কলকাতা, 8 এপ্রিল: দাবি ন্যায্য, নিজের অধিকার ফিরে পাওয়ার দাবি, তবে আর কতদিন ? তাই আন্দামানে দিন কাটলেও তাঁর মন পড়ে থাকে ধর্মতলার ধরনা মঞ্চে। মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে অবস্থানরত আপার প্রাইমারির চাকরিপ্রার্থীরা। দীর্ঘ লড়াই, আইনি জটিলতা এসবের মাঝে থমকে রয়েছে তাঁদের নিয়োগ। একরাশ স্বপ্ন নিয়েই দিনের পর দিন ধরে চলছে ধরনা। সেই ধরনা মঞ্চে যোগ দিয়েছেন আন্দামানের বাসিন্দা সুমিত্রা সাধুখাঁ । স্বপ্ন ছিল নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। বিএসসি, বিএড করার পর টেট পরীক্ষায় পাশ করেছেন। কিন্তু আট বছর কেটে গেলেও মেলেনি চাকরি । অগত্যা আন্দামান থেকে কলকাতায় বাড়ি আসলেও স্কুলের বদলে এখন তাঁর ঠিকানা ধর্মতলার ধরনা মঞ্চ।
ছোটো থেকে শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন নদিয়ার বাসিন্দা সুমিত্রা সাধুখাঁ। 2015 সালে টেট পরীক্ষা দিয়ে পাশ করলেও চাকরি অধরা । নিয়োগ দুর্নীতির জালে আটকে রয়েছে প্রতিটি আপার প্রাইমারি প্রার্থীর চাকরি। তবে এই দীর্ঘ সময়ের মাঝে বদলে গিয়েছে সুমিত্রার নিজের জীবন। বিয়ে করে বর্তমানে তিনি আন্দামানের বাসিন্দা। সেখানেই কর্মরত সুমিত্রার স্বামী। ছেলেকেও ভর্তি করেছেন ওখানকার স্কুলে।
সুমিত্রা বলেন, "বিয়ের আগে আমি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। বর্তমানে আমার ছেলের বয়স ছয় বছর। আমি এত পড়াশোনা শিখেও কিছু করতে পারছি না। বাধ্য হচ্ছি স্বামীর উপর নির্ভর হতে। ছেলেকে একটা সুন্দর ভবিষ্যত গড়ে দেব, তাও করে উঠতে পারিনি। বছরে এক থেকে দুবার এই ধরনা মঞ্চে আসতে হয় আমাকে । অনেক সময় নিজে আসতে না-পারলেও বাবা-শ্বশুরকে ধরনা মঞ্চে পাঠাতে বাধ্য হই । এই যোগ্য হয়েও চাকরি পেলাম না।"
আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ডিআই-সহ পাঁচ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেল সিআইডি
সুমিত্রা বলেন, "কমিশনের কাছে একটাই আবেদন যোগ্যপ্রার্থীদের যাতে এবার সুযোগ দেওয়া হয়। আর কতদিন আমরা এইভাবে রাস্তায় বসে থাকব ? নিয়োগ প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত শুরু হয় সেই ব্যবস্থা যেন করা হয়।"