কলকাতা, 21মে: করোনা নাস্তানাবুদ করেছে সারা বিশ্বকে ৷ এবার সেই করোনা নিয়ে গবেষণায় এক 94 বছর বয়সী মহিলার দেহদান করল তাঁর পরিবার । ভারতে একজন মহিলা হিসেবে জ্যোৎস্না বসুরই দেহ প্রথম দান করা হল । 17 মে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
এই ভাইরাস কীভাবে মানুষের শরীরে বাসা বাঁধে, কি ধরণের ক্ষতি হতে পারে এই সব খুঁটিনাটি নিয়ে গবেষণার জন্য জ্যোৎস্নাদেবীর ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিয়েই তাঁর বাড়ির লোক আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে দান করেছেন তাঁর মরদেহ। জানা গিয়েছে জ্যোৎস্নাদেবী ট্রেড ইউনিয়ন লিডার ছিলেন।
মে মাসের 14 তারিখ তিনি কোভিডে আক্রান্ত হয়ে বেলেঘাটার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন 16 মে ৷ এরপর 17 মে তাঁর মরদেহ গবেষণার কাজে দান করা হয়। ইতিমধ্যেই মরদেহের প্যাথলজিক্যাল অটোপসি করা হয়েছে।
জ্যোৎস্নাদেবীর বড় নাতনি রঞ্জিনি বসু বলেন যে, “দিদার মৃত্যুর পর আমরা গণদর্পনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কারণ করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজন মৃতার দেহদানের যে পদ্ধতি, তা আমাদের কাছে পরিষ্কার ছিল না। আজ থেকে 10 বছর আগেই গণদর্পনের মাধ্যমে আমার দিদা নিজের দেহদান করেছিলেন । তাই গত 17 মে গণদর্পণ-এর মাধ্যমেই আমরা আরজিকর কলেজ ও হাসপাতালের হাতে তুলে দিই আমাদের দিদার মরদেহ। আগাগোড়াই তিনি খুব লড়াকু মনের মানুষ ছিলেন। কর্মসূত্রে তিনি পোস্ট অ্যান্ড টেলিগ্রাফ বিভাগের কর্মচারী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।"
তিনি আরও বলেন , "আমি মনে করি যদি কোভিড গবেষণায় কেউ নিজের দেহ দান করতে চান এবং কোনও ব্যক্তির যদি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়, তাহলে কীভাবে দেহ দান করতে হয় কোথায় যোগাযোগ করতে হয় এই বিষয়গুলি সাধারণ মানুষের কাছে তেমন একটা স্পষ্ট নয়। তাই এই বিষয়গুলি নিয়ে আরও আলোচনা করে এই পদ্ধতিটি জনসাধারণের সামনে তুলে ধরা প্রয়োজন।"
আরও পড়ুন : যশ মোকাবিলায় অপ্রয়োজনীয় কেবিলের তার সরিয়ে ফেলার নির্দেশ কলকাতা পৌর নিগমের
এখনও পর্যন্ত কলকাতা থেকে তিনজন এই কাজে নিজেদের দেহ দান করে গিয়েছেন। সম্প্রতি মারা গিয়েছেন গণদর্পনের ব্রজ রায়। মৃত্যুর সময় তাঁর ইচ্ছানুসারে এই কাজের জন্য তিনি দান করে গিয়েছেন নিজের দেহ। তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এছাড়াও চিকিৎসক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীর দেহ দান করা হয়েছে করোনা গবেষণার কাজে ।