মাথাব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা ৷ যা যেকোনও বয়সের মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে । এটি কখনও কখনও হালকা এবং অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হতে পারে ৷ তবে কিছু মানুষ ঘন ঘন এবং তীব্রভাবে এই সমস্যাটি অনুভব করে থাকেন ৷
যদি আপনিও প্রায়শই মাথাব্যথার সমস্যায় ভুগেন, তাহলে এটি কিছু স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে (Frequent Headaches Causes)। জেনে নিন, ঘন ঘন মাথাব্যথার পিছনে কী কী কারণ থাকতে পারে ?
মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ: আধুনিক জীবনযাত্রার সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলির মধ্যে একটি হল মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ । যখন আমরা চাপে থাকি, তখন আমাদের শরীরের পেশীগুলি টানটান হয়ে যায় ৷ বিশেষ করে ঘাড় এবং মাথার পেশীগুলিতে । এরফলে টেনশন মাথাব্যথা হতে পারে ৷ যা প্রায়শই দীর্ঘ সময় ধরে থাকে । টেনশনের মাথাব্যথা সাধারণত মাথার উভয় পাশেই মৃদু চাপ বা ব্যথার মতো অনুভূত হয় ।
ঘুমের অভাব: ভালো ঘুম শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । ঘুমের অভাব বা অনিয়মিত ঘুমের কারণে মাথাব্যথা হতে পারে । যখন আমাদের পর্যাপ্ত ঘুম হয়না তখন শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়, যা মাইগ্রেন বা টেনশন মাথাব্যথার ঝুঁকি বাড়ায় । তাই প্রতিদিন 7-8 ঘণ্টা ভালো ঘুম প্রয়োজন ।
জলশূন্যতা (জলের অভাব): শরীরে জলের অভাবও মাথাব্যথার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ । জলশূন্যতার কারণে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ কমে যায় ৷ যার ফলে মাথাব্যথা হতে পারে । সঠিক পরিমাণে জল পান না করলে, এই সমস্যা বারবার হতে পারে । সারাদিনে কমপক্ষে 8-10 গ্লাস জল পান করা উচিত ।
চোখের সমস্যা: চোখের সমস্যা যেমন- কম দৃষ্টিশক্তি, চোখের চাপ, অথবা কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে দীর্ঘক্ষণ কাজ করার কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে । চোখের পেশীতে অতিরিক্ত চাপ পড়লে মাথাব্যথা হতে পারে । অতএব নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করা এবং স্ক্রিন টাইম কমানো গুরুত্বপূর্ণ ।
মাইগ্রেন: মাইগ্রেন হল একটি তীব্র ধরণের মাথাব্যথা ৷ যার সঙ্গে প্রায়শই তীব্র ব্যথা, বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা এবং আলো বা শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা থাকে । মাইগ্রেনের কারণে মাথার একপাশে তীব্র ব্যথা হয় এবং এটি কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে । মাইগ্রেনের কারণগুলির মধ্যে রয়েছে মানসিক চাপ, হরমোনের পরিবর্তন, নির্দিষ্ট কিছু খাবার এবং আবহাওয়ার পরিবর্তন ।
উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপও মাথাব্যথার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে । রক্তচাপ বেড়ে গেলে মাথায় রক্তের চাপ বেড়ে যায় ৷ যা মাথাব্যথার কারণ হতে পারে । এই ব্যথা সাধারণত মাথার পিছনে অনুভূত হয় এবং সকালে আরও তীব্র হতে পারে । উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস প্রয়োজন ।
মস্তিষ্কের টিউমার: ঘন ঘন মাথাব্যথাও ব্রেন টিউমারের লক্ষণ হতে পারে । মাথাব্যথা মস্তিষ্কের টিউমারের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে একটি । অতএব যদি আপনার প্রায়শই মাথাব্যথার সমস্যা থাকে, তাহলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা এবং পরীক্ষা করানো গুরুত্বপূর্ণ ।
এছাড়াও হাভার্ড হালথ পাবলিশিং- এর গবেষণা অনুযায়ী, অ্যালকোহল মাইগ্রেনের একটি সাধারণ কারণ হতে পারে । কিছু মানুষের ক্ষেত্রে, মাথাব্যথার জন্য কয়েক আউন্স রেড ওয়াইনই যথেষ্ট ৷ যদিও যেকোনও ধরণের অ্যালকোহলই এর কারণ হতে পারে । অ্যালকোহল নিজেই দায়ী নাকি পানীয়ের অন্য কোনও উপাদান সমস্যাটির কারণ তা স্পষ্ট নয় ।
পরিবেশ: উজ্জ্বল আলো, ধোঁয়া, আর্দ্রতা, তীব্র গন্ধ অথবা ঠান্ডা আবহাওয়ার মতো পরিবেশগত কারণগুলি মাইগ্রেনের মাথাব্যথার সঙ্গে যুক্ত । ক্লাস্টার মাথাব্যথায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়শই লক্ষ্য করেন যে তাদের মাথাব্যথা নির্দিষ্ট ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে ঘটে ।
https://www.health.harvard.edu/diseases-and-conditions/top-7-reasons-you-have-a-headache
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷)