কলকাতা, 31 মে: তদন্তভার নেওয়ার আগে থেকেই সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে 'কালীঘাটের কাকু'র উপরে নজর ছিল ইডির ৷ যে কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল বা যে সংস্থাগুলি থেকে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের আর্থিক লেনদেন হয়েছে, তার উপর নজর রেখেছিলেন তদন্তকারীরা। আর সেই সূত্র ধরেই এই দুর্নীতির চাঁইদের কাছে পৌঁছতে চাইছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ৷ কিন্তু প্রথমিকভাবে 'কালীঘাটের কাকু' তদন্তকারীদের সাহায্য করছে না বলেই অভিযোগ ইডির ৷
ইডি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার নিজাম প্যালেসে জিজ্ঞাসাবাদের চতুর্থ পর্বে কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে একাধিক আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, তিনি কোনও উত্তর দিতে পারেননি। পাশাপাশি রাজ্যের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির একটি কোম্পানির দেখাশোনার দায়িত্বেও ছিলেন এই সুজয় ভদ্র। সেই কোম্পানির টাকার উৎস সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের থেকে জানতে চাওয়া হলে, তা নিয়েও তিনি কোন মন্তব্য করতে চাননি বলেই জানাচ্ছে ইডি আধিকারিকরা। এছাড়াও এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে না আসা বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন কালীঘাটের কাকু সে তথ্যও এসেছে ইডির হাতে।
এর আগে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে তাঁর দুটি ফোনই বাজেয়াপ্ত করেছিলেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, সেই ফোন দুটির কল হিস্ট্রি দেখে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, যে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের শলা পরামর্শ করতেন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ফোনের সেই রেকর্ড দেখিয়ে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের কাছ থেকে উত্তর চাওয়া হলে সেই সময় তিনি আধিকারিকদের বিভ্রান্তিকর উত্তর দিয়ে তদন্তের মোড় ঘোরাতে চেয়েছেন বলেও অভিযোগ। এরপরই সুজয় কৃষ্ণকে রাতেই গ্রেফতার করে ইডি আধিকারিকরা। এরপর বুধবার সকালে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে জোকার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে তাঁর রক্তচাপ এবং ইসিজি পরীক্ষা হয়েছে বলে খবর। সেখান থেকে নগর দায়রা আদলাতে ইডির বিশেষ আদালতে তাঁকে পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: জিজ্ঞাসাবাদে বারবার আইনি দিক টেনে আনছিলেন কালীঘাটের কাকু, দাবি ইডির
ইডি সূত্রে খবর, সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া বাকি রয়েছে, ফলে তাঁকে লাগাতার জেরা করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলেই ইডির দাবি ৷ আর তার জেরেই, এদিন আদালতে 14 দিনের পূর্ণসময়ের জন্য ইডি হেফাজতের আবেদন জানানো হবে তদন্তকারীদের তরফে ৷ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সূত্রে খবর, কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের কাছ থেকে কোন কোন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন, কেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন, একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের একাধিক কোম্পানির দেখাশোনার দায়িত্ব তিনি কীভাবে পেলেন, তা জানতে গোয়েন্দারা ৷ একাধিক কোম্পানির হিসাব রক্ষণের দায়িত্ব থেকে শুরু করে, বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ওঠাবসা কীভাবে এবং কিসের তাগিদে তিনি করতেন, তাও জানতে মরিয়া গোয়েন্দারা ৷