কলকাতা, 10 মে : পয়লা মে মহারাষ্ট্রে মাওবাদীদের গেরিলা হামলায় শহিদ হয়েছিলেন 15 জন জওয়ান । এর থেকে শিক্ষা নিয়ে আর ঝুঁকি নিতে রাজি নয় নির্বাচন কমিশন । আর তাই জঙ্গলমহলে ডিউটি করতে যাওয়া কেন্দ্রীয় বাহিনীদের দেওয়া হল বিশেষ নির্দেশ । ইতিমধ্যেই কম্পানি কমান্ডারদের কাছে সেই নির্দেশিকা পৌঁছেছে । প্রতিটি জওয়ানকে সেই নির্দেশিকা বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে ।
সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা কালভার্ট ও যেসব জায়গায় IED প্ল্যান্ট করা যেতে পারে, সেই সব জায়গায় ভালো করে তল্লাশি চালানোর পর, সেই পথে এগোবে । ভালো করে পরীক্ষা করার আগে কোনওভাবেই যেন ঝুঁকি না নেওয়া হয় । নির্বাচনের ডিউটি করার সময় অবশ্যই বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরতে হবে । যে কোনও গেরিলা আক্রমণ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখতে হবে । অতীতে দেখা গেছে, ভোটকর্মীরা বুথে যাওয়ার সময় কিংবা ভোট শেষে ফেরার সময় আক্রমণের শিকার হয়েছেন । এই সময় সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে । যে কোনও ক্ষেত্রে অ্যাকশন নেওয়া হলে দ্রুত রিটার্নিং অফিসার, কন্ট্রোল রুম ও অভিজ্ঞ পুলিশ অফিসারদের জানাতে হবে । যে কোনও ধরনের অভিযোগ উঠলে কুইক রেসপন্স টিম ও কুইক অ্যাকশান টিমের সদস্যদের দ্রুত ঘটনাস্থানে পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
সম্প্রতি শ্রমিক দিবসে বিপ্লব করেছিল মাওবাদীরা । তাদের গেরিলা আক্রমণে মহারাষ্ট্রের গড়চিরৌলিতে এক চালক সহ 15 জন জওয়ান শহিদ হন । IED বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা চালানো হয় জওয়ানদের গাড়িতে । ঘটনার পরের দিনই ছত্তিশগড়ে সুকমায় মাওবাদীরা গ্রামে ঢুকে 2 জনকে পুলিশের গুপ্তচর সন্দেহে খুন করে । সাম্প্রতিক এই ঘটনা ঘটায় ঝুঁকি নিতে রাজি নয় নির্বাচন কমিশন ।
প্রতিবারের মতো এবারও নির্বাচন বয়কটের ডাক দিয়েছে মাওবাদীরা । অতীত বলছে ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্রের মতো বেশ কিছু জায়গায় নির্বাচনের সময় নাশকতা চালিয়েছে তারা । তাই এবার এই রাজ্যের জঙ্গলমহলে বাড়তি সতর্কতা । কমিশন সূত্রে খবর, অন্য সাতটি কেন্দ্রে 100 শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকলেও, ঝাড়গ্রামের সব বুথেই থাকবে । বিশেষ সূত্রে খবর, শুধু ঝাড়গ্রাম লোকসভায় মোতায়েন করা হচ্ছে 114 কম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী । অতীতে বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার জঙ্গলমহল এলাকায় মাও সক্রিয়তা থাকলেও, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ওই দুই জেলাকে মাওমুক্ত ঘোষণা করেছে । তবে ঝাড়গ্রাম এখনও মাওবাদীদের রেড করিডর । সেই সূত্রেই বাহিনীর জওয়ানদের দেওয়া হয়েছে বিশেষ নির্দেশিকা ।