কলকাতা, 14 ডিসেম্বর: বগটুই গণহত্যার মূল পাণ্ডা লাল শেখের সিবিআই হেফাজতে মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। আর এমন পরিস্থিতিতেই বিস্ফোরক দাবি করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম। এদিন লালন শেখের রহস্য মৃত্যু প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, সিবিআই, সিআরপিএফ'কে দিয়ে পিটিয়ে খুন করেছে লালনকে (Lalan Sheikh Death)।
লালন শেখের মৃত্যুর (Lalan Sheikh Death) খবর গ্রামে পৌঁছতেই পরিবার ও তৃণমূলের একাংশ সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবির ঘিরে বিক্ষোভ দেখতে থাকেন। খুনের অভিযোগ তোলেন পরিবারের লোকজন। মৃত্যুর কারণ নিয়ে সিআইডি (CID) তদন্তের দাবি জানান। যখন এই ঘটনা ঘিরে উত্তপ্ত বীরভূম থেকে সমগ্র রাজ্য রাজনীতি তখন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) সরাসরি আক্রমণ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে।
বুধবার ফিরহাদ হাকিম বলেন, "সিবিআই খুন করেছে লালন শেখকে। সিআরপিএফ'কে দিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। মানবাধিকার কমিশনের উচিৎ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। একটা বিচারাধীন বন্দিকে এভাবে মারা যায় না। মৃতের স্ত্রী সব বলেছেন। আমি যেগুলো বলছি অভিযোগ পত্রে সব রয়েছে।"
বগটুই-কাণ্ডে প্রথম থেকেই সক্রিয় ছিল সিবিআই। এই ঘটনায় একাধিক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলেও মূল অভিযুক্ত লালন শেখের নাগাল পাচ্ছিল না। প্রায় 7 মাস ফেরার থাকার পর গত 4 ডিসেম্বর বিহার থেকে লালনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তবে সমগ্র পরিস্থিতি বদলে যায় এই লালনের সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন মৃত্যুর ঘটনায়। 12 ডিসেম্বর জেলের শৌচালয় থেকে লালনের দেহ উদ্ধার হয়।
আরও পড়ুন: সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নয়, লালনের দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের 21 মার্চ মাসে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ 30টি বোমা মেরে খুন করা হয় এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখকে ৷ তিনি ছিলেন বগটুইয়ের বাসিন্দা ৷ তারপরই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠে বগটুই গ্রাম। সেই খুনের বদলা নিতেই পালটা হামলা চালানো হয় ৷ রাতের অন্ধকারে গ্রামের একাধিক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় ৷ মহিলা, শিশু-সহ 8 জনকে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে । রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান আরও 2 জন। তাঁদের মধ্যে 7 জন একই পরিবারের সদস্য ছিলেন ৷ ঘটনার পর হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার দেওয়া হয় কেদ্রীয় সংস্থা সিবিআই'কে।