কলকাতা, 27 অক্টোবর: 20 ঘণ্টা জেরা ও তল্লাশি চালিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী ও বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গভীর রাতে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এই ঘটনায় তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীনই মাঠে নেমেছিল বিজেপি। একের পর এক টুইট ও সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলকেও আক্রমণ করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অন্যদিকে, সাংবাদিক সম্মেলন করেই সরাসরি প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর রাজ্যের আরও এক মন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার পর এবার রাজ্যের বিরোধী বাম ও কংগ্রেস সুর চড়াল এই ঘটনায়।
কালীঘাট ও ক্যামাক স্ট্রিটে ইডি তল্লাশির দাবি করল বিরোধীরা ৷ অর্থাৎ কালীঘাট মানে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন এবং ক্যামাক স্ট্রিট অর্থাৎ তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতর। আরও স্পষ্টভাবে বললে সিপিএম ও কংগ্রেস নেতাদের দাবি, রেশন কেলেঙ্কারিতে যেমন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী যুক্ত থাকার কারণে তাঁকে ইডি গ্রেফতার করেছে, তেমনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জেরা করা দরকার।
এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ বলেন, "গতকাল যখন কান ধরে টানাটানি চলছিল তখন মাথারা নড়েচড়ে বসায় বোঝা গিয়েছিল কানের শ্রীঘরে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা। মুখ্যমন্ত্রীর লজ্জা করছে না ক্যাবিনেটের মন্ত্রীরা জেলে। দায়ভার তাঁকে নিতে হবে। চুরি করে 12 বছর সরকার চালিয়েছে। এমন একটা দফতর নেই যেখানে চুরি হয়নি। গরীবের মুখের ভাত কেড়েছে এরা। মন্ত্রী আমলা সকলে যুক্ত এর মধ্যে। ইডি শুধু জ্যোতিপ্রিয়র বাড়ি পর্যন্ত গেলে হবে না। এই চুরির চালের ভাত কালীঘাট আর ক্যামাক স্ট্রিট খেয়েছে কি না, সেই তদন্তও করতে হবে।"
আরও পড়ুন: জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে পেশ, হেফাজতে চায় ইডি
সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী জানতেন জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতার হবেন। যদি মনে করেন অন্যায় হয়েছে তাহলে সিজিও ঘেরাও করলেন না কেন ? রাজীব কুমারের সময় রাস্তায় বসেছিলেন, এখন রাস্তায় বসলেন না কেন ? জ্যোতিপ্রিয়র থেকে রাজীব কুমার বেশি গুরুত্বপূর্ণ উনি বুঝিয়ে দিলেন। যত অপরাধ করবেন অপরাধীদের মত থাকতে হবে। কার ষড়যন্ত্রের শিকার ? ওনাকে যিনি মন্ত্রী করেছিলেন তাঁর ? মুখ্যমন্ত্রী সরকারিভাবে একাধিকবার বলেছিলেন 10 কোটি মানুষকে আমি রেশন পৌঁছে দিয়েছি। বাংলার জনসংখ্যা 9 কোটি 50 লক্ষ। যার 20 শতাংশ মানুষ রেশন নেন না। খুব বেশি হলে সাড়ে সাত কোটি লোক নেন। তাহলে বাকি কি ভূতে নিচ্ছে ? ফলে এই বাকিটা লুট আর সেটা সংগঠিত। মন্ত্রী-আমলা সকলে জানেন। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক যেমন দুর্নীতিবাজ তার উপরে যারা কালীঘাট, নবান্ন তাদের কী হবে ? তারা নিজেরা ছাড় পেতে একে একে দলের নেতাদের বলি দিচ্ছে। এইভাবে কতদিন চলবে!"