কলকাতা, 19 সেপ্টেম্বর : বিধানসভা ভোর্ট পরবর্তী রাজ্যে দলত্যাগের হিড়িক পড়েছে ৷ তবে শনিবার বিজেপি-র প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র তৃণমূলে যোগদান রাজ্য রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় দলবদল ৷ কিছুদিন আগেও যিনি রাজ্যের শাসকদলকে সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন, সেই বিজেপি নেতাই কি না মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের দলে নাম লেখালেন ৷ স্বাভাবিকভাবে সমালোচকরা বাবুলকে একহাত নিতে ছাড়েননি ৷ তবে এ সব সমালোচনাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ ৷
রবিবার ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয়ে বাবুল সুপ্রিয় বলেন, "পিছনে ফিরে তাকাতে চাই না। আমি জানি দল ছাড়লে সমালোচনা হয়। আমার ক্ষেত্রেও হবে। সব জেনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিল্পী মানুষ তো, তাই অনেকে বলতে পারেন একটু আবেগপ্রবণ। আমিও আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতো পাবলিক লাইভ লিড করি। তাই যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, তাই নিয়েছি ৷ এ নিয়ে আমি ভাবিত নই।"
বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেওয়ার পর থেকে সংবাদের শিরোনামে 'কহো না প্যায়ার হ্যায়' খ্যাত গায়ক ৷ তবে প্রশংসা বা সমালোচনা যাই হোক না কেন, সব কিছুকেই ইতিবাচক নিয়ে রাজনীতিতে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে চান বাবুল । তিনি বলেন, "দলত্যাগ করার পর বিজেপি-র তরফ থেকে আমাকে গদ্দার বলা হতে পারে ৷ এমনকী, ইটপাটকেলও ছোড়া হতে পারে ৷" গত তিনচার দিনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে যে সুযোগ দিয়েছেন, তাতেই তিনি সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হয়েছেন বলেও জানান বাবুল ৷ তিনি বলেন, "সত্যি কথা বলতে টিমে থেকে মাঠের বাইরে বসে থাকতে চাই না আমি। বরং প্রথম এগারোয় থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে চাই ৷"
আরও পড়ুন: কবীর সুমনের তীব্র কটাক্ষেও স্পিকটি নট বাবুল
অতীতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অম্লমধুর সম্পর্ক ছিল বাবুলের। সেই প্রসঙ্গ তুলে বাবুল বলেন, "এ কথা সত্যি বিজেপি-তে থাকাকালীন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার বিভিন্ন সময়ে সংঘাত হয়েছে। পরস্পরের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইও হয়েছে। তবে এখন পরিস্থিতি আলাদা। পরস্পরের বিরুদ্ধে বাক্স-বদল করেই চলতে চাই ৷ আমি জানি আমার উপর অভিষেকের পুরো বিশ্বাস আছে ৷ আমিও সেই বিশ্বাস থেকেই দলে এসেছি। আশা করি আগামিদিনে আপনাদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে পারব।"
এদিন শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ ও অন্য নেতাদের সমস্ত আক্রমণের জবাব এড়িয়ে গেলেও বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কথা উল্লেখ করেন বাবুল ৷ তিনি বলেন, "দলত্যাগ নিয়ে শমীকবাবু যাই বলুন, উনি একটা কথা বলেছেন বাবুলের বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই ৷ এটাই আমার জন্য স্বস্তির। সেই জন্যই আপনাদের সামনে সাদা জামা পরে মন খুলে কথা বলতে পারছি।"