ETV Bharat / state

Guv-Speaker Row: স্পিকারের বদলে দায়িত্ব ডেপুটিকে, ধূপগুড়ির বিধায়কের শপথ নিয়ে নয়া সংঘাত রাজ্যপালের সঙ্গে !

Dhupguri MLA swearing in: ধূপগুড়ির বিধায়কের শপথ নিয়ে নতুন করে রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ৷ জানা গিয়েছে, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় নন, নির্মলচন্দ্র রায়ের শপথ বাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া হয়েছে ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 26, 2023, 7:46 PM IST

Guv-Speaker Row
বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস

কলকাতা, 26 সেপ্টেম্বর: সকালেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় । বেলা গড়াতেই তাঁকে এড়িয়ে বিধায়কের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের দায়িত্ব দেওয়া হল ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে । অধ্যক্ষকে এড়িয়ে উপাধ্যক্ষ তথা ডেপুটি স্পিকারকে বিধায়ককে শপথ বাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব দেওয়ায়, এই নিয়ে আবার নতুন করে সংঘাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে । মনে করা হচ্ছে, এর ফলে সরকার ও রাজভবনের পাশাপাশি এ বার বিধানসভা ও রাজভবনের সংঘাতও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হল ।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই ধূপগুড়ির বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়ের শপথ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় । মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় বিদ্যাসাগরের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি । সেখানেই অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সরাসরি রাজভবনকে নিশানা করেছেন ।

স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়ের শপথ নিয়ে যে ঘটনাক্রম দেখা যাচ্ছে, তা প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের জমানাকেই মনে করাচ্ছে । তিনি এও বলেন, বিধায়কের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়ে এর আগে রাজ্যপালের এমন আচরণ কখনওই দেখা যায়নি । একইসঙ্গে, বিধায়কের শপথ গ্রহণ নিয়ে টানাপোড়েন প্রসঙ্গে পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, এই নিয়ে রাজ্যপাল যা করছেন তা একেবারেই প্রত্যাশিত নয় ।

এ দিন সকালেই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমি তো রাজভবনে যাওয়ার পক্ষপাতী নই । নির্মলচন্দ্র রায় সদস্য হবেন বিধানসভার, সে ক্ষেত্রে তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান বিধানসভাতেই হওয়া বাঞ্ছনীয় । রাজভবনে করাটা বাঞ্ছনীয় নয় । রাজ্যপাল চাইলে নিশ্চয়ই তিনি রাজভবনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান করতে পারেন । কিন্তু তাঁর অফিসিয়াল যে ডকুমেন্টস সবই বিধানসভাতে রয়েছে । বিধানসভার সেক্রেটারিয়েট থেকেই সমস্ত কাজকর্ম করা হয় ৷ এটাকে তুলে নিয়ে রাজভবনে যাওয়া সম্ভব নয় । রাজ্যপাল নিশ্চয়ই এই বিষয়টিকে অনুধাবন করবেন । মিথ্যে রাজ্যপাল যদি নিজে বিধায়ককে শপথ বাক্য পাঠ করাতে চান, তাহলে বিধানসভায় এসে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন । সংবিধানের ক্ষমতাবলে রাজ্যপাল নিজেও বিধায়ককে শপথ বাক্য পাঠ করাতে পারেন । অন্য কারওকেও তিনি নিযুক্ত করতে পারেন ।"

আরও পড়ুন: মহিলা সংরক্ষণ বিলকে গুরুত্ব দিয়েই বাংলার বিশিষ্ট নারীদের 'দুর্গা ভারত সম্মান' দেবেন রাজ্যপাল

এরপরই কিছুটা ক্ষোভের সুর শোনা যায় স্পিকারের গলায় । তিনি বলেন, প্রাক্তন রাজ্যপাল ধনকড়ের সময় থেকেই বিধায়কদের শপথ নিয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে । এটা কখনওই কাম্য নয় । এরপরই একটা সূত্র থেকে জানা যায়, রাজ্যপাল ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথ বাক্য পাঠ করানোর জন্য অনুমতি দিয়েছেন । বিধানসভায় এই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে খবর । যদিও এই মুহূর্তে ডেপুটি স্পিকার রয়েছেন বীরভূমে ।

ইটিভি ভারত ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, "আমি এখনও রাজভবনের এই সংক্রান্ত কোনও চিঠি পাইনি । ফলে এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য আমি করতে পারব না ।" তবে ঘনিষ্ঠ মহলে যেটা জানা যাচ্ছে, ক্ষুব্ধ উপাধ্যক্ষ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও । তিনি কোনওভাবেই অধ্যক্ষকে এড়িয়ে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের অংশ হতে রাজি নন ।

এ দিকে, এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও । তিনি বলেন, "আমি শুনেছি রাজ্যপাল ডেপুটি স্পিকারকে বিধায়কের শপথ গ্রহণের দায়িত্ব দিয়েছেন । তিনি যদি এই দায়িত্ব নিতে না-চান রাজ্যপাল চাইলে অন্য কোনও বিধায়ককে এই দায়িত্ব দিতে পারেন । অন্য কেউ দায়িত্ব না নিলে রাজ্যপাল যদি আমাকে দায়িত্ব দেন আমি বিধায়ককে শপথ বাক্য পাঠ করিয়ে দেব । এতে কোনও অসুবিধা নেই ।"

প্রসঙ্গত, যেভাবে স্পিকারকে এড়িয়ে ডেপুটি স্পিকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাতে এক রকম অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল । এই অবস্থায় শাসক শিবির কী পদক্ষেপ করে সেটাই এখন দেখার । অতীতে প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সময় একইভাবে স্পিকারকে এড়িয়ে ডেপুটি স্পিকারকে শপথ বাক্য পাঠ করানোর অনুমতি দেওয়া হয় । সে বার অবশ্য তৎকালীন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে বিষয়টি শেষ পর্যন্ত মিটে যায় । উপনির্বাচনে জয়ী শান্তিপুর, গোসাবা, খড়দা ও দিনহাটার বিধায়কদের শপথ বাক্য পাঠ করান স্পিকারই । একই পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, বালিগঞ্জের বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়র সময়ও । এ বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল ধূপগুড়ির বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়ের বেলায় । এই অবস্থায় শেষ পর্যন্ত জল কতদূর গড়ায় সেটাই এখন দেখার । শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীকে এই নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলতে হয় কি না, সেদিকেও নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের ।

কলকাতা, 26 সেপ্টেম্বর: সকালেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় । বেলা গড়াতেই তাঁকে এড়িয়ে বিধায়কের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের দায়িত্ব দেওয়া হল ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে । অধ্যক্ষকে এড়িয়ে উপাধ্যক্ষ তথা ডেপুটি স্পিকারকে বিধায়ককে শপথ বাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব দেওয়ায়, এই নিয়ে আবার নতুন করে সংঘাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে । মনে করা হচ্ছে, এর ফলে সরকার ও রাজভবনের পাশাপাশি এ বার বিধানসভা ও রাজভবনের সংঘাতও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হল ।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই ধূপগুড়ির বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়ের শপথ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় । মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় বিদ্যাসাগরের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি । সেখানেই অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সরাসরি রাজভবনকে নিশানা করেছেন ।

স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়ের শপথ নিয়ে যে ঘটনাক্রম দেখা যাচ্ছে, তা প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের জমানাকেই মনে করাচ্ছে । তিনি এও বলেন, বিধায়কের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়ে এর আগে রাজ্যপালের এমন আচরণ কখনওই দেখা যায়নি । একইসঙ্গে, বিধায়কের শপথ গ্রহণ নিয়ে টানাপোড়েন প্রসঙ্গে পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, এই নিয়ে রাজ্যপাল যা করছেন তা একেবারেই প্রত্যাশিত নয় ।

এ দিন সকালেই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমি তো রাজভবনে যাওয়ার পক্ষপাতী নই । নির্মলচন্দ্র রায় সদস্য হবেন বিধানসভার, সে ক্ষেত্রে তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান বিধানসভাতেই হওয়া বাঞ্ছনীয় । রাজভবনে করাটা বাঞ্ছনীয় নয় । রাজ্যপাল চাইলে নিশ্চয়ই তিনি রাজভবনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান করতে পারেন । কিন্তু তাঁর অফিসিয়াল যে ডকুমেন্টস সবই বিধানসভাতে রয়েছে । বিধানসভার সেক্রেটারিয়েট থেকেই সমস্ত কাজকর্ম করা হয় ৷ এটাকে তুলে নিয়ে রাজভবনে যাওয়া সম্ভব নয় । রাজ্যপাল নিশ্চয়ই এই বিষয়টিকে অনুধাবন করবেন । মিথ্যে রাজ্যপাল যদি নিজে বিধায়ককে শপথ বাক্য পাঠ করাতে চান, তাহলে বিধানসভায় এসে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন । সংবিধানের ক্ষমতাবলে রাজ্যপাল নিজেও বিধায়ককে শপথ বাক্য পাঠ করাতে পারেন । অন্য কারওকেও তিনি নিযুক্ত করতে পারেন ।"

আরও পড়ুন: মহিলা সংরক্ষণ বিলকে গুরুত্ব দিয়েই বাংলার বিশিষ্ট নারীদের 'দুর্গা ভারত সম্মান' দেবেন রাজ্যপাল

এরপরই কিছুটা ক্ষোভের সুর শোনা যায় স্পিকারের গলায় । তিনি বলেন, প্রাক্তন রাজ্যপাল ধনকড়ের সময় থেকেই বিধায়কদের শপথ নিয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে । এটা কখনওই কাম্য নয় । এরপরই একটা সূত্র থেকে জানা যায়, রাজ্যপাল ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথ বাক্য পাঠ করানোর জন্য অনুমতি দিয়েছেন । বিধানসভায় এই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে খবর । যদিও এই মুহূর্তে ডেপুটি স্পিকার রয়েছেন বীরভূমে ।

ইটিভি ভারত ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, "আমি এখনও রাজভবনের এই সংক্রান্ত কোনও চিঠি পাইনি । ফলে এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য আমি করতে পারব না ।" তবে ঘনিষ্ঠ মহলে যেটা জানা যাচ্ছে, ক্ষুব্ধ উপাধ্যক্ষ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও । তিনি কোনওভাবেই অধ্যক্ষকে এড়িয়ে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের অংশ হতে রাজি নন ।

এ দিকে, এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও । তিনি বলেন, "আমি শুনেছি রাজ্যপাল ডেপুটি স্পিকারকে বিধায়কের শপথ গ্রহণের দায়িত্ব দিয়েছেন । তিনি যদি এই দায়িত্ব নিতে না-চান রাজ্যপাল চাইলে অন্য কোনও বিধায়ককে এই দায়িত্ব দিতে পারেন । অন্য কেউ দায়িত্ব না নিলে রাজ্যপাল যদি আমাকে দায়িত্ব দেন আমি বিধায়ককে শপথ বাক্য পাঠ করিয়ে দেব । এতে কোনও অসুবিধা নেই ।"

প্রসঙ্গত, যেভাবে স্পিকারকে এড়িয়ে ডেপুটি স্পিকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাতে এক রকম অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল । এই অবস্থায় শাসক শিবির কী পদক্ষেপ করে সেটাই এখন দেখার । অতীতে প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সময় একইভাবে স্পিকারকে এড়িয়ে ডেপুটি স্পিকারকে শপথ বাক্য পাঠ করানোর অনুমতি দেওয়া হয় । সে বার অবশ্য তৎকালীন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে বিষয়টি শেষ পর্যন্ত মিটে যায় । উপনির্বাচনে জয়ী শান্তিপুর, গোসাবা, খড়দা ও দিনহাটার বিধায়কদের শপথ বাক্য পাঠ করান স্পিকারই । একই পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যায়, বালিগঞ্জের বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়র সময়ও । এ বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল ধূপগুড়ির বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়ের বেলায় । এই অবস্থায় শেষ পর্যন্ত জল কতদূর গড়ায় সেটাই এখন দেখার । শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীকে এই নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলতে হয় কি না, সেদিকেও নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.