কলকাতা, 16 সেপ্টেম্বর: দুই কাউন্সিলরের হাতাহাতিতে উত্তাল হয়ে উঠল কলকাতা পৌরনিগমের মাসিক অধিবেশন ৷ চেয়ারপার্সন মালা রায় এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্যের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে ঝামেলা শুরু হয় ৷ যেখানে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ এবং তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু একে অপরের গায়ে হাত তোলেন বলে অভিযোগ ৷ এই ঘটনার জেরে সাময়িকভাবে কেএমসি-র মাসিক অধিবেশন মুলতুবি করে দেন চেয়ারপার্সন মালা রায় ৷ পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের অধিবেশন শুরু হয়েছে ৷
এ দিনের এই ঝামেলার সূত্রপাত হয়, চেয়ারপার্সন মালা রায়ের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ৷ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধীদের তরফে কোনও প্রশ্ন, এমনকি প্রস্তাব কিছুই রাখা হয়নি ৷ যা নিয়ে চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘আশ্চর্য বিরোধী পক্ষের অধিবেশনে কোনও প্রশ্ন নেই !’’ যার জবাবে পালটা মেয়র ফিরহাদ হাকিম কিছুটা ব্যঙ্গের সুরেই বলেন, ‘‘বিরোধী বেঞ্চের এমনই অবস্থা যে, আমাদের কাউন্সিলরদের সেখানে বসিয়ে প্রশ্ন করাতে হচ্ছে ৷’’ অভিযোগ এর পরেই পরিস্থিতি সরগরম হয়ে ওঠে ৷
মেয়র এবং চেয়ারপার্সনের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন, 50 নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ ৷ তিনি চেয়ারপার্সনের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, ‘‘প্রশ্ন বা প্রস্তাব রেখে কী হবে ? এখানে বিরোধীদের কথার কোনও গুরুত্ব আছে ?’’ যার জবাবে কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়েই চেয়ারপার্সন মালা রায় বলেন, ‘‘আপনি আমাকে বিরোধিতা শেখাবেন না ৷ ওই বিরোধী চেয়ারে আমিও বসেছি ৷ সেখানে বসে কীভাবে কাজ করতে হয় জানি ৷ আপনার থেকে সেটা শিখব না ৷’’
এর পরেই সজল ঘোষ প্রতিবাদে সরব হন ৷ তিনি অধিবেশন কক্ষে চেয়ারপার্সনের মন্তব্যের প্রতিবাদে সরব হন ৷ অভিযোগ তখনই 70 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু উঠে আসেন এবং সজল ঘোষের দিকে তেড়ে যান ৷ পালটা সজল ঘোষও মারমুখী হয়ে ওঠেন ৷ অভিযোগ তাঁরা দু’জনেরই একে অপরের গায়ে হাত তোলেন ৷ তখন বিজেপির আরেক কাউন্সিলর বিজয় ওঝাও তেড়ে যান ৷ আশেপাশ থেকে তৃণমূলের অন্যান্য কাউন্সিলরদের কয়েকজন তেড়ে যান ৷
আরও পড়ুন: বিজেপি-তৃণমূল কাউন্সিলরদের বচসা, কলকাতা কর্পোরেশনে হাতাহাতি
পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, আসরে নামতে হয় মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে ৷ তাঁর সঙ্গে দেবাশিস কুমার এবং বরো চেয়ারম্যান সুদীপ কোল্লে দু’পক্ষকে আলাদা করেন ৷ ততক্ষণে সজল ঘোষ আবার চেয়ারপার্সনের আসনের কাছে গিয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন ৷ চেয়ারপার্সন সকলকে শান্ত হতে অনুরোধ করেন ৷ কিন্তু, কেউ তাঁর কথা কর্ণপাত না করায়, সাময়িকভাবে অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা করেন মালা রায় ৷ পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের অধিবেশন শুরু হয় ৷