কলকাতা, 8 ফেব্রুয়ারি: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে (Teacher Recruitment Scam) গতকাল মানিক ভট্টাচার্য আদালতে যে দাবি করেছিলেন, তার পালটা বক্তব্য পেশ করল ইডি ৷ বুধবার নগর দায়রা আদালতে ইডির আইনজীবী দাবি করেন, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া কুন্তল ঘোষের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে মানিক ভট্টাচার্য ওএমআর শিটে গরমিল করেছেন । কুন্তল ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এমনই তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছে ইডি । পাশাপাশি মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যোগসাজশের (Manik-Partha Collusion) বিষয়েও আদালতকে একাধিক তথ্য তুলে দিয়েছে তারা ৷
'খুনের সমান ষড়যন্ত্র করেছেন মানিক': ইডির তরফে এজলাসে বলা হয়, "জনগণের বিরুদ্ধে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র করছেন মানিক ভট্টাচার্য । মানিক ভট্টাচার্য ও কুন্তল ঘোষ যে কাজ করছেন তা খুনের সমান । একটা সময় ছিল বাংলা শিক্ষায় ছিল সেরা আর এখন একজন বাংলায় পড়াশোনা করতে ভয় পাচ্ছে ৷ পড়ুয়ারা বাংলা ছেড়ে বাইরে চলে যাচ্ছে ।"
পার্থ-মানিক যোগসাজশের দাবি ইডির: ইডির আইনজীবী মানিক ভট্টাচার্য ও পার্থ চট্টোরাধ্যায়ের (Partha Chatterjee Latest News) যোগসাজশ ছিল বলে দাবি করে বলেন, "এঁদের যুগলবন্দিতেই নিয়োগ দুর্নীতিতে বিপুল টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে । বিএড কলেজের অনুমোদনের জন্য 6-8 লক্ষ টাকা নিতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় । পাশাপাশি 2-5 লক্ষ টাকা নিতেন মানিক ভট্টাচার্য ।"
মানিকের বাড়িতে উদ্ধার সিডিতে চাকরিপ্রার্থীদের নাম: মানিকের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে একটি সিডি সেখান থেকে বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি ৷ সেই সিডির ভিতরে একটা ফোল্ডার ছিল । সেই ফোল্ডারে 4 হাজার প্রার্থীর নাম পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি ইডির ৷ যার মধ্যে আড়াই হাজার প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন । যদিও এই বিষয়ে যখন মানিক ভট্টাচার্যকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি সরাসরি বলে দেন তিনি কিছুই জানেন না ।
আরও পড়ুন: 'লন্ডনে আমার বাড়ি নেই, ঠিকানা বলতে পারলে আমায় ফাঁসি দেওয়া হোক'; আদালতে ফুঁসলেন মানিক
গতকাল আদালতে তোপ দাগেন মানিক: উল্লেখ্য, গতকাল মানিক ভট্টাচার্যর তরফে বলা হয়েছিল, প্রভাবশালী তত্ত্ব খাঁড়া করে মাসের পর মাস কোনও রকম প্রমাণ ছাড়াই তাঁকে জেল খাটানো হচ্ছে । তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা কুৎসা রটিয়ে অপপ্রচার করে তাঁর সম্মানহানির চেষ্টা চালানো হচ্ছে । তিনি তদন্তে সহযোগিতা করা সত্ত্বেও বলা হচ্ছে, তিনি তদন্তে সহযোগিতা করছেন না ।
ইডির বিরুদ্ধে অভিযোগ মানিকের আইনজীবীর: মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত অবশ্য আদালতের বাইরে গিয়ে দাবি করেন, " ইডি ভিত্তিহীন কথা বলছে । তদন্ত কবে শেষ হবে কেউ জানে না । আমাদের বক্তব্য তদন্ত দ্রুত শেষ করুন । প্রমাণপত্র দাখিল করুন আদালতে । তাহলে আমরাও তার পালটা বক্তব্য পেশ করতে পারব ৷"
এই মামলার রায়দান এখনও হয়নি ।