কলকাতা, 8 এপ্রিল : জ্বালানির দামবৃদ্ধির ফলে পাল্লা দিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বেড়ে চলেছে শাকসবজি, ফল, মাছ, মাংসের দাম ৷ মূল্যবৃদ্ধির এই গতি বজায় থাকলে পরিস্থিতি হাতের নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা আমজনতার ৷ পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ফলে খাদ্যদ্রব্যের এই চড়া দাম নিয়ে চিন্তিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবারই নবান্নে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন ৷ কোথাও কোনও অসাধু ব্যবসায়ী অথবা ফঁড়েদের কারণে কৃত্রিমভাবে বাজার দর বেড়েছে কি না, তিনি তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চকে (ইবি)। মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশ পাওয়ার পরেই শুক্রবার সকাল থেকে মাঠে নামল ইবি (Enforcement Branch Raids) ৷
এদিন সকালে কলকাতার একাধিক বাজারে অভিযান চালায় এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ । শ্যামবাজার, হাতিবাগান, লেক মার্কেট-সহ শহরের উত্তর-দক্ষিণের একাধিক বাজারে হানা দেয় ইবি'র একাধিক দল ৷ এদিন এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা ব্যবসায়ীদের কাছে গিয়ে জানতে চান, কোন সবজির কত দর, কত দামে বিক্রি হচ্ছে ৷ শুধু সবজি নয়, মাছের দোকান, মুদিখানার দোকানেও হানা দেন তাঁরা ৷ কোন খাদ্যদ্রব্য কত দামে কেনা হয়েছে, কত দামে বিক্রি করা হয়েছে এদিন তা ব্যবসায়ীদের থেকে জানতে চান ইবি আধিকারিকরা ৷ দাম বেশি হলেই প্রশ্ন করেছেন, কেন এত দাম ? খাদ্যদ্রব্যের খুচরো ও পাইকারি দামের এদিন খোঁজ নেন তাঁরা ৷
আরও পড়ুন : ঝাড়খণ্ডের ঘূর্ণাবর্তে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই
বিক্রেতাদের দাবি, লাগাতার জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাঁদের গাড়ি ভাড়া বেড়েছে, মাল পরিবহণের খরচ বেড়েছে একধাক্কায় অনেকটাই ৷ তাঁদেরও বেশি দাম দিয়েই সব কিনতে হচ্ছে, ফলে দাম বাড়াতে তাঁরা বাধ্য হচ্ছেন ৷ এতেও বহু ব্যবসায়ীদের দাবি, বেশি লাভ তাঁরা করছেন না, নামমাত্র লাভেই খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করছেন তাঁরা ৷ তবে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের এই অভিযান নিয়ে ক্রেতাদের বিশেষ হেলদোল নেই ৷ তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী এর আগেও বহুবার নির্দেশ দিয়েছেন এবং এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ বাজারে বাজারে ঘুরেছে । তার পরেও তাঁদের অতিরিক্ত টাকা খরচ করেই জিনিসপত্র কিনতে হয়েছে । আর বর্তমান পরিস্থিতিতে যে হারে দাম বেড়েছে তাতে বাজারে গেলেই হাত পুড়ছে ৷
শুক্রবার কলকাতার বিভিন্ন বাজারে জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে 20 থেকে 22 টাকা প্রতি কেজি দরে । চন্দ্রমুখী আলুর দাম 28 থেকে 30 টাকা প্রতি কেজি । পিঁয়াজ 20 থেকে 25 টাকা প্রতি কেজি । গাজর প্রতি কেজি 50 থেকে 60 টাকা । কুমড়ো প্রতি কেজি 30 থেকে 40 টাকা । ক্যাপসিকাম প্রতি কেজি 60 থেকে 80 টাকা । বিনস 60 থেকে 80 টাকা । শশা প্রতি কেজি 50 থেকে 60 টাকা । টমেটো প্রতি কেজি 20 টাকা । প্রতি পিস ছোট লেবু পাঁচ টাকা । পমফ্রেট মাছ প্রতি কেজি 600 টাকা । ভেটকি প্রতি কেজি 500 টাকা । তপসে প্রতি কেজি 700 টাকা । ইলিশ প্রতি কেজি 1500 টাকা । চিতল প্রতি কেজি 600 টাকা ।