কলকাতা, 13 এপ্রিল: খাস কলকাতায় ফের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ৷ অগ্নিদগ্ধ হয়ে বাবা ও বড় ছেলের মৃত্যু । কোনওরকমে প্রাণে বাঁচল ছোট ছেলে ।বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে তিলজলা থানা এলাকায় একটি ছাপাখানায় । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের দুটি ইঞ্জিন । এসে পৌঁছয় পুলিশও ৷ দমকলের আধিকারিকরা এসে কোনওরকমে ছোট ছেলেকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করেন ৷ তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজে ভরতি করা হয়েছে ।
আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি ৷ কিছুক্ষণের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন দমকল কর্মীরা ৷ কারখানার ভিতরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে বাবা ও ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে । বাবা মহম্মদ জসিম এবং বড় ছেলে মহম্মদ আমিরের প্রাণ গিয়েছে । ঠিক কীভাবে আগুন লাগল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে । তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও তিলজলা এলাকায় একাধিকবার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে । তাতে ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে বিস্তর । এবার তিলজলার ছাপখানায় আগুন লেগে প্রাণ গেল বাবা ও ছেলের ।
জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো বুধবারও এলাকার একটি ছাপাখানায় কাজ করছিলেন মহম্মদ জসিম । বাবাকে সাহায্য করার জন্য কারখানায় ছিলেন তাঁর বড় ছেলে মহম্মদ আমির ও পনেরো বছরের ছোট ছেলে । এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, রাতে কাজ করতে করতে সংশ্লিষ্ট কারখানাতেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বাবা এবং দুই ছেলে । সেখান থেকেই এদিন সকালবেলা এলাকার লোকজন প্রচুর পরিমাণে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখেন । আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে বন্ধ থাকা শাটার ভেঙে বাবা এবং দুই ছেলেকে বার করার চেষ্টা করেন ৷ কিন্তু ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে মুহূর্তের মধ্যে গোটা কারখানা আগুনের লেলিহান শিখার গ্রাস চলে আসে । ফলে তারা ব্যর্থ হন ৷
দমকল কর্মীরা কোনওরকমে তিলজলা থানার পুলিশ ও কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর আধিকারিকরা কারখানার একটিমাত্র শাটার ভেঙে ভিতরে ঢোকেন ৷ ভিতরে গিয়ে তারা দেখতে পান বাবা মহম্মদ জসিম অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এবং সঙ্গে পড়ে রয়েছেন তাঁর বড় ছেলে মহম্মদ আমির । দমকল কর্মীরা ছোট ছেলেকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে এবং সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে । সেখানে ওই 15 বছরের কিশোরের চিকিৎসা চলছে ।
সূত্রের খবর, ওই কারখানায় মূলত জুতো প্রিন্টিংয়ের কাজ হত । ছাপাখানা হওয়ায় মজুদ থাকত একাধিক দাহ্য পদার্থ । দমকল কর্মীদের অনুমান, কারখানায় কাজ করার পর মশার কয়েল জ্বালানো হয়েছিল এবং সেই মশার কয়েল থেকেই আগুন বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের লেগে ঘটনাটি ঘটেছে । তবে সংশ্লিষ্ট কারখানায় অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা ছিল কি না সেই বিষয়ে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারেননি দমকল আধিকারিকরা । কারণ তিলজলার ওই ছাপাখানাটি অত্যন্ত ছোট্ট । গোটা বিষয়টি দমকল আধিকারিকরা খতিয়ে দেখছেন । ইতিমধ্যেই স্থানীয় তিলজলা থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ।
আরও পড়ুন: মশার ধূপের ফুলকি থেকে ভয়াবহ আগুন, গবাদি পশু-সহ ভস্মীভূত 10টি বাড়ি