কাছে।"
সুকান্তর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ঝড়খালির 251 নম্বর বুথের বিজেপি প্রার্থী সর্বাণী মণ্ডল। তাঁকে দেখিয়ে সুকান্ত মজুমদার আরও বলেন, "আমার পাশে দাঁড়ানো আমাদের এই কর্মীর আশি বছরে বেশি বয়সি শাশুড়ির উপর অত্যাচার করতে ছাড়েনি তৃণমূল কংগ্রেস। ছেলেমেয়ে, স্বামীদের প্রতিনিয়ত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মারধর করে ভয় দেখিয়ে মনোনয়নে বাধা দিয়েও কাজ হয়নি, এখন উত্তরের জন্য জোর করে চাপ দিচ্ছে। এই সমস্ত বিষয়ে রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। দেড় ঘণ্টা ধরে প্রত্যেকের অভিযোগের কথা শুনেছেন রাজ্যপাল। অভিযোগের কথা প্রত্যেককে বিস্তারিত লিখে জমা দেয়ার কথা বলেছেন। সেটা করা হয়েছে।"
আরও পড়ুন: 'যেভাবে সঠিক মনে হবে, সেভাবেই কাজ করব', ঝাঁঝালো সুর আনন্দ বোসের গলায়
রাজ্য বিজেপি সভাপতির দাবি, এই অভিযোগগুলি রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীবা সিনহা এবং রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে পাঠানো হবে বলেই রাজ্যপাল জানিয়েছেন। একইসঙ্গে এই আক্রান্তদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন রাজ্যপাল। ঝড়খালির 251 নম্বর বুথের বিজেপি প্রার্থী সর্বাণী মণ্ডল বলেন, "2021-এর ভোটে আমাদের ঘরছাড়া করা হয়েছিল। মারধর করা হয়েছিল স্বামী সন্তানদের। তারপরও আমরা হাল ছাড়িনি। এবারের ভোটেও আমাদের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছে ৷ প্রতি মুহূর্তে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বাড়িতে সাদা থান পাঠানো হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে । কিন্তু সব হারিয়েও আমরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করব না। সে কথা জানাতে এবং আমাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে রাজ্যপালের কাছে এসেছিলাম।"