কলকাতা, ১৩ মার্চ : আন্দোলনকে আরও জোরদার করতে সোমবার থেকেই রিলে অনশনের বদলে টানা অনশন শুরু করেছেন ক্লাস নাইন থেকে টুয়েলভের ওয়েটিং লিস্টে থাকা SSC চাকরিপ্রার্থীরা। অনশনের জেরে ইতিমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন চারজন। এর আগে রিলে অনশন চলাকালীন মঞ্চেই গর্ভপাত হয় দু'মাসের অন্তঃসত্ত্বার। ১৪ দিন ধরে চলতে থাকা এই অনশনে এখনও পর্যন্ত ৫১জন অসুস্থ হয়েছেন। তবে এই পরিস্থিতিতেও অনশন চালিয়ে যেতে চান চাকরিপ্রার্থীরা।
অর্পিতা দাস নামে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, “চারজন খুব অসুস্থ। তার মধ্যে একজন পেটে ব্যথা নিয়ে SSKM হাসপাতালে ভরতি। আরেক জনের জ্বর এসেছে। তিনিও SSKM-এ রয়েছেন। এছাড়া আমাদের কারও লো প্রেশার, কেউ আবার হাই প্রেশার নিয়ে এখানে টানা অনশনে বসে রয়েছেন। একজনকে দু'বার হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। তিনি একবার সকালে অসুস্থ হয়েছিলেন। তখন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক ট্রিটমেন্টের পর তাঁকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু, এখানে আসার পর তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে আবার আমরা হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই।”
এক অনশনকারী আবার বলেন, “আগে আমরা ভগবানের জন্য উপোস করতাম। যাতে সংসার সুষ্ঠুভাবে চলে। আর এখন SSC-টা যাতে সুষ্ঠুভাবে চলে তার জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছি অনশন করে।" তাঁদের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “আমরা আচার্য সদনে SSC-র চেয়ারম্যানের কাছে ডেপুটেশন জমা দিতে গেছিলাম। উনি অফিসে না থাকায় দেখা হয়নি। এখন বিভিন্ন বুদ্ধিজীবীদের আমাদের মঞ্চে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। বুদ্ধিজীবী মহল ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে আমাদের সমস্যা ছড়িয়ে দেওয়াই লক্ষ্য।" আজ আবার চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
লাগু হয়েছে নির্বাচনী আচরণবিধি। আর তার মধ্যে এই আন্দোলনের দাবি কি যুক্তিসঙ্গত ? অর্পিতা দাস বলেন, “আমাদের আন্দোলন যুক্তিসঙ্গত। কেন না আমাদের প্রসেসিংটা ২০১৬ সাল থেকে শুরু হয়েছে। গেজেট নোটিফিকেশনের সঙ্গে আমাদের নোটিফিকেশন সব ২০১৬ সালের। নির্বাচন শুরু হল, তার আগে রাজ্য সরকার নোটিফিকেশন দিয়েছে এটা তো নয়। তাই আমাদের সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা এটা চালিয়ে যাব।”
অনশনকারী SSC প্রার্থীদের প্রথম থেকে একটাই দাবি। তা হল, ভ্যাকেন্সি আপডেট করে অনশনকারীদের চাকরি সুনিশ্চিত করতে হবে। তৃতীয় কাউন্সেলিংয়ে শূন্যপদ আপডেটের সম্ভাবনা রয়েছে কি না সে প্রসঙ্গে SSC-র চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার বলেন, “আমি বলতে পারছি না। কারণ, যতক্ষণ না পর্যন্ত স্কুল শিক্ষা দপ্তর থেকে চেয়ারম্যানের কাছে কোনও অ্যাপ্রুভ লিস্ট এবং নির্দেশ আসছে, তার আগে আমি কিছু করতে পারি না।”