কলকাতা, 20 নভেম্বর: আইডেন্টিটি পলিটিক্স বা জাতপাতের রাজনীতি বামেদের নীতি বিরোধী । কিন্তু, আগামী লোকসভার আগে সেই 'আইডেন্টিটি পলিটিক্স'-এর কৌশল অবলম্বন শুরু করছে বঙ্গ সিপিএম । আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সূত্রের দাবি, কুড়মি, ওবিসি-সহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে কাছে টানতে উদ্যাগী বঙ্গ সিপিএম । এই সব জনগোষ্ঠীর মধ্যে দলীয় নেতাদের সেতুবন্ধনের কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ।
সূত্রের দাবি, মহম্মদ সেলিম স্পষ্ট জানিয়েছেন, আর্থিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে মুসলিম, মতুয়া-সহ এসসি/এসটি/ওবিসি সম্প্রদায়কে তৃণমূল-বিজেপি ধর্মের রাজনীতি করে ভাগ করছে । তার বিরুদ্ধে ওই সমস্ত জাতিগোষ্ঠীকে কাছে পেতে কৌশল গ্রহণ করতে হবে । তাঁদের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করতে হবে । তাঁরা যে বাস্তব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন, তা মোকাবিলায় সাহায্য করতে হবে । যাতে আসন্ন 2024 লোকসভা নির্বাচনে সেই কাজের 'ফসল' তুলতে পারা যায় ।"
তবে, শুধু যে তৃণমূল-বিজেপির ধর্মীয় রাজনীতিকে কাউন্টার করতেই এমন উদ্যোগ সিপিএমে ? তা কিন্তু নয় । জাতপাতকে গুরুত্ব না-দিয়ে বাম রাজনৈতিক দল সিপিএম শ্রমিক শ্রেণিকে নিয়ে রাজনীতি করে । তাদের প্রকৃত বন্ধু বলেই মনে করে । দীর্ঘ 34 বছর পশ্চিমবঙ্গে তফশিলি জাতি, তফশিলি উপজাতি এবং অনগ্রসর শ্রেণি-সহ বিভিন্ন জাত ধর্মের কৃষক, শ্রমিক এবং অন্যান্য শ্রমিক শ্রেণিই বামেদের ক্ষমতায় রাখে । কিন্তু, 2011 সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সেই অনগ্রসর, পিছিয়ে পড়া কৃষক, শ্রমিক এবং অন্যান্য শ্রমিক শ্রেণিই সিপিমের থেকে মুখ ঘুরিয়েছে।
মহম্মদ সেলিমের এই নতুন নির্দেশে ওই নির্দিষ্ট গোষ্ঠীগুলিকে পুনরায় কাছে টানার চেষ্টা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ । ক্ষমতায় আসার অনেক আগেই তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মতুয়া, জনজাতি, উপজাতি সম্প্রদায়গুলির কাছে পৌঁছে যান । যে কারণে ঠাকুরনগরের ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের নির্বাচনী প্রার্থী করেন । মন্ত্রিসভার সদস্যও করেন ।
দলীয় সদস্য হিসেবে লোকসভাতেও পাঠিয়েছেন । কারণ, ভেদাভেদের রাজনীতির উর্ধে থাকা সিপিএমে দলীয় পদে এসসি/এসটি/ওবিসি সদস্য সংখ্যা খুবই নগণ্য । বরং, তার থেকে বেশি বিজেপিতে এসসি সম্প্রদায় ভুক্ত বিধায়ক-সাংসদ আছেন । রাজনৈতিক মহলের এখানেই যুক্তি যে, সিপিএম যতই তৃণমূল-বিজেপিকে দোষারোপ করুক না কেন, আদপে নিজেদের খামতি পূরণের চেষ্টা করছেন সেলিমরা ।
আরও পড়ুন: