কলকাতা, 29 মার্চ : আবারও রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরকে কাঠগড়ায় তুলল BJP। দপ্তরের MCMC (মিডিয়া সার্টিফিকেশন অ্যান্ড মনিটরিং কমিটি) কমিটি পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ করলেন BJP নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। বাবুল সুপ্রিয়র গানের কথা বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিটি পক্ষপাতিত্ব করেছে বলে দাবি করলেন তিনি। ওই গানটি অপরিবর্তিত রাখার ক্ষেত্রে হাল ছাড়ছে না রাজ্য BJP। কীসের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট লাইনগুলি বাদ দিতে বলা হয়েছে? এই প্রশ্ন তুলে আগামীকাল তাঁরা মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরে আপিল করবেন বলে জানিয়ে দিলেন জয়প্রকাশ।
বাবুল সুপ্রিয়র গানের কথায় আপত্তি আছে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরের। রাজ্য BJP-র তরফে তাঁর গানের ভাষা নিয়ে আবেদন জমার পর সেটি খতিয়ে দেখে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরের নির্দিষ্ট কমিটি। সেই কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, পাল্টাতে বলা হবে গানের কথা। সেই অনুযায়ী গতকাল রাজ্য BJP-কে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, আপত্তিকর শব্দগুলি বাদ দিয়ে নতুন করে অনুমতিপত্র পাঠাক তারা।
আজ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরে আসেন তিন সদস্যের BJP-র প্রতিনিধি দল। সেখানে তাঁরা মৌখিকভাবে কথা বলেন বাবুল সুপ্রিয়র গানের লাইন বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে। তারপর প্রতিনিধিদলের সদস্য জয়প্রকাশ বলেন, “দিদির পায়ে হাওয়াই চটি। এই কথাটিতে আপত্তি নির্বাচন কমিশনের। দিদি কাকে বলা হয়েছে? দিদি তো আমার পাড়ার মঞ্জুদিও হতে পারেন। আরও একটি লাইন আছে, পুলিশ তোমার DA বাকি। হাইকোর্ট DA সম্পর্কে বলেছে। তারপরও কমিশনের কমিটির আপত্তি আছে। সেই কারণেই আমরা মনে করছি ওই কমিটি পক্ষপাতদুষ্ট।"
গান গাওয়া হয়ে গেছে কবেই। রেকর্ডিংয়ের সময়ের ভিডিয়ো বাবুল সুপ্রিয় নিজে শেয়ার করেছেন তাঁর টুইটারে। ২৬ মার্চ গানের লিরিক্সের জন্য নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিতে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরে চিঠি দেয় BJP। দলের ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সঞ্জয় সিং আজ জমা দেন সেই চিঠি।
বাবুল সুপ্রিয়র নির্বাচনী প্রচারের জন্য যে গান, তা নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। অনুমতি না নিয়ে সেই গান প্রকাশ করার অভিযোগে তাঁকে শোকজ় করে নির্বাচন কমিশন। সেই শোকজ়ের জবাব দিয়েছেন বাবুল। শোকজ়ের জবাবে বাবুল বলেছেন, তিনি ওই গান প্রকাশ করেননি। পরিচিত দু'একজনকে দিয়েছিলেন শোনার জন্য।
এদিকে BJP-র থিম সং নিয়ে চটেছে তৃণমূল। কমিশনের কাছে গানের কথা নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে আগেই। অভিযোগ দায়ের করেছেন তৃণমূলের তরফে এক আইনজীবী। এ প্রসঙ্গে অভিযোগকারী আইনজীবী সঞ্জয় বসু বলেন, “ওই গানটা নিয়ে যথেষ্ট আপত্তির কারণ রয়েছে। ওইখানে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তা আপত্তিজনক। নির্বাচনের মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট বলছে কোনওভাবেই ব্যক্তিগত আক্রমণ করা যায় না কাউকে। এক্ষেত্রে তাই করা হয়েছে। আমরা যেভাবে অভিযোগ করেছি কমিশনকে দ্বিতীয়বার শোকজ় করতে হবে বাবুলের বিরুদ্ধে।"
অনুমতির জন্য আবেদন জমা দেওয়ার পর সঞ্জয় সিং বলেন, “নির্বাচনের প্রচারের জন্য একটি গানের লিরিক্সের জন্য আবেদন জমা দিতে এসেছিলাম। এরপর ঠিক হবে গানটি কে গাইবেন।" হঠাৎ বাবুলের গানের লিরিক্সের জন্য আবেদন করতে এসেছিলেন তিনি, সেটা সরকারিভাবে বলতে চাননি। যদিও মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর সূত্রে খবর, তিনি আবেদন জমা দেন বাবুলের গানকে কেন্দ্র করেই। পরে সেটি খতিয়ে দেখে গানের কথা পাল্টাতে বলে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর।