কলকাতা, 27 অক্টোবর : মেলালেন তিনি মেলালেন ৷ কালীপুজোর সন্ধ্যায় রাজ্যের দুই যুযুধান পক্ষ এক সঙ্গে ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷
রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক ইশুতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে মতবিরোধে জড়িয়েছেন ৷ বিতর্ক যত তীব্র হয়েছে, ততই রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে রাজ্যপালের দূরত্ব বেড়েছে ৷ এত বিতর্কের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে কালীপুজো এবং ভাইফোঁটায় যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন রাজ্যপাল ৷ রাজ্যপালের সেই সৌজন্যের পর তাঁর দিকে শুভেচ্ছার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীও৷ কালীপুজোয় তাঁর বাড়িতে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণও জানানো হয়েছিল ৷ সেই আমন্ত্রণ গ্রহণও করেন রাজ্যপাল ৷ সেই মতো আজ সস্ত্রীক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান রাজ্যপাল ৷ বেশ কিছুক্ষণ সেখানে ছিলেন তিনি ৷ পরে রাজ্যপাল বলেন, "এখানে এসে আমি অভিভূত ৷ যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী আপ্যায়ন করেছেন তাতে আমি খুবই খুশি ৷"
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কালীপুজো ঘিরে প্রতি বছরই একটা রমরমা ব্যাপার থাকে ৷ এই পুজোতে শুধু দলের মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়করা নন, আমন্ত্রিত থাকেন রাজ্য প্রশাসনের বহু শীর্ষকর্তা ৷ থাকেন বিরোধী নেতা-নেত্রীরাও ৷ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সমনের উঠোনে একাধিক চেয়ার পাতা থাকে, সেখানেই মূলত সবাই বসে গল্প, আলোচনা করেন ৷ পুজোর কাজের রক্ষণাবেক্ষণের মাঝেমধ্যে মমতাও যোগ দেন সেই গল্পের আসরে ৷ কোনও রাজনৈতিক আলোচনা নয়, নিছক সৌজন্যের বাতাবরণ তৈরি হয় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ৷
প্রতি বছরের মতো এবারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে আয়োজন করা হয় পুজোর ৷ প্রতিবারের মতো এবারও সকাল থেকে উপোষ করে ছিলেন মমতা ৷ উপোষ ছিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ৷ রীতিমতো রীতি মেনে সকাল থেকেই চলে পুজোর প্রস্তুতি ৷ প্রথম থেকেই খবর ছিল রাজ্যপাল আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ৷ আমন্ত্রণ গ্রহণ করে সন্ধ্যা 6টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে আসেন রাজ্যপাল ৷ বেশ কিছুক্ষণ সেখানে কাটান ৷
মমতার বাড়িতে এসে রাজ্যপাল প্রথমে চলে আসেন পুজোর সামনে৷ তখন পুজো প্রস্তুতিতে ব্যাস্ত সুজিত বসু থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সকলে ৷ ছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও ৷ বেশ কিছুক্ষণ সেখানে থেকে ফিরে আসেন রাজ্যপাল ৷
রাজনৈতিক মহলের মতে, যে চাপানউতোর মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালের মধ্যে তৈরি হয়েছিল, আজ কালীপুজোয় শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে কিছুটা হলেও হালকা হল পরিবেশ ৷