কলকাতা, 30মার্চ: রাজ্য আগেই পেয়েছে প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। এবার সেই ট্রেন মেরামতির জন্য হাওড়ার ঝিলপাড়ে উদ্বোধন করা হল অত্যাধুনিক এবং আন্তর্জাতিক মানের রক্ষণাবেক্ষণ ডিপো। দেশের বেশ কিছু জায়গায় আগেই চালু হয়ে গেলেও বাংলা তার প্রথম সেমি-হাইস্পিড হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়িগামী বন্দে ভারত ট্রেন পেয়েছে গত বছরের ডিসেম্বরে। ভার্চুয়ালি সবুজ পতাকা উড়িয়ে উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এবার ত্রিস্তরীয় বা থ্রি-টিয়ার রক্ষণাবেক্ষণ ডিপো তৈরি হয়েছে বন্দে ভারত ট্রেনের জন্য। পূর্ব রেলের যতগুলি কারশেড রয়েছে সেগুলির মধ্যে এই ডিপোটি দীর্ঘতম।
বৃহস্পতিবার এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার অরুণ আরোরা-সহ পূর্ব রেলের অন্যান্য উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরাও। অরুণ অরোরা বলেন, "পূর্ব রেলের জন্য এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ দিন ৷ কারণ আমাদের যতগুলি কোচিং কমপ্লেক্স রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে লম্বা এই কমপ্লেক্সটি। বন্দে ভারতের মতো একটি অত্যাধুনিক সেমি বুলেট ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মানানসই কোচিং কমপ্লেক্সেরও প্রয়োজন। আর সেই প্রয়োজনীয়তা থেকেই এই তিন লেভেলের কমপ্লেক্স। এখানে পিট লাইন রয়েছে। এই পিট লাইনের সাহায্যে ট্রেনের নীচের দিকে ইঞ্জিনের কোনও সমস্যা হলে সেটা দেখা যাবে। তারপর ফ্লোর লেভেল। অর্থাৎ এখান থেকে ট্রেনের ভেতরে প্রবেশ করে মেরামতির কাজ করা যাবে। এবং তার উপরের লেভেলের সাহায্যে ট্রেনের উপর দিকের কাজের জন্য সহজেই পৌঁছানো যাবে। এটি দুটি ভাগে কমিশন করা হয়েছে - ফেস 1 এবং ফেস 2।"
আরও পড়ুন: শুক্রেই পৃথিবীতে আছড়ে পড়বে সৌরঝড় ! কী বলছেন বিজ্ঞানীরা ?
আগে এই কমপ্লেক্সে 8 থেকে 10 কোচের ট্রেনের মেরামতির এবং অন্যান্য রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হতো। এবার এই কারশেডের দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়ায় এখন 18 কোচের ট্রেনের কাজ করা সম্ভব হবে। ফলত 8 বা 10 কোচের ট্রেনগুলো অন্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আপাতত বন্দেভারতের মতো আন্তর্জাতিক মানের সেমি বুলেট ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণের জন্যই হাওড়ার ঝিল পাড়ের সাইডিং ব্যবহার করা হবে বলে জানা গিয়েছে। অবশ্য আগামিদিনে বন্দেভারতের মতো অত্যাধুনিক মানের ট্রেনগুলির সম্পূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ এখানেই করা হবে বলে জানিয়েছে পূর্ব রেল। রেল মন্ত্রকের অন্তর্গত আরভিএনএল সংস্থা এই সাইডের কাজ সম্পূর্ণ করেছে বলে জানা গিয়েছে।
প্রথম পর্যায়ের কাজে একশো চল্লিশ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। পাশাপাশি হাওড়ার গতিশক্তি প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে আরেকটি কারশেড তৈরি করার কথাও জানিয়েছেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার অরুণ অরোরা। সেটি তৈরি করতে বরাদ্দ করা হয়েছে একশো তিন কোটি টাকা। এছাড়াও তৃতীয় পর্যায়ে 64 কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এই কারশেড থেকে প্রতিদিন পাঁচটি করে ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা সম্ভব হবে বলে দাবি করেছেন অরুণ অরোরা।