কলকাতা, 11 মার্চ: চাকরি দুর্নীতির ক্ষেত্রে নাম জড়িয়েছে টলিউডের একাধিক অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের (Tollywood Connection In Corruption) । এই বিষয়ে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ (BJP MP Dilip Ghosh) বলেন, "বলিউডে যদি দাউদ ইব্রাহিমের কোটি কোটি টাকা লাগতে পারে, মাফিয়াদের টাকা ও দুর্নীতির টাকা সিনেমায় খাটানো, তা নতুন কিছু নয় ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘টলিউড এখন ফিল্ম মাফিয়াদের হাতে । 2014 সালের পর প্রচুর অভিনেতা অভিনেত্রী বিজেপিতে (BJP) যোগদান করেছিলেন । তাঁদের দানা-পানি বন্ধ করে দেওয়া হয় । তাই বাধ্য হয়ে ফিরেও গিয়েছিলেন । 2021 সালের ভোটের আগে অনেকে এসেছিলেন, তাঁদের সঙ্গেও তাই করা হয়েছে । যাঁরা করেছে, এঁরা সকলে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ।’’
বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, গরু চুরি, চাকরি চুরি, কয়লা চুরির টাকা সব সিনেমায় ব্যবহার করা হয়েছে৷ দু-চারজন লোকই ফিল্ম জগৎটাকে নিয়ন্ত্রণ করছে । আসলে সিনেমা নিয়ে কারও চিন্তা নেই ৷ কালো টাকাকে সাদা করার মাধ্যম হয়েছে টলিউড । এর তদন্ত হওয়া উচিত ।
প্রসঙ্গত, ভোটের আগে টলিউডের অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন । তার আগে ও পরে ঝাঁকে ঝাঁকে অনেকেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন । তাঁদের অনেকের নামই এখন নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে ৷ ফলে বিজেপির দিকেও কেউ কেউ আঙুল তুলছেন ৷ ফলে প্রশ্ন উঠছে যে সেই সময় দলে নেওয়ার আগে বিজেপি নেতৃত্বের কি সংশ্লিষ্ট অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অতীত খতিয়ে দেখা উচিত ছিল না !
উত্তরে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘নির্বাচন এলে বহু মানুষের দলে যোগ দেওয়ার একটা প্রভাব চলে । যেহেতু বিজেপির জেতার সম্ভাবনা ছিল ৷ তাই বিজেপির দিকে মানুষ বেশি যান । তখন এত লোকের মধ্যে বাছাবাছি করা বা রাজনীতিতে ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দেখে দলে নেওয়া হয় না । কিছু ঘোলা জল ঢুকে পড়ে । তবে চেষ্টা করা হয় । আমিও জানি না কে কোথা থেকে ঢুকেছে ৷ আর তাঁকে কোনোদিন দেখিওনি । ঝান্ডা ধরে নিচ্ছে ভিড়ের মধ্যে । এসব মানুষ থাকে ভিড়ের মধ্যে ৷ সেই সব মানুষদের আমরা কখনও দলের মুখ করিনি আর করবও না ।"
চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন নিয়ে দিলীপের বক্তব্য, "এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক যে ন্যায্য চাকরি চেয়ে আজ লেখাপড়া জানা পাস করা ছেলেমেয়েরা দু’বছর হল রাস্তায় বসে আছে । চাকরি ভিক্ষা চাইছে । মুখ্যমন্ত্রী আজ পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে দেখা করলেন না ৷ তাঁদেরকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা হয়েছে । তাঁদের পরিস্থিতির কথা ভাবলে খুব কষ্ট হয় ৷ আমরাও গিয়েছি, তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছি । তাঁরা তাঁদের অধিকারের জন্য লড়াই করে চলেছেন । আমার মনে হয় সরকারি কর্মচারীরও এই দিন আসছে খুব শিগগিরই ।"
এই বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আন্দোলনের মাধ্যমে নিজেকে ক্ষমতায় নিয়ে এসেছেন, তিনি আর এখন আন্দোলনকে গুরুত্ব দেন না । বরং কেউ আন্দোলন করলে তাঁদের ধমকায় । আমি জানি না এর সমাধান কি আছে ? সমাধান তো দেখা যাচ্ছে না ৷ আন্দোলন করাটা গণতন্ত্রের একটা রাস্তা, সেটা তাঁরা করছেন ।’’
এদিন মদন মিত্র (Madan Mitra) কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর ন্যাড়া হওয়া নিয়ে কটাক্ষ করেছেন । এই বিষয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, "যেই নেতার নাতি তাঁর প্যান্ট খুলে দেয়, সে যদি রাস্তায় বড় বড় ডায়লগ মারে, তাঁদের সাধারণ মানুষ আর কি বলতে পারে । প্যান্ট জামা পরুন ৷ রাস্তায় হাঁটতে শিখুন ৷ এবং মহিলাদের ঘাড়ে হাত না দিয়ে পুরুষদের ঘাড়ে হাত দিয়ে হাঁটুন । তাহলে লোকে আপনাকে বিশ্বাস করবে ।"
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ভাঙড়ে বিশেষ নজর । তৃণমূলে (Trinamool Congress) পর্যবেক্ষক করা হল শওকত মোল্লাকে । এই বিষয় দিলীপ ঘোষ বলেন, "এর আগে ডায়মন্ড হারবারে শওকত মোল্লার শান্তি ও উন্নয়ন আমরা দেখেছি । যখন আমাদের রাষ্ট্রীয় সভাপতির উপরে হামলা করা হয়েছিল, সেদিন আমি গাড়িতে ছিলাম । ইট পাটকেল লাঠি নিয়ে গাড়ির উপর হামলা করা হয়েছিল ৷ শওকত মোল্লার কাছ থেকে এর থেকে বেশি কিছু আশা করা যায় না । মদন মিত্রের হুমকি কে কেউ সিরিয়াসলি নেয় কি ?"
আরও পড়ুন: মাকড়শার জাল বুনেছে তৃণমূল, মহারথীরাও জেলে যাবে: লকেট