কলকাতা, 18 জানুয়ারি: 'সংহতি মিছিলের নাম করে অশান্তির মিছিল'কে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্ট আগামী 22 জানুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'সংহতি মিছিল'-এর অনুমতি দেওয়ার পর এই ভাষাতেই আদালতের সেই নির্দেশকে কটাক্ষ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
আগামী 22 জানুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে 'সংহতি মিছিল'-এর ডাক দিয়েছিলেন তা বহাল রাখল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই জনস্বার্থ মামলায় ধাক্কা খেলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর তাই পরেই পানিহাটিতে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে রাম জন্মভূমির সম্পর্কিত কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। গত বছর রাম নবমী এবং নূপুর শর্মার মন্তব্যকে কেন্দ্র করে গোটা রাজ্য জুড়ে আগুন লাগানো হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা সবার আছে। তাই সবাই শান্তি চায়। নিজ-নিজ ধর্ম পালন করতে চায়।"
শুভেন্দুর কথায়, "আমি উচ্চ আদালতে গিয়েছিলাম। উচ্চ আদালত হয়তো সংহতি মিছিলের নাম করে অশান্তির মিছিলের অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু আমি খুশি যে, তারা কয়েকটি বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ৷ এই রাজ্যের শাসকদল রাম জন্মভূমির আনন্দকে নষ্ট করার পরিকল্পনা এবং চক্রান্ত করছে ৷ সেটা রুখতে আদালত যে সমস্ত বিধিনিষেধ আরোপ করেছে তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। ওইদিন যদি কোথাও সামান্য ঘটনাও ঘটে তাহলে শাসকদলের পাশাপাশি পুলিশও দায়ী হবে।"
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি আরও বলেন, "তিনি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) এই মিছিল অন্য কোনওদিন করতে পারতেন ৷ কিন্তু ওইদিনই করছেন যাতে ঝামেলা লাগিয়ে গেরুয়া বস্ত্র পরিহিত ছেলেদের জেলে পুড়তে পারেন।" আগামী 22 জানুয়ারি যখন উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা শহরের রাম লালা মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠার পুজো চলবে সেদিনই বিকেলে রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি মিছিলের ডাক দিয়েছেন।
প্রথমে কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিয়ে তারপর সমস্ত ধর্মের মানুষদের নিয়ে তিনি পার্ক সার্কাস পর্যন্ত পদযাত্রা করবেন তারপর সেখানে পৌঁছে সভা করবেন। শুধু তাই নয় তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে ওইদিন রাজ্যের ব্লকে ব্লকে হবে এই ধরনের পদযাত্রা। আর এই মিছিলের বিরোধিতা করেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি জানিয়েছিলেন যে, এই মিছিল রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট করবে। তাই তিনি আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করার আর্জি রাখেন আদালতে। তবে আজকের রায় তৃণমূলের পক্ষেই যায়।
এই বিষয় বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "সম্প্রীতির মিছিলের কী দরকার ছিল ? এদের নিজেদের দলের মধ্যেই সম্প্রতি নেই। যতবার দাঙ্গা হাঙ্গামা হয়েছে ততবার সম্প্রতি মিছিল হয়েছে। লাভ কী হয়েছে তাতে ? সিএএ পাশ হওয়ার পর সমস্ত রাজ্য জুড়ে আগুন লাগানো হল। বাস ট্রেন পুড়িয়ে দেওয়া হল। সেসব কেউ আটকাল না। কোনও মামলাও হল না। যারা পশ্চিমবঙ্গে আগুন জ্বালিয়েছে, গন্ডগোল করছে এবং যারা সম্প্রীতির বিরুদ্ধে ছিলেন তাদেরকে নিয়েই সম্প্রীতি মিছিল করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সারা দেশ জুড়ে উৎসব আনন্দ হচ্ছে ৷ মুখ্যমন্ত্রীকেও আমন্ত্রণ করা হয়েছে। কিন্তু তিনি বিরোধিতা করছেন ৷ সম্প্রীতির নাম করে সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷"
আরও পড়ুন
কালীঘাটের আরতি দেখে সংহতি মিছিল শুরু মমতার, যাবেন মসজিদ-গির্জা-গুরুদ্বারেও