কলকাতা, 4 ডিসেম্বর: এখন থেকে আর গভীর রাতে মরণোত্তর দেহদানের (Pledging The Body) প্রক্রিয়া সারা যাবে না ৷ এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ দফতর (Department of Health and Family Welfare) ৷ এই বিষয়ে নতুন নির্ধারিত কার্যবিধি (Standard Operating Procedure) বা এসওপি (SOP) তৈরি করা হয়েছে ৷ তাতে বলা হয়েছে, মরণোত্তর দেহ দান করা আছে, এমন কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর পর তাঁর দেহ সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলি সকাল 9টা থেকে রাত 9টার মধ্যেই গ্রহণ করবে ৷ তার আগে বা পরে সেই দেহ গ্রহণ করা হবে না ৷ সম্প্রতি একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয় ৷
প্রসঙ্গত, দেহদান প্রক্রিয়া পালন করতে গিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই তৈরি হয়েছে বহু বিতর্ক ৷ দেহদানের সময় মৃতের আত্মীয় ও পরিজনদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে দাবি সূত্রের ৷ এই প্রেক্ষাপটে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য-সহ সংশ্লিষ্ট অন্য আধিকারিকরা একটি বৈঠক করেন ৷ সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন 'অ্যানাটমিক্যাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়া' (Anatomical Society of India) বা এএসআই (ASI)-এর রাজ্য শাখার সভাপতি, চিকিৎসক ও অধ্যাপক অভিজিৎ ভক্ত, মুখপাত্র তথা চিকিৎসক হিরণ্ময় রায় এবং সংশ্লিষ্ট সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের প্রতিনিধিরা ৷ সেই বৈঠকেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷
আরও পড়ুন: মরণোত্তর দেহদান ! চিকিৎসকের কিডনি পেলেন জামশেদপুরের এক মহিলা
বিস্তারিত আলোচনার পর স্থির করা হয়েছে, মেডিক্যাল কলেজগুলিতে রাতে কোনও দেহ এলে, দেহদানের যাবতীয় নথি অন্যান্য কাগজপত্র খতিয়ে দেখে সেই দেহ হাসপাতালের মর্গে রেখে দেওয়া হবে ৷ পরের দিন সকালে যাবতীয় নিয়ম মেনে দেহদানের প্রক্রিয়াটি সারতে হবে ৷ এক্ষেত্রে যদি মৃত ব্যক্তির মৃত্যুর শংসাপত্র (Death certificate) দেখে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনওরকম সন্দেহ হয়, তাহলে অ্যানাটমি বিভাগ পুলিশের 'নো অবজেকশন সার্টিফিকেট' (No Objection Certificate) বা এনওসি (NOC)-ও চাইতে পারে ৷ এছাড়াও, দেহদানের প্রক্রিয়া সারার সময় মৃতের অন্তত একজন নিকট আত্মীয়কে সেখানে উপস্থিত থাকতে হবে ৷ সেই আত্মীয়কে সচিত্র পরিচয়পত্র-সহ অ্যানাটমি বিভাগে আসতে হবে ৷
অন্যদিকে, কী ধরনের দেহ চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্যবহারের উপযোগী নয়, তার তালিকা-সহ একটি রূপরেখা স্বাস্থ্য দফতরে জমা দিতে বলা হয়েছে এএসআই কর্তৃপক্ষকে ৷ দেহদানের প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধানের জন্য প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে একজন 'নোডাল অফিসার' থাকবেন ৷ দেহদানে কোনও সমস্যা হলে ওই আধিকারিকরা নিজেদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে তার সমাধান করবেন ৷