কলকাতা , 22 ডিসেম্বর : যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন ইশুতে ফের টুইট করলেন জগদীপ ধনকড় । তাঁর মতামত না নিয়েই EC বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠান স্থগিতের সিদ্ধান্ত কীভাবে নিল এই নিয়ে আগেও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি । এবার সরাসরি উপাচার্য-আচার্য যোগসূত্র নিয়ে কথা বললেন ।
তিনি টুইট করে লেখেন , 'আচার্য ও উপাচার্যর যোগাযোগ থাকে সচিবালয়ের মাধ্যমে । কিন্তু সেখানেই কিছু বাধা তৈরি হয়েছে । তাই আচার্যের সঙ্গে তাঁদের নির্ভীক কথোপকথন সম্ভব হচ্ছে না । যা হচ্ছে তা অসংবিধানিক । সবাইকে এর বিরোধিতা করে এগিয়ে আসতে হবে । '
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠান স্থগিত প্রসঙ্গে গতকাল অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল । তিনি বলেন, "রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে কার্যত জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে । " সমাবর্তন অনুষ্ঠান স্থগিতের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে তাঁর প্রশ্ন, "আচার্যের অনুমতি না নিয়ে এই ধরনের সিদ্ধান্ত এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল নিতে পারে কি ?" রাজ্যপালের অভিযোগ, রাজনৈতিক চাপেই উপাচার্যকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে ।
সমাবর্তনের দিন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে প্রবল ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পড়তে পারেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীপ ধনকড় । সেই আশঙ্কা করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠান স্থগিত করেছে । অনুষ্ঠানে ছাত্র সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হতে পারে আশঙ্কা রয়েছে । ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, রাজ্যপালের বিভিন্ন কাজকর্ম ও মন্তব্যে গত কয়েক মাসে এটা স্পষ্ট যে, তিনি BJP ও RSS-এর হয়ে কাজ করছেন । সেই সূত্রেই 24 ডিসেম্বর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কালো ব্যাজ পরে বিক্ষোভ দেখানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছিল কয়েকটি ছাত্র সংগঠন । তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠান স্থগিত রাখা হবে । কারণ বিশেষ পর্বে সাম্মানিক ডিলিট এবং DSC প্রাপকদের ডিগ্রি দিয়ে থাকেন আচার্য তথা রাজ্যপাল । এ বার সাম্মানিক ডিলিট পেতেন শঙ্খ ঘোষ এবং প্রাক্তন বিদেশসচিব সলমন হায়দার । DSC পেতেন বিজ্ঞানী সিএনআর রাও এবং ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের অধিকর্ত্রী সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই অনুষ্ঠান আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে ।
2014 সালে 'হোক কলরব' আন্দোলনের সময়ও সমবর্তন অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের হাত থেকে ডিগ্রি নিতে অস্বীকার করেন এক ছাত্রী । সেবারও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল তৎকালীন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকে । সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাজ্যপালকে এড়িয়ে সমবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজন করছে বলে বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা । যদিও মঙ্গলবার সমবর্তন অনুষ্ঠানের আগে সোমবার আরও একটি বৈঠক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে হবে । আজ রাজ্যপাল জানিয়েছেন, সমাবর্তন স্থগিতের সিদ্ধান্তে তাঁর সমর্থন নেই । এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, "বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনেই সমাবর্তন অনুষ্ঠান পেছানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করা হল। সিদ্ধান্ত উপাচার্যকে জানানো হয়েছে । শিক্ষার স্বার্থেই এই পদক্ষেপ নিলাম।" যাদবপুরের প্রাক্তন উপাচার্য বলেন , 24 ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয় । কিন্তু এরকম ঘটনা এইবারই প্রথম ।