কলকাতা, 26 অক্টোবর: আগামী 7 জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ সিপিএম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের । সেই উপলক্ষে 3 নভেম্বর কোচবিহার থেকে শুরু হবে ইনসাফ যাত্রা । সেই কর্মসূচির অর্থ সংগ্রহ হচ্ছে লক্ষ্মীর ভান্ডারে ! বিষয়টা কী ?
ডিওয়াইএফআইয়ের ইনসাফ যাত্রা আর বিগ্রেড সমাবেশের জন্য একটি মাটির ভাঁড় বা কলসিতে অর্থ সংগ্রহের ব্যবস্থা করেছেন দলীয় কর্মীরা । প্রত্যেকটি ভাঁড়ের গায়ে লেখা রয়েছে 3 নভেম্বর ইনসাফ যাত্রা । আর ৭ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ । বাড়িতে বাড়িতে ভাঁড়ে টাকা জমানোর রীতি প্রচলিত রয়েছে ৷ তা পরিচিত লক্ষ্মীর ভান্ডার হিসেবেই ৷ তাই বামেদের অর্থ সংগ্রহের এই ভাঁড়কেও লক্ষ্মীর ভান্ডার হিসেবেই দেখছেন অনেকে ৷ এ দিকে, বর্তমানে লক্ষ্মীর ভান্ডার বললেই মনে চলে আসে মহিলাদের জন্য রাজ্য সরকারের প্রকল্পের কথা ৷
যদিও বামেদের এই অর্থ সংগ্রহের পদ্ধতির সঙ্গে যাঁরা লক্ষ্মীর ভান্ডারের তুলনা টানছেন, তাঁদের একহাত নিয়েছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ৷ তিনি বলেন, "ওটাকে লক্ষ্মীর ভান্ডার বলে না, ভাঁড় বলে । ছোটবেলায় এই ভাঁড়েই আমরা দু টাকা করে জমিয়েছি, এখনও গ্রামের দিকে বহু মানুষ ভাঁড়ে টাকা জমান । যাঁরা ওটাকে লক্ষ্মীর ভান্ডার বলে, তাদেরকে আমরা 'ভাঁড়' বলেই মনে করি ।"
এই নিয়ে শাসকদলের শীর্ষ নেত্রী তথা মন্ত্রী শশী পাঁজাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি ইটিভি ভারতকে বলেন, "এটা সিপিএমের নিজস্ব কর্মসূচি । এই নিয়ে কিছু বলার নেই । তবে লক্ষ্মীর ভান্ডার যে বাংলার মেয়েদের আত্মনির্ভরতায় বড় ভুমিকা গ্রহণ করেছে, সে কথা আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন রাখে না । বাংলার মহিলাদের কাছে জিজ্ঞাসা করুন এর গুরুত্ব কী । তাই যে যাই করুক, বাংলার মহিলাদের মনে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।"
যদিও ডিওয়াইএফআই রাজ্য সভাপতি মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় এ বিষয়ে বলেছেন, "আমাদের অর্থ সংগ্রহের পদ্ধতি নিয়ে কয়েকদিনের মধ্যেই সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দেওয়া হবে ।"
আরও পড়ুন: 1.5 কোটি মানুষ লক্ষ্মীর ভান্ডারের সুবিধা পাচ্ছেন: মমতা
ডিওয়াইএফআই সূত্রের দাবি, রাজ্যে বুথের সংখ্যা প্রায় আশি হাজার । বুথ পিছু 4/5টি করে ভাঁড়ে সংগৃহীত হবে অর্থ । তবে সংশ্লিষ্ট বুথ এলাকায় বাম কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে অবশ্য যাবে না এই ভাঁড় । তার বাইরে থাকা যে সব আমজনতা রয়েছে, তাঁদের বাড়িতে যাবে এই ভান্ডার । ওই বাড়িগুলিতে 20/25 দিন করে রাখা থাকবে মাটির তৈরি ভাঁড়গুলি । তারপরে তা আবার ফেরত নিয়ে আসবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা । এক টাকা, দু টাকা, পাঁচ টাকা, দশ টাকা করে যেভাবে সাধারণ মানুষ ভাঁড়ে অর্থ জমান, সে ভাবেই এই ভান্ডারে টাকা জমানো যাবে । সেই কথাই সিপিআইএম যুব সংগঠনের নেতৃত্ব বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলবেন ।
প্রসঙ্গত, প্রায় 15 বছর বাদে বাম ছাত্র যুব সংগঠন ব্রিগেড সমাবেশের ডাক দিল । এর আগে, বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন 2008 সালে শেষবার বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের ডাকে ব্রিগেড সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল । সেই সমাবেশে বক্তা ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, সুভাষ চক্রবর্তী, আভাস রায়চৌধুরী, অভয় মুখোপাধ্যায় । শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছিলেন জ্যোতি বসুও ।
এ বার মূলত রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে চুরি ও দুর্নীতি ইস্যুতে সরব হবেন বাম সংগঠনের নেতারা । ঠিক তেমনই বাংলার যুবসমাজের সমস্ত বেকারদের ঐক্যবদ্ধ করতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বেকারত্ব ইস্যুতে জোরদার আন্দোলন সংঘটিত করা হবে । নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে কয়লা পাচার, গরু পাচারের মতো ইস্যুগুলিও যথেষ্ট গুরুত্ব পাবে বলে ডিওয়াইএফআই রাজ্য কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন ।