কলকাতা, 14 জানুয়ারি: অ্যান্টিবায়োটিকের লাগামছাড়া ব্যবহার রুখতে এবার নির্দেশিকা জারি করল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর ৷ 90 পাতার এই নির্দেশিকায় অ্যান্টিবায়োটিক কখন, কোথায়, কীভাবে ব্যবহার হবে, সব নির্দেশই দেওয়া হয়েছে ৷ বেশ কিছু অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রে কড়া বিধিনিষেধ জারি করেছে স্বাস্থ্য ভবন ৷ বলা হয়েছে, এই সমস্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের আগে লিখিতভাবে কারণ জানাতে হবে ৷
এ নিয়ে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ইতিমধ্যেই দুই তৃতীয়াংশ অ্যান্টিবায়োটিককে ব্যাকটেরিয়া কব্জা করে ফেলেছে ৷ বাকি এক তৃতীয়াংশ অ্যান্টিবায়োটিক নিজেরাই নষ্ট করছেন সাধারণ মানুষ ৷ রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম বলেন, "পথ দুর্ঘটনা এবং ক্যান্সারে যত মানুষের মৃত্যু হয়, অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট জীবাণুর জন্য তার চেয়ে বেশি মানুষ মারা যান ৷"
অভিযোগ উঠেছে, সাধারণ সংক্রমণের ক্ষেত্রেও দেদার অ্যান্টিবায়োটিক লিখছেন একাংশ চিকিৎসক ৷ মেরোপেনেম, কার্কেপেনেমের মতো অত্যন্ত শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকও মুড়ি-মুড়কির মতো গিলছে মানুষ ৷ বহুক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া নিজে নিজেই অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খেয়ে নিচ্ছেন অনেকে ৷ এর ফলও হচ্ছে, মারাত্মক ! ফলে রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চিকিৎসকদের হাতে থাকা শেষ অস্ত্রগুলিও কার্যত বিপন্ন হয়ে পড়ছে ৷
রাজ্যের গাইডলাইনে প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিকগুলিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে ৷ প্রথমত, আন্ডার সার্ভেইলেন্স বা নজরদারির আওতাধীন ৷ দ্বিতীয়ত, লিমিটেড অ্যাক্সেস বা সীমিত ব্যবহার এবং তৃতীয় তথা সবশেষে রেস্ট্রিকটেড ইউজ বা নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার যোগ্য অ্যান্টিবায়োটিক ৷
বলা হয়েছে, কোলিস্টিন, ডরিগেনেম, ডয়ন্টোমাইসিন, অভিব্যাকটাম প্রভৃতি অত্যন্ত শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করার আগে কারণ লিখতে হবে চিকিৎসকদের ৷ ইমিপেনাম, মেরোপেনেম, ভ্যাঙ্কোমাইসিনের মতো সীমিত ব্যবহারের অ্যান্টিবায়োটিকগুলি রোগীর ভরতির পরের 2-3 দিন কাজে লাগতে পারে ৷ কিন্তু, তার পরেও এগুলির ব্যবহারের যুক্তি লিখিতভাবে জানাতে হবে চিকিৎসককে ৷ প্রসঙ্গত, এই সব অ্যান্টিবায়োটিকগুলি জীবনদায়ী অর্থাৎ, রক্ত, পেট, লিভার, ফুসফুস ও ইউরিনারি ট্র্যাক্টে মারাত্মক সংক্রমণ ও সেপটিসেমিয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় ৷ কিন্তু, যথেচ্ছ ব্যবহারের জেরে এগুলিও অনেক সময় কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে ৷
আরও পড়ুন: