কলকাতা, 19 ডিসেম্বর: উত্তর কলকাতার দেশবন্ধু পার্কে জরাজীর্ণ সুইমিং পুল বেশ কয়েক বছর আগে ভেঙে ফেলা হয় ৷ সেটিকে আন্তর্জাতিক মানের সুইমিং পুল তৈরি পরিকল্পনা নেওয়া হয় ৷ কাজও শুরু হয় প্রায় 4-5 কোটি টাকা খরচ করে ৷ কিন্তু, সেই সুইমিং পুল এখনও চালু করা যায়নি ৷ পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষের করের টাকায় তৈরি দামি সামগ্রী ৷ জঙ্গল ও আগাছায় ভরে রয়েছে পুল চত্বর (Deshbandhu Park Swimming Center Built at Cost 5 Crores Filled with Weeds and Jungle) ৷ যা নিয়ে স্থানীয় 12 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মীনাক্ষী গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কাজ অনেকটাই এগিয়েছে ৷ দ্রুত সুইমিং পুল চালু করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে ৷
ওই সুইমিং পুলের ভিতরে ঢুকলেই বাচ্চাদের তিনটি সুইমিং পুল ৷ যেখানে কলকাতার তিন ক্লাব বাচ্চাদের সাঁতার প্রশিক্ষণ দেন ৷ কিন্তু, ওই 3টি সুইমিং পুলের চারদিকে আগাছায় ভরে রয়েছে ৷ কোথাও কোথাও বড় বড় গাছও জন্মেছে ৷ সেগুলি পরিষ্কার করানোর লোক নেই ৷ যা নিয়ে ওই সাঁতার প্রশিক্ষণ ক্লাবের সদস্যরা জানিয়েছেন, ওই জঙ্গল ও আগাছা তাঁদের পরিষ্কার করানোর কথা নয় ৷ আর এই আগাছার জন্য সুইমিং পুলের জল নোংরা হয় বলে অভিযোগ করেছেন প্রশিক্ষকরা ৷ ফলে প্রতিমাসে সুইমিং পুলের জল পরিষ্কার করাতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ হয় ক্লাবগুলির ৷
আর দেশবন্ধু পার্কের ভিতরের দিকে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের সুইমিং সেন্টার ৷ যেখানে প্রতিযোগিতার আয়োজন করার ব্যবস্থা রয়েছে ৷ পাশাপাশি, দর্শকরা বসে খেলাও দেখতে পারবেন ৷ কিন্তু, সেই সুইমিং সেন্টার তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে ৷ ভিতরে সুইমিং পুলের জল বদলের জন্য নতুন পাম্প এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে ৷ তবে, সামান্য কিছু কাজ কর্ম এখনও বাকি রয়েছে বহুদিন ধরে ৷ ফলে দেশবন্ধু পার্কের এই আন্তর্জাতিক মানের সুইমিং ক্লাব চালু করা যায়নি ৷
এনিয়ে 12 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মীনাক্ষী গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রয়াত বিধায়ক সাধন পাণ্ডের উদ্যোগে এই সুইমিং ক্লাব তৈরির কাজ শুরু হয় ৷ অনেকটাই কাজ হয়েছে ৷ তবে, বেশ কিছু কাজ এখনও বাকি রয়েছে ৷ দীর্ঘ দিন ধরে পড়ে থাকায় আগাছায় ভরে গিয়েছে ৷ আধুনিক মানের পুলে জলের যোগান একটা বড় ব্যাপার ৷ সেসব করে দ্রুত এই পুল চালুর জন্য আমি বিষয়টি অধিবেশনে তুলেছি ৷’’
আরও পড়ুন: রয়েছে বাড়ি, নস্করহাটের কয়েক হাজার বাসিন্দাদের নেই নিজস্ব ঠিকানা
তবে, মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানিয়েছেন, আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে ওই সুইমিং ক্লাব চালু করে দেওয়া হবে ৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা রাজ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম সুইমিং পুল ৷ জলের সমস্যা মেটাতে পাম্প বসেছে ৷ আরও কিছু কাজ বাকি আছে ৷ আগামী বছর এপ্রিলের আগেই খুলে যাবে ৷’’
কলকাতা পৌরনিগম (Calcutta Municipality Corporation) সূত্রে খবর, বিপুল খরচে তৈরি হলেও, সেখানে সাঁতার শেখানো বা তা চালু করা সংশ্লিষ্ট দফতরের কাজ নয় ৷ তাই তারা সম্পূর্ণ পরিকাঠামো চুক্তি ভিত্তিতে সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার হতে দিতে চাইছে ৷ যাতে পৌরনিগমের মাসিক আয় হবে ৷ আবার আধুনিক মানের পরিকাঠামোয় অল্প খরচে ছেলেমেয়েরা সাঁতার শিখতে পারবে ৷
জানা গিয়েছে কলকাতা পৌরনিগম প্রথমে এটিকে লিজে দেওয়ার জন্য স্পোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়াকে আবেদন করেছিল ৷ তবে, সাইয়ের তরফে জানানো হয়, তাদের আধুনিক পরিকাঠামো যুক্ত সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে ৷ ফলে এবার নতুন গ্রাহকের খোঁজে রয়েছে কলকাতা পৌরনিগম ৷ এর জন্য কিছুদিনের মধ্যেই কলকাতা পৌরনিগমের তরফে ‘এক্সপ্রেস অফ ইন্টারেস্ট’ ইস্যু করা হবে ৷ যাতে বাণিজ্যিক সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে সুইমিং সেন্টারটিকে চালু করা যায় ৷ এর থেকে পৌরনিগমের কোষাগারে অর্থও আসবে ৷