কলকাতা, 22 এপ্রিল : কোরোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে রাজ্যজুড়ে লকডাউন। আপাতত কোনওরকম ভিড় বা জমায়েত করার অনুমতি নেই প্রশাসনের তরফে। কিন্তু সমস্ত নিয়ম-নির্দেশিকার মাঝেই জারি শিক্ষক নিয়োগের আন্দোলন । দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে সরব হলেন রাজ্যের আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীরা। শুধু স্থান বদল । এবার তাঁদের হাতিয়ার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ফেসবুক প্রোফাইল। বিগত কয়েকদিন ধরেই শিক্ষামন্ত্রীর প্রোফাইলে তাঁর করা পোস্টগুলিতে হাজার হাজার আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী একের পর এক মন্তব্য করছেন। দাবি একটাই আইনি জট কাটিয়ে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা হোক। শুধু আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীরা নয়। একই পদ্ধতিতে রাজ্যের অতিথি অধ্যাপকরাও SACT-এর অনুমোদনের দাবি জানাচ্ছেন।
2014 সালে TET পরীক্ষা হয়। তারপর পাঁচবছর কেটে গেছে । শেষমেশ 2019 সালে শুরু হয় আপার প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া। সেই প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দিলেও তা কাটিয়ে সম্পূর্ণ হয় ভেরিফিকেশন ও ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া। কিন্তু, তারপর আইনি জটিলতায় আবারও থমকে যায় আপার প্রাইমারির শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া। হাইকোর্টের নির্দেশে প্রকাশিত হয় প্রভিশনাল মেধাতালিকা। সেই মেধাতালিকাতেও বহু অসঙ্গতি দেখা যায়। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্ট। আপার প্রাইমারির চাকরিপ্রার্থীদের মতে, আর কয়েকটি শুনানি হলেই একটি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ পাওয়া যেত। কিন্তু, তার আগেই কোরোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যায় কলকাতা হাইকোর্টের কাজকর্ম । ফলে, আপার প্রাইমারি স্তরের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া আপাতত বিশ বাঁও জলে। চাকরিপ্রার্থীরা আশায় ছিলেন । হয়তো লকডাউন উঠলে, হাইকোর্ট খুললে জট কেটে যাবে । এরইমধ্যে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এখনই নিয়োগ নিয়ে কোনও ভাবনাচিন্তা করছে না দপ্তর।
এই পরিস্থিতিতে, লকডাউন খুললেই সরকার যাতে আইনি জট কাটিয়ে দ্রুত আপার প্রাইমারির নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে এই দাবিতে আবার সরব হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। প্রতিদিন শিক্ষামন্ত্রীর ফেসবুক প্রোফাইলে হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী মন্তব্য করছেন। শিক্ষামন্ত্রীর করা প্রতিটি পোস্টে গিয়েই মন্তব্য করছেন তাঁরা। কেউ লিখছেন আপনার দিকে চেয়ে আছি স্যার । শুনানির নাটক থেকে মুক্তি দিন। কেউ বা লিখছেন অভুক্ত অতিথি শিক্ষকরা । নুন ভাতের সুরক্ষা চাই । কেউ আবার লিখছেন বাঁচা কঠিন হয়ে যাচ্ছে । দ্রুত ভাতার ব্যবস্থা করুন । শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁদের দাবির উত্তর দিয়ে লিখেছেন, "নিয়োগ আটকে আছে আদালতের হাতেই। রাজ্য প্রস্তুত আছে নিয়োগের ব্যাপারে।" তবে, এখনও নিজেদের দাবি নিয়ে মন্তব্য করে চলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
শুধু আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীরা নয়, নিজেদের দাবি তুলে ধরার জন্য ফেসবুককে বেছে নিয়েছেন রাজ্যের অতিথি অধ্যাপকরাও। শিক্ষামন্ত্রীর ফেসবুক প্রোফাইলে করা নানা পোস্টে গিয়ে তাঁরাও মন্তব্য করছেন। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তাঁদের আবেদন, দ্রুত SACT-এর অনুমোদন দিয়ে তাঁদের ভাতা চালুর ব্যবস্থা করুক সরকার। উল্লেখ্য, স্টেট এডেড কলেজ টিচার (SACT) পদের জন্য চলছিল অতিথি অধ্যাপকদের তথ্য যাচাই প্রক্রিয়া। তারমধ্যেই লকডাউন শুরু হওয়ায় থমকে গেছে সেই প্রক্রিয়া।