কলকাতা 6 জানুয়ারি: সন্দেশখালি ঘটনায় দুটি আলাদা আলাদা রিপোর্ট তৈরি করছে ইডি। শনিবার দুটি রিপোর্টই দিল্লি চলে যাবে। তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ করবে এই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। দিল্লির শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই একদফা কথা বলেছেন কলকাতার আধিকারিকরা। রিপোর্ট পড়ে সংস্থার শীর্ষকর্তারা কী পদক্ষেপ করবেন তারই অপেক্ষায় রয়েছেন কলকাতার আধিকারিকরা।
সংবাদসংস্থা পিটিআইকে এই খবর জানিয়ে ইডি'র এক আধিকারিক বলেন, এই দুটো রিপোর্টে গোটা ঘটনাটি তুলে ধরা হয়েছে। কী কী কারণে অভিযান চালানো হয়েছিল তা উল্লেখ করে রিপোর্টে হামলার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। কারা হামলা চালাল তা-ও বলা হয়েছে রিপোর্টে। পাশাপাশি, ঠিক কেন তল্লাশি অসামাপ্ত রেখেই ইডি আধিকারিকদের ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে আসতে হয়েছে থাকছে সেটাও।
গত বেশ কয়েক বছর ধরে রাজ্যের কয়েকটি ঘটনায় বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্ত করছে। এর আগেও একাধিকবার অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছে বিভিন্ন সংস্থা। এমনকী আদালতে হাজির হয়েও রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে তদন্তে সাহায্য না-করার অভিযোগ এনেছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলি। তবে শুক্রবার উত্তর চব্বিশ পরগণার সন্দেশখালিতে যা হয়েছে তা বেনজির। সকালে তৃণমূলের এক স্থানীয় নেতার বাড়িতে হানা দেয় ইডি। কিন্তু স্থানীয়দের প্রবল বাধার মুখে পড়তে হয় আধিকারিকদের। বচসা থেকে ক্রমশ মারামারির পরিস্থিতি তৈরি হয়। মাথা ফাটে ইডি'র এক আধিকারিকের। শেষমেশ প্রাণে বাঁচতে পালিয়ে আসতে হয় তাঁদের।
এই ঘটনায় প্রবল অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে তৃণমূলকে। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন । তাঁর মতে এটি একটি ভয়াবহ এবং উদ্বেগজনক ঘটনা। হামলার অব্যবহিত পর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে বিষয়টি উথ্বাপন করেন এক আইনজীবী। সব শুনে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন বিচারপতিও। তিনি বলেন, রাজ্যে সাংবিধানিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। রাজ্যপাল এটা ঘোষণা করে দিচ্ছেন না কেন?
তবে হামলার দায় পালটা ইডি'র উপরেই চাপিয়েছে বাংলার শাসক শিবির। তৃণমূলের মুখপাত্র থেকে শুরু করে রাজ্যের মন্ত্রীদের দাবি, অভিযানের ব্যাপারে ইডি আগাম কোনও তথ্য দেয়নি। তথ্য দিলে পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা থাকত। আর তাতে পরিস্থিতি এতটা খারাপ হত না। তৃণমূলের আরও দাবি, বিজেপি যেভাবে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করছে তাতে রাজ্যের মানুষ অখুশি। সেই ভাবনা থেকেই এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করে শাসক দল । এবার এই ঘটনার রিপোর্ট দিল্লিতে পাঠাচ্ছে ইডি।
আরও পড়ুন: