কলকাতা, 14 নভেম্বর: অন্য রাজ্যের তুলনায় বাংলার বাজারদর নিয়ন্ত্রণে (Market Price) ৷ সোমবার নবান্নে বাজার কমিটিগুলোকে নিয়ে বৈঠকের পর এ কথাই বললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) । তবে এদিন এই বৈঠক থেকে মুরগির মাংস, ডিম, কিছু মরশুমি শাকসবজির দাম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । একই সঙ্গে যাতে রাজ্যে মাছের যোগান বাড়ে, সেজন্য মাছ চাষে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি ।
প্রসঙ্গত, করোনার (Covid Pandemic) মরশুম কাটলেও এবার উৎসবের শেষ দিক থেকেই বাজারে শাকসবজি থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম খুব চড়া । এই নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে । আর সেটা বুঝতে পেরেই গত সপ্তাহেই এই বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী । এদিনের বৈঠকে তাই গুরুত্ব বুঝেই তিনি সমস্ত কৃষি ও বাজার সংক্রান্ত দফতরের মন্ত্রীদের ডাকেন ।
এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পৌরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), ছিলেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, কৃষি বিপণন প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না, ছিলেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার-সহ অন্যান্যরা । সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে এই দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাজারদর নজরদারির জন্য গঠিত টাস্ক ফোর্সের সদস্য তথা ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা ।
এ দিনের বৈঠকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে মুখ্যমন্ত্রী ক্রমবর্ধমান বাজার দর নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের (Modi Government) উপর ক্ষোভ উপড়ে দিয়েছেন । মুখ্যমন্ত্রীর কথা অনুসারে, ‘‘কেন্দ্রীয় ভুলনীতির জন্য ভুগতে হচ্ছে রাজ্যের গরিব মানুষকে । বিশেষ করে পেট্রোপণ্যের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি ফলে ভুগতে হচ্ছে বাংলার কৃষকদের ।’’
এদিন এই বৈঠকে হিমঘরে থাকা অতিরিক্ত আলু নিয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি জানান, 15 ডিসেম্বরের মধ্যে হিমঘরে থাকার সমস্ত আলু বের করে ফেলতে হবে ৷ না হলে সরকারের তরফ থেকে কম দামে আলু কিনে ন্যায্য মূল্যের দোকান থেকে বিক্রি করা হবে । এর ফলে হিমঘর মালিককেরা আলুর দাম পাবে না । তখন আর সরকারকে জন্য দায়ী করা যাবে না ।
এদিন সার নিয়েও কেন্দ্রের উপর ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । কারণ, এক্ষেত্রে রাজ্যের প্রাপ্য বরাদ্দও রাজ্যকে দেওয়া হচ্ছে না । এদিন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন, রাজ্যে যাতে সারের কারখানা তৈরি করা যায়, তার জন্য উদ্যোগ নিতে । প্রয়োজনে এর জন্য বিনা পয়সায় জমিও দিতে প্রস্তুত রাজ্য সরকার । একই সঙ্গে উদ্যোক্তারা চাইলে তিন বছরের জন্য অর্ডারও নিশ্চিত করতে পারে রাজ্য সরকার । মুখ্যমন্ত্রী মনে করছেন এসবের মাধ্যমে সার কারখানা করার জন্য বিনিয়োগের সম্ভাবনা বাড়তে পারে ।
এদিনের এই বৈঠক থেকে জোর করে রেল, কোল এবং কোর্টের জমিতে উচ্ছেদ নিয়ে সরব হয়েছেন মমতা । তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকার নীতিগতভাবে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে । নতুন করে যেমন কাউকে জবরদখল করে বসতে দেবে না এই সরকার । একইভাবে বল প্রয়োগ করে উচ্ছেদ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন তিনি ।
আরও পড়ুন: হচ্ছেটা কি! এইরকম গণতন্ত্র ছিল না তো আমাদের, প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর