কলকাতা, 13 এপ্রিল: প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সোমবার থেকে শহরের একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে 'সারপ্রাইজ ভিজিট' করছেন রাজ্যপাল বোস । কলকাতা, যাদবপুর, বারাসত বিশ্ববিদ্যালয়ের পর বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে যান তিনি ৷ সেখানেই অধ্যক্ষ, শিক্ষকদের পাশাপাশি পড়ুয়াদের সঙ্গেও আলোচনায় বসেন রাজ্যপাল ৷ জাতীয় নয়া শিক্ষানীতির পাশাপাশি হিন্দু হস্টেল-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক বিষয় নিয়ে রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের কাছে ডেপুটেশনও জমা দেন পড়ুয়ারা ৷
এদিন প্রেসিডেন্সির ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে বেশ দীর্ঘ সময় কথা বলতে দেখা যায় রাজ্যপালকে ৷ হিন্দু হস্টেল, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, জাতীয় নয়া শিক্ষানীতি, ছাত্র ভোট-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আচার্য এবং পড়ুয়া দু'পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে খবর । প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং এসএফআই রাজ্য সহ-সম্পাদক শুভজিৎ সরকার বলেন, "প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে আচার্য্য রাজ্যের রাজ্যপাল এসেছিলেন । তখন এসএফআইয়ের তরফে রাজ্যপালের সামনে জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে এবং অবিলম্বে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো হয় ৷ মিছিলও হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ।"
পাশাপাশি এসএফআইয়ের দাবি, রাজ্যপাল জাতীয় শিক্ষানীতির প্রয়োগ নিয়েই মূলত কথা বলতে এসেছিলেন । শুভজিৎ সরকার বলেন, "আমরা দাবি করেছি যে, আমাদের সঙ্গে আলোচনা না-করে প্রেসিডেন্সিতে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রয়োগ করা যাবে না । অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অর্থ বরাদ্দ বাড়াতে হবে ৷" এদিন ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও জাতীয় শিক্ষানীতি প্রয়োগের বিরুদ্ধে আচার্যের কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হয় এসএফআইয়ের তরফে। পাশাপাশি তাদের দাবি, বিক্ষোভের পর এসএফআইয়ের সেই দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন রাজ্যপাল ৷ এদিন এসএফআইয়ের প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের পক্ষ থেকে রাজ্যপালকে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে মূলত তিনটি ইস্যুতে।
দলের তরফে দাবি করা হয়েছে, কোনওভাবেই জাতীয় শিক্ষানীতি লাগু করা চলবে না ৷ পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলগুলির পরিকাঠামোগত উন্নতিও অবিলম্বে করতে হবে বলেও জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, ইন্ডিপেন্ডেন্টস কনসোলিডেশন (আইসি) তরফে উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলা হয়েছে। এদিন ক্যাম্পাসের পরিকাঠামোগত সমস্যা, চেয়ার প্রফেসরের পদ খালি, দিনের পর দিন শিক্ষক নিয়োগ না-হওয়া, ক্যাম্পাসে উপাচার্যের আমলে একের পর এক অধ্যাপকের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেড়ে চলে যাওয়া, উপাচার্যর অনিয়মিত উপস্থিতি, ছাত্রছাত্রীদের ফেলোশিপের অভাব, জাতীয় শিক্ষানীতির একতরফা রূপায়ণের মতো বিষয়গুলির দিকে আচার্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছে আইসি।
আরও পড়ুন: বিচারপতির আসনের অপব্যবহার করে রাজনীতি, কুণালের নিশানায় কি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় !
অন্যদিকে কার্যত হুমকি দিয়ে আইসির তরফে জানানো হয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বন্ধ না হলে, কোনও ঠান্ডা হলে নয়, এরপর হলের বাইরে এসে প্রকাশ্যে সকলের সামনে রাজ্যপালকে ছাত্রছাত্রীদের কথা শুনতে হবে। প্রেসিডেন্সির ছাত্রছাত্রীদের দাবীদাওয়ার পক্ষে আইসির লড়াই চলবে বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তারা।