কলকাতা, 28 সেপ্টেম্বর: শহরজুড়ে একাধিক ফুড ডেলিভারি অ্যাপের (Food Delivery App) কর্মীরা রয়েছেন। তাদের মধ্যে এক ফুড ডেলিভারি সংস্থার যুবকরা তাঁদের দাবি পূরণ না-হওয়া পর্যন্ত কোনওরকমভাবেই কাজ করবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন। বুধবার ও বৃহস্পতিবারও তপসিয়া থানার কাঁটাপুকুর থেকে হাজরা হয়ে কালীঘাটের উদ্দেশ্যে তাঁরা বাইক মিছিল করেন (Food Delivery Boys)।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সাজিদ হোসেন বলেন, "এই ফুড ডেলিভারি সংস্থার আগে যা নাম ছিল তা পরিবর্তন হয় ৷ কারণ অন্য একটি ফুড ডেলিভারি সংস্থার হস্তান্তরে চলে যাওয়ার কারণে ৷ উৎসবের মরশুমে অর্ডার প্রতি ইনকাম এক ধাক্কায় কোম্পানি কমিয়ে 50 টাকা থেকে 20 টাকা করে দিয়েছে। আগে 20টা অর্ডার ডেলিভারি করলে কোম্পানি ইনসেনটিভ দিত 850 টাকা এখন সেটা কমিয়ে করেছে 700 টাকা ৷ গাড়ির তেল ও মেনটেনেন্স খরচ ধরলে কিলোমিটার প্রতি যেখানে 3-4 টাকা খরচ হয়, সেখানে 5 কিলোমিটার যাওয়া-আসার জন্য 20 টাকা কী হিসাবে দেয় কোম্পানি ? পার্সেল প্রতি ডেলিভারি করে 50 টাকা পাওয়া গেলে তেলের খরচ বাদ না-দিয়ে প্রতিদিন 500 টাকার কাছাকাছি উপার্জন হয় ৷ নতুন নিয়মে সেটা একধাক্কায় কমে দৈনিক 200 টাকায় নেমে আসবে। সমস্ত দ্রব্যের দাম যখন বাড়ছে, ডেলিভারি বয়দের মেহনতের দাম আরও কমছে।"
বৃহস্পতিবার হাজরা মোড় পেরোতেই কলকাতা পুলিশ তাঁদের আটকায়। সেখানেই দীর্ঘক্ষণ অবস্থান বিক্ষোভের পরে তাঁদের দাবি-দাওয়ার স্মারকলিপি কালীঘাট থানার মারফত লেবার ডিপার্টমেন্ট (Labour Department) ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে পাঠানো হয়েছে ৷ ফুড ডেলিভারি সংস্থার যুবকদের সংগঠন ডেলিভারি ভয়েসের তরফে সৌম্য চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইটিভি ভারতকে বলেন, "আমাদের দাবি পূরণ না-হওয়া পর্যন্ত সংস্থার কোনও কর্মচারী কলকাতায় কাজ করবে না। ফলে গতকাল থেকে চলা ধর্মঘট আগামিদিনে সুদূরপ্রসারী হবে। কোম্পানি যদি রাতারাতি বা আগামী দু'দিনের মধ্যে আমাদের দাবি সম্পূর্ণরূপে মেনে নেয়, তাহলে ডেলিভারি বয়রা পুনরায় কাজ শুরু করবে। অন্যথা ধর্মঘট চলবেই।"
আরও পড়ুন: মুসলিম ডেলিভারি বয় পাঠাবেন না, ফুড অ্যাপকে ক্রেতার আর্জি ঘিরে বিতর্ক
উল্লেখ্য, বুধবার তপশিয়ার কাঁটাপুকুর থেকে প্রায় এক-দেড়শো কর্মচারী বিক্ষোভ মিছিলে সামিল হনে ৷ তপসিয়া থেকে গরিয়াহাট, বেহালা, জোকা হয়ে লেকটাউনে তাঁদের বিক্ষোভ মিছিল শেষ হয়। লেকটাউনের এক অফিসে ওই ফুড ডেলিভারি সংস্থার উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বিক্ষোভরত কর্মচারীদের বৈঠক হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রফা সূত্র বের হয়নি বলেই খবর। উল্লেখ্য, কলকাতা শহর, শহরলাগোয়া এবং অন্যান্য পৌর এলাকায় এই ফুড ডেলিভারি সংস্থার 30টি কেন্দ্র রয়েছে।